Entertainment News

‘আমি পরিচালক হলে কিছু জায়গা বদলাতে বলতাম’, মায়ের হারিয়ে যাওয়া গান শোনালেন অনুপম

শৈশব থেকে মায়ের কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে বড় হয়েছেন অনুপম। মা মধুঋতা রায় গান শিখতেন সুচিত্রা মিত্রের কাছে, জানালেন গায়ক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২২
Anupam Roy shares songs sung by his mother and talks about the musical environment in his family

মায়ের গান শুনেই বড় হয়েছেন অনুপম। ছবি: ফেসবুক।

বাংলায় তিনি এখন অন্যতম গায়ক-গীতিকার। তাঁর গানে প্রেমের ভাষা খুঁজে পায় এই প্রজন্ম। সুরের এত কাছাকাছি পৌঁছনোর পিছনে ভূমিকা রয়েছে পরিবারের। ছোটবেলা থেকেই সুরেলা আবহে বড় হয়েছেন অনুপম রায়। বৃহস্পতিবার তাঁর সমাজমাধ্যমের পোস্টই স্পষ্ট করে দিল শিল্পীর গানের উৎস।

Advertisement

শৈশব থেকে মায়ের কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে বড় হয়েছেন অনুপম। মা মধুঋতা রায় গান শিখতেন সুচিত্রা মিত্রের কাছে, জানালেন গায়ক। ২৩-২৪ বছর আগে রেকর্ডও করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১০টি গান। সেই গানগুলিই আবার ফিরিয়ে আনলেন অনুপম। মায়ের কণ্ঠে ১০টি রবীন্দ্রসঙ্গীত নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরলেন তিনি। লক্ষ্য একটাই, ফের মাকে উৎসাহ দেওয়া এবং মায়ের গানগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

সেই সময়ে প্রযুক্তি তেমন উন্নত ছিল না। তাই এক দিনেই ১০টি গান গেয়েছিলেন অনুপমের মা মধুঋতা। ‘মাল্টিপল কাটস’, অথবা ‘অটো টিউন’-এর ব্যাপারও ছিল না। এক বারেই গানগুলি গেয়েছিলেন তিনি। যেমন মঞ্চের অনুষ্ঠানে শিল্পীকে এক বারে গান গাইতে হয়। অনুপম বলেন, “রেকর্ডিং পুরোটাই নিজের খরচায় করেছিলেন। তাই এক দিনেই শেষ করার তাড়া ছিল। পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনও সঙ্গীত পরিচালকও ছিলেন না। আমি পরিচালক হিসাবে থাকলে মাকে বলতাম, ‘কিছু জায়গায় আর এক বার গেয়ে দাও।’ কিন্তু সেটা বলার কেউ ছিল না সে দিন। যে দিন গান গেয়েছিলেন সেই দিনই ১০টা গানের মিক্সিং-মাস্টারিং করা হয়েছিল।”

মায়ের গান শুনে সামান্য কিছু ত্রুটি বার করেছেন অনুপম। যদিও শিল্পীর কথায়, “মা নিজেও জানে, সেই ত্রুটিগুলির কথা। কিন্তু তখন তো আর ঠিক করার উপায় ছিল না। এখন আর ঠিক করার মানে হয় না।”

বাড়ির সাঙ্গীতিক পরিবেশ নিয়ে অনুপম বলেন, “ছোট থেকেই দেখতাম, মা গান গাইছেন। মায়ের গান প্রশংসিত হচ্ছে। মূলত রবীন্দ্রসঙ্গীতই গাইতেন। পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গানও গাইতেন। তবে রেকর্ড করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান।” এখনও গান নিয়ে থাকেন মা। বয়সের কারণে কণ্ঠে কিছু প্রভাব পড়েছে। অনুপম বলেছেন, “গানের চর্চার মধ্যে এখনও রয়েছেন মা। কিন্তু বয়সের জন্য আগের মতো হয়তো পারেন না। অনুপ্রেরণাও সেই ভাবে পান না। ভাবেন, কী হবে এখন আর গান গেয়ে! আসলে সংসার করে করেই তো বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলাদের জীবন কেটে যায়।”

তবে এখনও মাকে উৎসাহ দেন অনুপম। যদিও মায়ের সঙ্গে কাজ করার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। শিল্পীর মা-ও নিজে গান গাওয়ার কথা কিছু বলেন না। অনুপমের কথায়, “মা কিছু বলেন না। খুবই লাজুক। তবে রোজ গান নিয়ে বসেন। কিন্তু অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে আসলে। মায়ের গাওয়া এই গানগুলো এত দিন ক্যাসেট আকারে ছিল। বাড়িতেই খুঁজতে খুঁজতে ক্যাসেটটা পাই। কিন্তু এখন তো আর ক্যাসেট ও সিডির চল নেই। তাই ভাবলাম, এই গানগুলো তো হারিয়ে যাবে। তাই ডিজিটাল মাধ্যমে গানগুলি ভাগ করে নিলাম এবং বন্ধুবান্ধবদের পাঠালাম। নিজের মিউজ়িক লেবেলেই গানগুলো প্রকাশ করলাম।”

গানগুলি শুনে বন্ধুবান্ধবেরা ভাল প্রতিক্রিয়াও দিয়েছেন অনুপমকে। শিল্পীর কথায়, “আসলে এই গানগুলি যখন রেকর্ড করা হয়েছিল, তখন আমার পরিচিতি ছিল না। পরিবারে কেউই তেমন পরিচিত ছিলেন না জনসমাজে। তাই গানগুলি কোথাও পৌঁছয়নি। একটু প্রচারের তো প্রয়োজন হয়। আমার সামান্য পরিচিতি হয়েছে বলে আমি পাঠাতে পারছি গানগুলো।”

Advertisement
আরও পড়ুন