বিশেষ সাক্ষাৎকারে সাগ্নিকের ‘স্ত্রী’ সুকন্যা জানিয়েছেন, পল্লবী আদতে তাঁরই বন্ধু ছিলেন।
‘বন্ধু’র হবু স্বামীর সঙ্গে জেনেবুঝেই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অভিনেত্রী পল্লবী দে। অভিনেত্রীর অস্বাভাবিক মৃ্ত্যুর বিতর্কে এই প্রথম প্রকাশ্যে মুখ খুললেন সাগ্নিকের ‘স্ত্রী’ সুকন্যা। তাঁর দাবি, ‘‘পল্লবী ভাল মেয়ে ছিল না। ওর পক্ষে অত দামি উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। আর সাগ্নিক কাউকে মেরে ফেলতে পারে না।’’
মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে সাগ্নিকের ‘স্ত্রী’ সুকন্যা জানিয়েছেন, পল্লবী আদতে তাঁরই বন্ধু ছিলেন। যে ঐন্দ্রিলার নামে সাগ্নিকের সম্পর্কের অভিযোগ করেছেন পল্লবীর বাবা-মা, সেই ঐন্দ্রিলাকেও ১০-১২ বছর ধরে চেনেন তিনি। তাঁরা দীর্ঘ দিন পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত। এমনকি, সাগ্নিকের সঙ্গে যখন তাঁর বিয়ের ঠিক হয়, তখন রেজিস্ট্রি বিয়েতে সাক্ষী হওয়ার কথা ছিল পল্লবীরই। বিয়ের নোটিসে তাঁর নামও ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বিয়ে হয়নি পল্লবীর জন্যই।
সুকন্যা জানিয়েছেন, সাগ্নিকের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা জানার পরও পল্লবী সাগ্নিকের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন। সুকন্যার কথায়, ‘‘আমার অনুপস্থিতিতে ওরা মেলামেশা করত। আমি সেটা বুঝতে পারি।’’ বাধ্য হয়েই ‘ত্রিকোণ সম্পর্ক’ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সুকন্যা। টেলিফোনে তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়েছিল, সাগ্নিকের আর্থিক সচ্ছলতার জন্যই ওঁর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল পল্লবী।’’ কারণ সুকন্যার মতে, পল্লবীদের পরিবার কোনও দিনই অর্থনৈতিক ভাবে খুব একটা ভাল অবস্থায় ছিল না।
সুকন্যার দাবি, ২০১৩ সাল থেকে সাগ্নিকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। ২০২০ সাল থেকে আর কোনও যোগাযোগ রাখেননি সাগ্নিক। পল্লবীর পাশাপাশি যে সাগ্নিকও তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তা মেনে নিতে পারেননি সুকন্যা। তবে গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে পল্লবীর মৃত্যুর জন্য সাগ্নিককে দায়ী করা হচ্ছে, তা-ও মানতে পারেননি তিনি। ফোনে বলেছেন, ‘‘আমি খবরে থাকতে ভালবাসি না। পল্লবী-সাগ্নিকের কথা জানার পরও এ করকম চুপচাপই সরে এসেছিলাম। কিন্তু, গত দু’দিনে সাগ্নিকের বিরুদ্ধে আনা খুনের অভিযোগ এবং পল্লবীর পরিবারের তরফে সাগ্নিককে দোষী সাজানোর চেষ্টা দেখে মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুকন্যা।
রবিবার কলকাতার টেলিভিশন অভিনেত্রী পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর এবং সাগ্নিকের গরফার ফ্ল্যাট থেকে। তার পরই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে তাঁর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ করেছিলেন পল্লবীর পরিবার এবং তাঁর অভিনয় জগতের সহকর্মীরাও। সোমবার সাগ্নিকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ করার জন্য খুনের অভিযোগও দায়ের করেন পল্লবীর বাবা-মা। প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে ওঠা ওই সব অভিযোগকেই খারিজ করেছেন সুকন্যা। তাঁর দাবি, ‘‘সাগ্নিক কাউকে মেরে ফেলতে পারে না। আর তাঁর পল্লবীর টাকায় জীবন যাপনেরও প্রয়োজন নেই। কেন না সাগ্নিক এবং তাঁর পরিবার বরাবরই ধনী।’’
সুকন্যা বলেছেন, ‘‘পল্লবীর টাকা আত্মসাৎ করা তো দূর অস্ত্, বরং পল্লবীর পরিবারেরই খরচ জোগাতেন সাগ্নিক। পল্লবীর বাবার ঝালমুড়ির দোকান। ওঁর ভাইও তেমন কিছু করতেন না। পল্লবী যা কাজ করতেন, তাতে ওঁর পক্ষেও বিপুল টাকা উপার্জন করা বা দামি গাড়ি উপহার দেওয়া সম্ভব ছিল না। আমার ধারণা, টাকা আত্মসাৎ করার যে অভিযোগ সাগ্নিকের বিরুদ্ধে আনা হচ্ছে তা সত্যি হতে পারে না। বরং পল্লবীর সংসারই চালাত সাগ্নিক।’’