Celebrity Birthday

লকেটের পেশা পরিবর্তনে বিস্মিত হয়েছিলাম, তবে তাতে যদি দেশের, দশের ভাল হয়, আমি খুশি

লকেট মঞ্চে উঠলে আলাদা আকর্ষণ তৈরি হত। সেই ছাত্রীর শারীরিক এবং পেশা পরিবর্তন ধাক্কা দিয়েছিল, জন্মদিনে লিখলেন অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী।

Advertisement
মমতা শঙ্কর
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:১১
মমতা শঙ্করের ছাত্রী ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়।

মমতা শঙ্করের ছাত্রী ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

বয়স তখন কত হবে? বড় জোর ১২ কি ১৩। মায়ের হাত ধরে আমাদের নাচের স্কুলে ভর্তি হতে এসেছিল লকেট, আপনাদের লকেট চট্টোপাধ্যায়। বরাবর বুদ্ধিমতী। নাচের যে কোনও মুদ্রা খুব চট করে ধরে নিতে পারত। শুধুই নাচ নয়, যে কোনও বিষয়। ওর উপস্থিত বুদ্ধি বেশি ছিল। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই, এক বার নাচের ফাঁকে ছাত্রীদের বলেছিলাম, না থমকে সবাইকে ১ থেকে ৩০০ লিখতে হবে। লকেট প্রায় ৩০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল! সকলের চেয়ে আগে।

Advertisement

ছোট থেকেই ভীষণ সুন্দর, মিষ্টি। সেজেগুজে যখন মঞ্চে উঠত, দর্শকদের নজর কাড়ত। মঞ্চ উপস্থিতি ওর দুর্দান্ত। যত বড় হয়েছে আরও সুন্দরী হয়েছে। ওর মা মেয়ের সঙ্গে আসতেন। নিয়মিত নাচের স্কুলে পৌঁছে দেওয়া, আবার নিয়ে যাওয়া। একটা মজার ঘটনা বলি, আমাদের নাচের স্কুলে ছেলে-মেয়ে উভয়েই শেখে। লকেট বড় হওয়ার পর সম্ভবত এক ছাত্রের ওর প্রতি দুর্বলতা তৈরি হয়েছিল। লকেটের তরফ থেকে কোনও অনুভূতি ছিল না। কিন্তু বুঝতে পারতাম, ছাত্রটি সুন্দরী ছাত্রীকে পছন্দ করছে। কিন্তু কোনও দিন বলতে পারেনি। আমায় যেমন প্রত্যেকে ভালবাসে তেমনই সমীহও করে। ফলে, বেচারার মনের কথা কোনও দিন প্রকাশ্যে আসেনি।

এই কারণেই লকেটের পরিবার এবং বাকিরাও আমায় ভরসা করেন। মেয়েকে অনায়াসে বাইরে অনুষ্ঠান করতে ছেড়ে দেন। আমরাও সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রেখেছি। কোনও দিন ছাত্রছাত্রীদের আলাদা বন্দোবস্ত করিনি। একসঙ্গে, এক পরিবার হয়ে যেতাম। আজও এই ধারা বহাল রয়েছে। এই ভরসা লকেটের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদেরও ছিল। এই প্রসঙ্গে জানাই, ওর বিয়েতে আমি নিজের হাতে সাজিয়েছিলাম। একা লকেট নয়, আমার সমস্ত ছাত্রীর বিয়েতে আমার সাজানোর দায়িত্ব থাকে। ওরা আমার হাতে সাজতে ভালবাসে।

লকেটের বিয়ে ঠিক হওয়ার পর এক দিন এসে বলল, “মমদি, আমায় কিন্তু তোমায় সাজাতে হবে।” না বলিনি, খুশি মনে রাজি হয়েছিলাম। সাজানোর পর বধূবেশে মেয়েটি অপূর্ব সুন্দর। সৌন্দর্যের পাশাপাশি অভিনয়টাও ভাল পারত। নাচে অভিনয় জানা জরুরি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে শেখানো হয়। তাই লকেট যখন অভিনেত্রী হল, অবাক হইনি।

বরং বিস্মিত এবং ব্যথিত হয়েছিলাম, যখন লকেট নাচ, অভিনয় সব ছেড়ে রাজনীতিতে এল! দুঃখ পেয়েছিলাম, এটা ও কী করল! ধীরে রাজনীতির ময়দানে ওকে প্রতিষ্ঠিত দেখে আমি খুশি। জন্মদিনে আশীর্বাদ করে বলতে চাই, লকেটের রাজনীতিতে যোগদানে যদি দেশের, দশের মঙ্গল হয়, ও যদি নিঃস্বার্থ ভাবে সমাজের সকলের জন্য কাজ করে, তা হলে আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না।

Advertisement
আরও পড়ুন