Biopic of Mrinal Sen

মৃণাল সেনের বায়োপিকে এ বার সৃজিত-চমক! নামভূমিকায় অভিনয় করবেন চঞ্চল

ছবিতে অবশ্য মৃণালের ব্যক্তিগত এবং পরিচালনার জীবনই বেশি থাকবে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে তাঁর বানানো কলকাতা ট্রিলজি ছবির অনেকটা জুড়ে থাকবে। ছবিতে থাকবেন মনামী ঘোষ এবং সম্রাট চক্রবর্তীও।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ০০:৪৩
পরিচালক মৃণাল সেনের জীবনীচিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।

পরিচালক মৃণাল সেনের জীবনীচিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ছবি সংগৃহীত।

মৃণাল সেনের চরিত্রে বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। নববর্ষে টলিউডের বড় খবর আপাতত এটাই।

ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণালের মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে আনন্দবাজার অনলাইন জানাচ্ছে, জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ওই ছবির শুটিং শুরু করবেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। যিনি বলছেন, ‘’বায়োপিক বা ওই ধাঁচের ছবি আগেও করেছি। যেমন শাবাশ মিঠু বা ভাওয়াল সন্ন্যাসীকে নিয়ে। কিন্তু নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং!’’

Advertisement

ছবিটির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। যিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, মৃণালের প্রয়াণদিবসে তাঁরা এই ছবিটির ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, সৃজিত এই জীবনীচিত্রটি করতে চেয়েছিলেন ওয়েব সিরিজ়ে। লকডাউনের সময় তিনি চিত্রনাট্য লিখেও ফেলেছিলেন। তার পরে ছবি বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। স্বভাবতই সিরিজের তুলনায় দৈর্ঘ্য কমাতে হয়েছে। সৃজিতকে সাহায্য করেছেন মৃণালের পুত্র কুণাল সেন। যাঁকে মৃণাল ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করতেন। কুণাল সৃজিতকে ছবিটি বানানোর অনুমতি দিয়েছেন। সৃজিত-কুণাল নিরন্তর যোগাযোগও আছে।

তবে মৃণালের ভূমিকায় চঞ্চলকে নেওয়া নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ। সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। কেন চঞ্চল? সৃজিতের কথায়, “প্রথমত দু’জনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণালবাবুর মতোই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তা ছাড়াও মৃণালবাবুর রাজনীতি চেতনা, তাঁর যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।’’

ছবিতে অবশ্য মৃণালের ব্যক্তিগত এবং পরিচালনার জীবনই বেশি থাকবে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে তাঁর বানানো কলকাতা ট্রিলজি ছবির অনেকটা জুড়ে থাকবে। ছবিতে থাকবেন মনামী ঘোষ এবং সম্রাট চক্রবর্তীও।

মৃণাল জন্মেছিলেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে। তিনি ছবি বানিয়েছিন বাংলা, হিন্দি এবং তেলুগুতে। তাঁর নাম পরিচালক হিসাবে বাংলার সর্বকালীন সেরাদের মধ্যে অন্যতম বলে পরিগণিত হয়। ‘পদ্মভূষণ’ থেকে ‘দাদাসাহেব ফালকে’— সবই রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ভুবন সোম, মৃগয়া, আকালের সন্ধানে, খারিজ, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন— এ সবই তাঁর অন্যতম সৃষ্টি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ থেকে ২০০২ সালের ‘আমার ভুবন’— মাঝে রয়েছে মৃণালের অসংখ্য সিনেমা।

সেই মৃণালের জীবনীচিত্রে তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করবেন চঞ্চল। সম্প্রতি যাঁর দু’পর্বের ‘কারাগার’, ‘তকদির’-এর মতো ওয়েব সিরিজ় এবং ‘হাওয়া’র মতো ছবি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দর্শকের প্রশংসা পেয়েছে। সম্প্রতি চঞ্চলের পিতৃবিয়োগ হয়েছে। আপাতত তিনি বাংলাদেশে আছেন। শুটিং শুরুর আগে কলকাতায় পৌঁছবেন।

সম্প্রতি কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে একসঙ্গে দেখা যায় সৃজিত-চঞ্চলকে। তার আগে চঞ্চল আনন্দবাজার অনলাইনকে একটি ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন, তিনি সৃজিতের সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন। সৃজিত তখন বলেছিলেন, “সময় এলে সবই জানতে পারবেন।”

সময় এসেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement