দিয়ার সঙ্গে প্রেম ভাঙা নিয়ে অকপট অভিষেক
‘যদি পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে যায়, নব প্রেম জাগে’— অভিনেত্রী দিয়া মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং সুরভী মল্লিকের সঙ্গে নতুন প্রেম নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সামনে অকপট ধারাবাহিকের অভিনেতা অভিষেক বসু।
১। বাংলা ধারাবাহিকের জগতে তো অভিষেক বসু তো ক্যাসানোভা। অভিনয়, নাচ, গান— সবেতেই পারদর্শী। কেমন লাগে এটা শুনতে?
অভিষেক: ‘ক্যাসানোভা’ শব্দের প্রকৃত অর্থ আমি বুঝি না। নাচ, গান এবং অভিনয়ে দক্ষতা ঈশ্বরের আশীর্বাদ। সে জন্য আমি ধন্য এবং কৃতজ্ঞ। তা ছাড়া বাবা, মা ছোট থেকে আমায় উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁদের কাছেও আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ।
২। নতুন প্রেম কেমন চলছে?
অভিষেক: সুরভীর মতো এক জন সঙ্গীকে পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। প্রার্থনা করব, যাতে এই সম্পর্কটা টিকে যায়।
৩। দিয়ার সঙ্গে প্রেম হওয়াটাও ধারাবাহিকের সূত্রে, এ বারও...
অভিষেক: এটা নেহাতই কাকতালীয়। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রেম করতে আসিনি। আমি বরাবরই চিরস্থায়ী সম্পর্কে বিশ্বাসী। তাই ‘করে দেখি’ গোছের প্রেম আমি করতে পারিনি। কোনও সম্পর্কে জড়ালে পুরোপুরি তাঁর সঙ্গেই থাকি। তবে এ রকম অনেক বিষয় আছে, যেগুলো আমি আগে থেকে জানলে সম্পর্কটা তৈরিই হত না। কারণ আমি মনে করি, বিয়ে হয় দুই পরিবারের মধ্যে। সেখানে আমার ও আমার পরিবারের গোটা ভবিষ্যৎ গুরুত্বহীন হয়ে পড়লে, তা খুবই কষ্টকর। যখন জানতে পারি, তখন অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। ভেবেছিলাম ভালবাসা দিয়ে বোধহয় সবটা শুধরে দেওয়া সম্ভব। সেই ভুল এখন ভেঙে গিয়েছে। আর সুরভীর সঙ্গে আমার দেখা হওয়াটা ভবিতব্য বলে মনে করি। অভিনেতা না হলেও ভগবান অন্য কোনও উপায়ে ঠিক আমাদের দেখা করিয়ে দিত।
৪। দিয়ার সঙ্গে তিন বছরের প্রেম টিকল না। কোনও খারাপ লাগা আছে দিয়ার প্রতি?
অভিষেক: তিন বছর… খারাপ লাগা ছিল। তিন বছর তো কম নয়। সম্পর্কটাকে খুব গুরুত্ব দিতাম। সবাই জানে। কিন্তু যে হতাশাগুলো আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত, সেগুলো আর সহ্য করা যাচ্ছিল না। বিচ্ছেদের পরে আমি রোজ কতটা কষ্ট পেয়েছি, তা তো কেউ জানে না। জানাতে চাইও না। আমি কারও সহানুভূতি চাইনি। পরে জানতে পারি যে, অনেকের ধারণা, আমি নাকি এই তিন বছরে যা করেছি, সবটাই নাটক। সেটা শুনে খুবই কষ্ট হয়েছে আমার। আমি আজও বুঝি না যে ওর (দিয়া) সঙ্গে নাটক করে আমার জীবনে কী উন্নতি হবে! এই সম্পর্কটায় আমার কী কী সমস্যা বা কষ্ট ছিল, তা আর কেউ জানুক না জানুক, দিয়া সব-ই জানত।
৫। দিয়ার পরিবারের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল?
অভিষেক: এই বিষয়ে যত কম বলা যায়, ততই ভাল। পরিবার সম্পর্কিত অনেক কিছু নিয়ে অনেক দিন ধরেই সমস্যা চলছিল। কিন্তু তা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। কারণ আমি দিয়াকে যথেষ্ট সম্মান করি। অতএব দিয়াকে বা ওর পরিবারকে ছোট করতে আমি চাই না। এটুকু বলতে পারি, সব কিছু সহ্য করেও আমি অনেক দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে গিয়েছি। তাতেও মানিয়ে নিতে পারলাম না।
৬। নতুন প্রেমে সে সবের প্রভাব পড়ছে?
অভিষেক: একটু তো পড়ছে। অনেকেই মনে করছেন যে নতুন সম্পর্কের কারণেই এই বিচ্ছেদ হয়েছে। সেটা খুবই অদ্ভুত। মানুষের এটা বোঝা উচিত, কারও জন্য কিছু হয় না। কারও সঙ্গে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত থাকলে কারও ক্ষমতা নেই যে অভিষেক বসুর মাথা ঘোরাবে!
৭। কী ভাবে সামলাচ্ছেন?
অভিষেক: সামলানোর কিছু নেই। দিনের শেষে আমি জানি আর ভগবান জানেন যে আমার উদ্দেশ্য কোনও দিন খারাপ ছিল না। এই বিশ্বাস নিয়েই জীবনে এগোচ্ছি। এখন মনে হয়, ভগবান যা করেন, ভালর জন্যই করেন।
৮। টেলিপাড়ায় নিজের সম্পর্কে খারাপ কথা শুনছেন?
অভিষেক: ( হেসে) কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগোঁ কা কাম হ্যাঁয় কহেনা।
৯। বিচ্ছেদের পর পর এ সব নিয়ে কথা বলতে চাইতেন না। এখন রাজি হলেন কেন?
অভিষেক: মানুষ পুরো ব্যাপারটা না জেনে এক দিকে সমস্ত সহানুভূতি ঢেলে দেয়। এটা বড্ড অবাক করে দেয়। অন্য জন মুখ খোলে না বলে তাকে খলনায়ক বানিয়ে তোলে। আমি ভেবেছিলাম, সবটা সামলে নেব ঠিক। কিন্তু উল্টো দিক থেকে বিন্দুমাত্র সমর্থন না পেয়ে বুঝলাম যে, এ বার বলার সময় এসে গিয়েছে। সকলেই ভাবে, সম্পর্কে বিচ্ছেদ হলে ছেলেটাই খারাপ। আসলে আমার দোষ বলুন বা গুণ, আমি কখনও সম্পর্ক লুকিয়ে রাখি না। আমার সহানুভূতির দরকার নেই। অনেক নেতিবাচকতা নিয়েও আমি সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু এ ভাবে সারা জীবন থাকাটা দু’জনের পক্ষেই হত না।
১০। কর্মক্ষেত্রে প্রেম-বিচ্ছেদের কুপ্রভাব পড়ে?
অভিষেক: না, কাজের জায়গায় সকলেই যথেষ্ট পেশাদার। তবে সব শেষে এটুকুই বলতে চাই যে দিয়া খুবই ভাল মেয়ে। ওর যাতে ভাল হয়, সেই প্রার্থনাই করব আমি।