Indrani Dutta Birthday

কলকাতায় মনের মতো কেউ নেই, আমার জীবনসঙ্গী বাছার দায়িত্ব তাই মাকেই দিয়েছি

মায়ের নিজের জন্মদিন নিয়ে তেমন উত্তেজনা নেই। মায়েরা যেমন ভাবেন, ‘আমার আবার জন্মদিন পালন করে কী হবে!’ আমার মা-ও তেমনই।

Advertisement
রাজনন্দিনী পাল
শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৭
Actress Rajnandini Paul talks about the bond she shares with her mother Indrani Dutta

ইন্দ্রাণীর জন্মদিনে কন্যা রাজনন্দিনী কী লিখলেন? ছবি: সংগৃহীত।

আজ মায়ের জন্মদিন। আমার জীবনে বন্ধু খুব কম। মা আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। মায়ের নিজের জন্মদিন নিয়ে তেমন উত্তেজনা নেই। মায়েরা যেমন ভাবেন, ‘আমার আবার জন্মদিন পালন করে কী হবে!’ আমার মা-ও তেমনই। জন্মদিনে চমক পেতে অনেকে ভালবাসে। আমার মা তেমন নয়। তাই মাকে কোনও চমক দেওয়ার কথা ভাবি না এই দিনে। সন্ধেবেলা মায়ের কয়েক জন বন্ধু আসবেন। খাওয়াদাওয়া হবে, এটুকুই আজকের পরিকল্পনা।

Advertisement

আসলে মা সব সময় খুব ব্যস্ত থাকে। সব দিক সামলায়। নিজের জন্য আলাদা করে সময়ই পায় না। তাই আজ মাকে বলেছি, ‘কোনও কাজ কোরো না’। মা আবার কাজ ছাড়া থাকতেই পারে না। বাড়িতে থাকলে ঘর গোছাতে থাকে। বাগানের পরিচর্যা করতে থাকে। বাড়ির কাজে আমাকেও সব কিছুতেই মা সাহায্য করে। তবে আমার কাজের জগতে কিন্তু মা সে ভাবে মাথা গলায় না। মায়ের সঙ্গে আলোচনা করি সবই। যে কোনও পেশার মানুষই কিন্তু মায়েদের সঙ্গে আলোচনা করে। সেটুকুই আমি করি। মা এই অভিনয় জগতের মানুষ বলে আলাদা করে কোনও সাহায্য আমি পাই না। আমি যাতে কাজ পাই, তার জন্য আলাদা করে কাউকে কিছু বলেও না। বরং এই জায়গাটা মা আমার উপরেই ছেড়ে দিয়েছে।

তবে ব্যক্তিগত জীবনে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি মায়ের উপর ভরসা করি। আমার মাত্র দু’জন বন্ধু। এক জন আমার পাড়ার বন্ধু। আর এক জনের সঙ্গে আমার স্কুলের প্রথম শ্রেণি থেকে বন্ধুত্ব। আর রয়েছে আমার মা। তাই জীবনের সব সমস্যা মায়ের সঙ্গে আলোচনা করি। এখন আমার জীবনে প্রেম নেই। কিন্তু যখন ছিল, সবটাই আলোচনা করতাম মায়ের সঙ্গে।

আমার মা অনেক ছোটবেলাতেই কয়েকটি জিনিস বুঝিয়ে দিয়েছিল, কিশোর থেকে তরুণ হয়ে ওঠার সময়ে এই পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে সবাই যায়। তখন বাবা-মায়ের সঙ্গে বেশি কথা বলতে ভাল লাগে না। বাবা-মায়ের ফোন এলে বিরক্ত বোধ করে অনেকে। তখন বন্ধুরাই সব। আমি নিজেও এমন কয়েক জনকে দেখেছি আমার স্কুলে। তবে আমার কখনও এমন হয়নি। কারণ মা আমাকে কোনও কিছুতে বাধা দেয়নি। মা নিজেই বলেছিল, “তোমায় যত বেশি আটকাব, তুমি সেটাই সবচেয়ে বেশি করবে। তাই নিজের যেটা ভাল লাগে করো। কিন্তু কখনও কোনও সমস্যায় পড়লে সবার আগে আমার কাছে আসবে। কখনও ভাববে না, ভুল হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে আর বলা যাবে না।” তাই আমি মায়ের কাছে সেই খোলা পরিসর পেয়েছি, যেখানে ভাল-খারাপ সবটাই বলা যায়। বয়ঃসন্ধির সময়ে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বাবা-মায়ের একটা বিশেষ কথোপকথন হয়। আমার মা তখনই সবটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। তাই জানি, বিপদে পড়লে সবার আগে আমি মাকে ফোন করব।

সবচেয়ে বড় বিষয় হল, মা আমাকে সবচেয়ে ভাল ভাবে চেনে। আমার জন্য কোনটা ভাল, সেটাও কিন্তু সবচেয়ে ভাল আমার মা-ই জানে। তাই আমার জীবনসঙ্গী নির্বাচন করার দায়িত্ব মায়ের উপরই ছেড়ে দিয়েছি। আমি এখন কাজে পুরোপুরি নিমজ্জিত। এক দিকে ছবির কাজ, অন্য দিকে বাবার ব্যবসার দিকটাও দেখি। এ ছাড়া নাচ রয়েছে। সময় তো নেই-ই। তা ছাড়া কলকাতায় মনের মতো মানুষ কেউ নেই। জানি না, অন্য কোনও শহরে বা দেশে রয়েছে কি না। তাই মাকে বলে রেখেছি, “তোমার যখন মনে হবে, মেয়ের বিয়ে দেব, তুমি নিজেই খুঁজতে শুরু কোরো। আমার পছন্দ হলে আমি বিয়ে করে নেব।”

আমি বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানে বিশ্বাসী। তাই জীবনে এক বার তো করতেই চাই বিয়ে। আর মায়ের পছন্দের উপর আমার একশো শতাংশ ভরসা রয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন