(বাঁ দিকে) প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এসিপি লালবাজার কন্ট্রোল অলোক সান্যাল (ডান দিকে)। সংগৃহীত চিত্র।
এসিপি লালবাজার কন্ট্রোল অলোক সান্যাল। সহকর্মী এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালবেসে তাঁকে ‘সেলেব পুলিশ’ বলেন। কারণ, তিনি প্রশাসনিক মহলে যতটা প্রশংসিত, একই ভাবে বিনোদন দুনিয়াতেও। পরিচালক রাজ চক্রবর্তী থেকে অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়, ছোট পর্দা থেকে সিরিজ হয়ে বড় পর্দা— সবেতেই অনায়াস গতায়াত। সদ্য শেষ করলেন অভিমন্যুর ছবি ‘কীর্তন ২’-এর শুটিং। এখানে তিনি ‘প্রোমোটার’। প্রযোজনা সংস্থা ক্যামেলিয়া র সৌজন্যে সেই ‘লুক’ আনন্দবাজার অনলাইনের পাতায়।
পুলিশ যখন প্রোমোটার, দুষ্টমি তো প্রচুর? এসিপি লালবাজার কন্ট্রোলের দরাজ হাসি। বললেন, ‘‘দুষ্টুমিই করতে চাই। জবরদস্ত খলনায়ক হওয়ার খুব সাধ। প্রশাসনিক ধরাচুড়ো দেখে কেউ দিতেই চান না। আপনারা আমার হয়ে অনুরোধ জানাবেন?’’
লোকসভা নির্বাচন থেকে আইপিএল — অলোক সবেতেই আছেন। শহরের সুরক্ষা তাঁর কাঁধে। সে সব সামলে অভিনয় করাটাও তো চাপের! কথা তুলতেই তাঁর যুক্তি, এটাই তাঁর বিনোদন। হয়তো বেশি দিন একটানা শুটিং করতে পারেন না। একটা দিন সকাল থেকে রাত শুটিং করেন। বড় বাজেটের ছবি বা সিরিজ় হলে বড় জোর দু’দিন ছুটি বরাদ্দ। ওই দিনগুলো তাঁর কাছে ডানা মেলার দিন। তিনি পুলিশের খোলস ছেড়ে চরিত্রের ভিতরে ঢোকেন। যেমন, অভিমন্যুর ছবিতে। পরান বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, অরুণিমা ঘোষের সঙ্গে শুটিং করতে করতে ভুলেই গিয়েছিলেন, তিনি আদতে কী!
কিন্তু যখন পর্দাতেও তাঁকে পুলিশের চরিত্রে দেখা যায়? একটু কি ম্লান শোনাল গলা! বড় শ্বাস নিয়ে উত্তর দিলেন, ‘‘একটু একঘেয়ে লাগে। কিছু করার নেই। যেমন, দুলাল দে-র ‘অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ’ কিংবা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের ‘মিসিং লিঙ্ক’। দুটোতেই উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকের চরিত্র। জি বাংলার ধারাবাহিক ‘জগদ্ধাত্রী’তেও নায়িকাকে পুলিশ আধিকারিক হিসেবে সহযোগিতা করেছিলাম। দর্শকের প্রশংসা পেয়েছি। তাই মেনেও নিয়েছি।’’
তার পরেও সমাজমাধ্যমে মুণ্ডিতমস্তক, চোখে কালো চশমা পরা খলনায়ক সাজে ছবি! হাসতে হাসতে দাবি, ‘‘যদি কেউ এই ছবি দেখে ভরসা করেন।’’ একটু থেমে যোগ করলেন, ‘‘জানেন, আগে মাথাভর্তি চুল ছিল। সারা ক্ষণ টুপি পরে থাকার ফলে সব উঠে গিয়ে ন্যাড়া মাথা। প্রথম প্রথম দুঃখ হত। তার পর দেখলাম, হলিউডের সমস্ত নামী নায়ক, বিশেষ করে খলনায়কের মাথা কামানো। মনে আশা জাগল। যাক, তা হলে আমারও কিছু হতে পারে।’’
খলনায়ক হলে ধর্ষণ দৃশ্যেও অভিনয় করতে হতে পারে। এসিপি লালবাজার কন্ট্রোল অলোক সান্যাল এমন দৃশ্যে অভিনয় করবেন? প্রশ্ন শেষের আগেই হাঁ হাঁ করে উঠেছেন। জানিয়েছেন, তিনি বাস্তবে প্রচণ্ড নীতিবাদী। কোনও অন্যায় সহ্য করেন না। নারীঘটিত অপরাধ তো নয়ই। তাই এই ধরনের দৃশ্যে অভিনয়ের প্রশ্নই নেই।
তাঁর পাশাপাশি আরও এক প্রশাসনিক আইপিএস আধিকারিক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বিনোদন দুনিয়ায় পরিচিত নাম। তাঁকে ছোট পর্দায় বেশি দেখা যায়। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে শাসকদলের প্রার্থী হয়েছিলেন পুলিশের চাকরি ছেড়ে। অলোকও কি সেই পথেই এগোবেন? এ বার ঝটিতি জবাব, ‘‘কোনও ভাবেই না। রাজনীতি বুঝি না। ভালও লাগে না। আপনাদের শুভেচ্ছায় বিনোদন দুনিয়ায় আরও পরিচিতি বাড়ুক। বলিউডে কাজ করার খুব ইচ্ছে। এগুলো পূরণ হলেই খুশি।’’