মিমি চক্রবর্তী এবং আবীর চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
তাপমাত্রার পারদ যেমন চড়ছে, রাজনৈতিক উত্তাপও বাড়ছে ক্রমশ। আর রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বিনোদন দুনিয়া। এমতাবস্থায়, পর্দার জুটি আবীর চট্টোপাধ্যায় ও মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার অনলাইন। প্রথম ভোট দেওয়ার স্মৃতি থেকে চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠে এল আলোচনায়।
ভোটের প্রসঙ্গ উঠতেই মিমি পৌঁছে গেলেন ছোটবেলায়। ওই সময়ে মিমির কাছে আঙুলে ভোটের কালি দেওয়ার বিষয়টা আকর্ষণীয় ছিল। তাঁর কথায়, “বড়দের আঙুলে কালি দেওয়া থাকত। আমরা তো পেতাম না।” তা হলে মিমির প্রথম ভোটের স্মৃতি জুড়ে কি শুধুই আঙুলে এক চিলতে কালির নিশান? “প্রথম বার ভোট দিয়ে আঙুলে কালি দিয়ে ছবিও তুলে রেখেছিলাম। প্রথম বার ভোট দিয়ে পরের দিন বন্ধুদের দেখিয়েছিলাম, এই দেখ, ভোট দিয়েছি”, হাসিতে ফেটে পড়লেন মিমি।
আবীরের প্রথম ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন? “প্রথম ভোটের একটা আলাদা উত্তেজনা আছে। আমি যখন প্রথম ভোট দিয়েছিলাম তখন মেশিনে নয়, স্ট্যাম্প দিয়ে ভোট দিয়েছিলাম। বাবাহ্! কত পুরনো আমি!” বললেন পর্দার ব্যোমকেশ। অন্য দিকে, মিমি আর তাঁর দিদির প্রথম ভোট নিয়ে পরিবারের সকলে খুব সচেতন ছিলেন।তাঁরা কোন দলকে ভোট দেবেন সেই বিষয়ে বাড়ির বড়রা হস্তক্ষেপ করেননি কখনও। তবে ইভিএম মেশিন কী রকম হয়, কী ভাবে ভোট দিতে হয় সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছিলেন। মিমি বললেন, “বার বার শিখিয়ে দিয়েছিলেন, এক বারই বোতামে চাপ দেবে। দু’বার নয়।”
রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মিমি। এ বছর নির্বাচনী প্রচার মিস্ করছেন অভিনেত্রী? প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই মিমির সটান উত্তর, “না মিস্ করছি না।” তা হলে দর্শক বা অনুরাগীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? “প্রচারের বাইরেও ছবি করে অনুরাগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যায়”, বললেন অভিনেত্রী। কোনও প্রশাসনিক সিস্টেমে বদল চান মিমি? মিমির স্পষ্ট উত্তর, “কোনও মন্তব্য করতে চাই না। সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলাম তখন কিছু করতে পারিনি, এখন আর এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না।” আবীর কি কখনও ডাক পেলে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেবেন? অভিনেতার কথায়, “মন দিয়ে কাছের মানুষদের দায়িত্ব নিতে চাই। কিন্তু বহুসংখ্যক মানুষের দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা বা ইচ্ছে কোনওটাই নেই আমার।”
রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে আবীর প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন না কেন? প্রশ্নের উত্তরে আবীর বললেন, “ভোট বা রাজনীতি নিয়ে বাবার সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা হয়। জনসমক্ষে বলি না, কারণ সীমিত সংখ্যক লোকজনের সঙ্গে এই সংক্রান্ত আলোচনা করি। আমার ব্যক্তিগত মতামত। সবার সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করা আমার কাজ নয়।”
দু’জনেই রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়েছেন। স্বতন্ত্র রাজনৈতিক চিন্তাধারা, না কি বাড়ির প্রভাব রয়েছে? সময়ের সঙ্গে দু’রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে আবীরের। তাঁর কথায়, “আমার বাড়ি ও মামাবাড়ির সকলে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এখনও তাই। ফলে রাজনৈতিক পরিমণ্ডল প্রথম থেকেই ছিল। চর্চাও হত। তখন বয়স অল্প ছিল, সেই চর্চা অনেকটাই প্রভাব ফেলেছিল। নিজস্ব চিন্তাভাবনা ছিল না। পরবর্তী কালে বড় হতে হতে নিজস্ব চিন্তাভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে মূল চিন্তাভাবনার জায়গাটা আজও একই আছে।” অন্য দিকে, মিমির কথায়, “আমাদের অনেক বড় পরিবার। এক জন এই দলের সমর্থক, তো অন্য ভাই-বোন অন্য দলের সমর্থক। সেই নিয়ে পরিবারে তর্ক-বিতর্ক হত। ছোটবেলা থেকে এ সবই দেখে আসছি।”