Saif Ali Khan Statement

‘আমি আর করিনা শোয়ার ঘরে, হঠাৎ জেহ্‌-র কান্না’! দুর্ঘটনার রাত নিয়ে সইফ কী বললেন পুলিশকে?

পুলিশ জানিয়েছে, চুরির উদ্দেশ্য নিয়ে সইফের ঘরে ঢুকেছিলেন আক্রমণকারী। নাম মহম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজ়াদ। সম্ভবত তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। মুম্বইয়ের ঠাণে থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:০০
পুলিশকে বয়ান দিলেন সইফ আলি খান।

পুলিশকে বয়ান দিলেন সইফ আলি খান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

১৬ জানুয়ারি। অভিনেতা সইফ আলি খানের জীবনের বিভীষিকাময় রাত। যে রাতে এক অজ্ঞাতপরিচয় তাঁর শরীরে একের পর এক ছুরির আঘাত হেনেছিলেন। এ কথা অভিনেতার স্ত্রী করিনা কপূর খান তাঁর বয়ানে পুলিশকে জানিয়েছেন। জেরার সময় প্রায় একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে তারকা দম্পতির ছোট ছেলে জেহ্‌-র দেখভালকারীর থেকেও। যিনি ওই রাতে আক্রান্ত, সেই সইফ কী বলছেন? ঠিক কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?

Advertisement

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অবশেষে পুলিশের কাছে বয়ান দিলেন অভিনেতা। সইফ বললেন, “সেই রাতে আমি আর করিনা ১১ তলায় আমাদের শোয়ার ঘরে ছিলাম। আচমকা জেহ্‌-র ঘর থেকে ওর দেখভালকারী এলিয়ামা ফিলিপের চিৎকার শুনতে পাই। আমরা দৌড়ে সেই ঘরে গিয়ে দেখি এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি সেখানে দাঁড়িয়ে।”

নিজের ঘরে অচেনা একজনকে দেখে ছোট্ট জেহ্‌ ভয় পেয়ে তারস্বরে কাঁদছে। এ সব দেখে আর নিজেকে সামলাতে পারেননি সইফ। সন্তানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন দুষ্কৃতীর উপর। সঙ্গে সঙ্গে আগন্তুক জেহ্‌-র বদলে নিশানা বানান অভিনেতাকে। এলোপাথাড়ি ঘাড়ে, হাতে, পিঠে ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকেন! আঘাতের পর আঘাত সহ্য করতে করতে একটা সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন সইফ। সেই অবস্থাতেই ধাক্কা দিয়ে হামলাকারীকে ছোট ছেলের থেকে দূরে সরিয়ে দেন। এই সুযোগে এলিয়ামা দ্রুত জেহ্‌-কে কোলে তুলে নিয়ে অন্য ঘরে পালিয়ে যান। বাকি কর্মচারীরা দুষ্কৃতীকে একটি ঘরে আটক করেন। গুরুতর আহত সইফ এর পরেই হাসপাতালে ভর্তি হন। ফলে, হামলাকারী কী ভাবে তাঁর বাসভবন থেকে পালান সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি।

হামলাকারীকে আটকাতে গিয়ে সইফের সঙ্গে সে দিন এলিয়ামাও অল্পবিস্তর আহত হয়েছিলেন। একটু ধাতস্থ হয়ে তিনি গৃহকর্তাকে জানান, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিটি জেহ্‌কে পণবন্দি বানাতে চেষ্টা করছিলেন। ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিলেন। পুলিশকে সে রাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে সইফের দাবি, এই বিভীষিকা আজীবন তাঁকে তাড়া করে বেড়াবে।

বড় ছেলে তৈমুরকে নিয়ে (মতান্তরে ইব্রাহিম আলি খান অথবা তাঁর বন্ধু) সইফ অটোয় চড়ে পৌঁছে যান লীলাবতী হাসপাতালে যেতেই চিকিৎসকেরা দ্রুত ভর্তি করে নেন তাঁকে। নিয়ে যাওয়া হয় জরুরি বিভাগে। চিকিৎসকদের একটি পর্যবেক্ষণ দল গঠিত হয়। তাঁরা অস্ত্রোপচার করে সইফের মেরুদণ্ডের কাছে বিঁধে থাকা ছুরির ভাঙা অংশ বার করে আনেন। ঘাড় এবং বাহুর আঘাতের জন্য প্লাস্টিক সার্জারি করেন। ২১ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে অভিনেতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, চুরির উদ্দেশ্য নিয়ে সইফের ঘরে ঢুকেছিলেন আক্রমণকারী। নাম মহম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজ়াদ। সম্ভবত তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। মুম্বইয়ের ঠাণে থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

সইফ আলি খানের বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে সংগৃহীত আঙুলের ছাপ শরিফুলের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। অভিযুক্ত অভিনেতার বাড়ির ১১ তলায় ডাক্ট পাইপ বেয়ে উঠেছিলেন। সেখানেও তাঁর হাতের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। জেহ্‌-র ঘরের দরজার হাতলে এবং বাথরুমের দরজায় অতিরিক্ত ছাপ পাওয়া গিয়েছে। সে সব ফরেন্সিক তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের ধারণা, সেই ছাপগুলোও অভিযুক্তের আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলে যাবে।

Advertisement
আরও পড়ুন