Saurav Das

নির্জন দ্বীপ, সাঁতার জানি না, জলে ফাঁড়া জেনেও বাধ্য হলাম ডুব দিতে: সৌরভ দাস

আমি প্রত্যাখ্যান থেকে সব সময় কিছু না কিছু শিখেছি। কখনও ভেঙে পড়িনি। কষ্ট হয়তো এক-দু’দিন হয়েছে। কিন্তু তার থেকে বেশি মাথায় উঠতে দিইনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ১৪:২৮
Actor Saurav Das told that he got scared while shooting underwater

সৌরভ দাস। ছবি: সংগৃহীত।

পরনে কালো জামা আর আফগানি প্যান্ট। উস্কোখুস্কো চুলে পাক ধরেছে। একমুখ কাঁচাপাকা দাড়ি। সেই দাড়িতে আবার বেণী করা। হাতে বিশেষ ধরনের এক চুরুট। এমন সাজে হঠাৎই সমুদ্রের তলায় ডুব দেন অভিনেতা সৌরভ দাস। নির্জন দ্বীপে ভয় গ্রাস করেছিল অভিনেতাকে।

Advertisement

পরিচালক রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন ওয়েব সিরিজ় ‘মিল্কশেক মার্ডার’। এমন চরিত্রে নাকি এর আগে অভিনয় করেননি সৌরভ। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন সৌরভ।

এই সিরিজ়ে অভিনয় করতে গিয়ে বড় ঝুঁকি নিতে হয়েছে সৌরভকে। সিরিজ়ে ‘আন্ডারওয়াটার’ অর্থাৎ জলের তলায় বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিং হয়েছে। সেই দৃশ্যে অভিনয় করত গিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছিলেন সৌরভ। থাইল্যান্ডের ফিফি দ্বীপে সমুদ্রের তলায় হয়েছে শুটিং। এ দিকে সৌরভ সাঁতার জানেন না।

তা হলে শুটিং করলেন কী ভাবে? জিজ্ঞাসা করতেই সৌরভ বলেন, ‘‘আমি সাঁতার জানি না। রিঙ্গোদা ভাবছিলেন, কী ভাবে কী করা যায়? তাই এমন একটা জায়গা খুঁজে বার করা হয়, যেখানে সমুদ্রের গভীরতা তেমন নয়। অনেকটাই হেঁটে যাওয়া যায় সেই ‘স্পট’ পর্যন্ত। কোমর পর্যন্ত জল ছিল। আমার কথা ভেবেই এই জায়গায় শুট করা হয়। আমি যখন জলের নীচে যাই, ওই দৃশ্যটা রিঙ্গোদা নিজে শুট করেছেন, যে হেতু তিনি সাঁতার জানেন। কিন্তু সেটা করতেও বেশ চাপ হয়েছিল। কারণ দেখানো হয়েছে, আমি জলে ডুবে যাচ্ছি।’’

সমুদ্রের নীচে শুটিংয়ের আগে সৌরভ  দাস ও নীল ভট্টাচার্য।

সমুদ্রের নীচে শুটিংয়ের আগে সৌরভ দাস ও নীল ভট্টাচার্য।

অভিনেতার সুবিধা মতো সমুদ্রের তলায় শুটিং হলেও এই দৃশ্য নিয়ে চিন্তায় ছিলেন সৌরভের মা-ও। অভিনেতা বলেন, ‘‘আমার মা শুনেই খুব টেনশন করছিলেন। কারণ আমার জলে ফাঁড়া আছে। তার উপর আমি সাঁতার জানি না। তাই প্রথমেই রিঙ্গোদাকে বিষয়টা জানিয়েছিলাম, কারণ জলের ভিতর তো আমায় যেতেই হত। পাড়ে বসে তো আর এই দৃশ্যের শুটিং হত না। ক্যামেরায় দেখানো হচ্ছে, জলে ডুবে যাচ্ছি। তাই এটা টিমের কৃতিত্ব যে এমন একটা জায়গা খুঁজে বার করা গিয়েছে।’’

সৌরভকে দেখা যাবে এক জন লেখকের চরিত্রে। সেই লেখকের চরিত্রে একাধিক দিক রয়েছে বলে জানান তিনি। আর তাই চরিত্রের প্রতিটি রং ফুটিয়ে তুলতে তাঁকে প্রস্তুতিও নিতে হয়েছে অনেক। আবার চরিত্র থেকে বেরোনোও মোটেও সহজ ছিল না। অভিনেতার কথায়, ‘‘এই চরিত্রটা হয়ে উঠতে আমায় বেশ ভাবতে হয়েছে এবং ভয় পেতে হয়েছে। চরিত্র থেকে বেরোনোও সহজ ছিল না। এখনও চরিত্রের বেশ কিছু বিষয় আমার মধ্যে রয়ে গিয়েছে। সিরিজ় মুক্তির পর হয়তো সেই বিষয়গুলি আবার অনুভব করব।’’

এই বেশেই দেখা যাবে সৌরভকে।

এই বেশেই দেখা যাবে সৌরভকে।

সৌরভ অভিনীত লেখকের চরিত্রটি সিরিজ়ে প্রকাশনা সংস্থা থেকে বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে হতাশ হয়ে ফিফি দ্বীপে চলে যায়। বাস্তবে প্রত্যাখ্যান কী ভাবে সামলান অভিনেতা? জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রত্যাখ্যান থেকে সব সময় কিছু না কিছু শিখেছি। কখনও ভেঙে পড়িনি। কষ্ট হয়তো এক-দু’দিন হয়েছে। কিন্তু তার থেকে বেশি মাথায় উঠতে দিইনি। কেন প্রত্যাখ্যান করা হল, সেটা নিয়ে ভাবি। কিন্তু কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে দিই না।’’

এই প্রথম কোনও সিরিজ়ের জন্য বিদেশে শুটিং করলেন সৌরভ। তিনি বলেন, ‘‘প্রযোজকরা যে বিদেশে শুটিং করার কথা ভেবেছেন, তার জন্য কুর্নিশ। এটা বাংলার কাছে গর্বের। দ্বীপে এমন কিছু জায়গা ছিল, যেখানে গাড়িও ছিল না। শুধু স্কুটি আর নৌকোর উপরই নির্ভর করতে হয়েছিল। কোনও দূষণ নেই। মনে হচ্ছিল আমরা বেড়াতে গিয়েছি। তার মধ্যেই শুটিং হত।’’

উল্লেখ্য, ‘মিল্কশেক মার্ডার’ ওয়েব সিরিজ়ে সৌরভ ছাড়াও অভিনয় করেছেন নীল ভট্টাচার্য, তৃণা সাহা ও জয়ী দেব রায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement