রত্নার আশা, বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এখনও দেশে আছেন। ফাইল চিত্র
পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষ উগরে দিতে দিতে এক দিন ক্লান্ত হয়ে পড়বে মানুষ। ঘৃণার উদ্যাপন থেমে যাবে, আবার আশার পথে বয়ে যাবে সময়— সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন রত্না পাঠক সাহা। একের পর এক হিন্দি ছবি মুক্তির আগে যে ভাবে রোষের মুখে পড়ছে সে দিকে তাকিয়ে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। তাঁর বিশ্বাস, বেশি দিন এমন চলতে পারে না। নিশ্চয়ই সময় বদলাবে।
সম্প্রতি ‘পাঠান’ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে তীব্র বিতর্কের আগুন জ্বলছে, তা এখনই নিভে যাওয়ার নামগন্ধ নেই। শাহরুখ খানের নতুন ছবির মুক্তির দিন যত এগিয়ে আসছে, বয়কটের দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। ‘বেশরম রং’ গানের ভিডিয়োতে গেরুয়া বিকিনিতে দীপিকা পাড়ুকোনকে দেখে যা পরিস্থিতি, তাতে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে ‘পাঠান’ নিয়ে উত্তাপ ছড়াতে পারে। অধিবেশন শুরু সোমবারই। তার আগে স্পিকার প্রশ্ন তুলেছেন, শাহরুখ কি নিজের মেয়ের সঙ্গে বসে এই ছবি দেখতে পারবেন? যে প্রশ্নেই ইঙ্গিত, এর পরে বিতর্ক বিধানসভার আলোচনাতেও উঠে আসতে পারে। এই বাতাবরণে নিজের ছবির প্রচারে এসে মুখ খুললেন রত্না।
তাঁর কথায়, “দু’বেলা খেতে পান না, তবু অন্যের পরনের পোশাক নিয়ে ক্রোধ চরমে।” শুধু তা-ই নয়, পোশাকের রং নিয়ে আক্রোশ। যে পোশাক পরে আছেন এক জন শিল্পী! এ রকম পরিস্থিতিতে দেশের আর এক শিল্পী হয়ে কেমন অনুভূতি রত্নার? জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমি বলব, মূর্খের সময়ে বাস করছি। এগুলোই যদি এখন মানুষের মাথায় আসে সব সময়, মুশকিল। আলোচনারই যোগ্য নয় এই ভাবনাগুলো।”
রত্না এর পরই বলেন, “আমি আশা করছি, বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এখনও দেশে আছেন। তাঁদের সংখ্যা এতই কমে গিয়েছে হয়তো এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না, তবু আছেন। ঘৃণা, হানাহানির অধ্যায় শেষ হলে নিশ্চয়ই শান্তি ফিরবে। এর একটা শেষ আছে বলেই আমার বিশ্বাস।”
রত্নার দাবি, শিল্পসৃষ্টিতে স্বাধীনতা আবশ্যক। প্রতিনিয়ত শিল্পকে কাঠগড়ায় তুললে সামগ্রিক ভাবে ক্ষতি হয় উৎকর্ষের। সেখানে গোটা দেশ পিছিয়ে পড়তে পারে। বর্তমানে যা হচ্ছে তা নিছক মূর্খামি বলেই জানান ‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বোরখা’ অভিনেত্রী।
বিভিন্ন ধারার হিন্দি ছবিতে নিজের অভিনয়দক্ষতা প্রমাণ করেছেন রত্না। সম্প্রতি গুজরাতি ছবিতেও তাঁর অভিষেক হল ‘কচ্ছ এক্সপ্রেস’ দিয়ে। আগামী বছর, ৬ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি।