টোটা রায়চৌধুরী।
আরও একটা বছর বাড়ল টোটা রায়চৌধুরীর। আরও এক ধাপ এগোলেন ফেলুদা, রোহিত সেন। কাছের-দূরের কিছু মানুষের কৌতূহল, আমার বয়স নিয়ে? পায়ে পায়ে মধ্য চল্লিশে পৌঁছে গেলাম! জেনে চোখ কপালে তুলবেন না। কথা দিচ্ছি, রোহিত সেনের বয়স আর বাড়বে না। সংখ্যা যত খুশি এগোক। আমি মনে মনে চির নবীন। তরতাজা যুবক। তা বলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পাকা চুল নজরে এলে ঢাকবও না। যুগ বদলে গিয়েছে। যা স্বাভাবিক সেটাই এখন সবাই দেখতে চায়। খোলা মনে গ্রহণ করে। আমার মতে, সাদা চুলে রোহিত সেনের চেয়েও অভিনেতা টোটা আরও বেশি ঝকঝকে! এই সৌন্দর্য জ্ঞানের, অভিজ্ঞতার।
আজ আমার সকাল আর পাঁচটা সকালের থেকে সত্যিই অন্য রকম। দক্ষিণেশ্বরে দেবী ভবতারিণীর সামনে জোড় হাতে দাঁড়িয়ে সবার মঙ্গল কামনা করেছি। আমি কৃতজ্ঞ, দেবীর আশীর্বাদে অতিমারির মধ্যেও আমি সুস্থ। আমার ঘরোয়া জন্মদিন পালন হচ্ছে। আজকের দিনে এর থেকে বড় উপহার আর কী হতে পারে? আজ মায়ের হাতের পায়েস আছে। বাড়ির সবার সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া আছে। বিকেলে হাতেগোনা কাছের কিছু বন্ধুর আসার কথা আছে। বাড়িতেই কাটবে দিন। এখন আর বাইরে বেরিয়ে হইহই করতে মন চায় না।
সুস্থতার পাশাপাশি ভারী মজার একটা জিনিস জীবনের নতুন বছর আমায় উপহার দিয়েছে। ইদানীং রোহিত সেনের দৌলতে আমার বিয়ের সম্বন্ধ আসছে! শুনছি, শ্রীময়ী থেকে জুন আন্টি সবাই নাকি রোহিতকেই চাইছে। সামাজিক পাতায় মন্তব্য বিভাগে ‘ভালবাসি’ শব্দের বানভাসি। পাশাপাশি, ফেলুদা হিসেবেও দর্শকেরা খুশি মনে মেনে নিয়েছেন আমায়। আমি কৃতজ্ঞ সৃজিত মুখোপাধ্যায়, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। দুই দশকের অভিনয় জীবনে এত ভালবাসাও পাওনা ছিল?
এ বারের জন্মদিনে আরও একটি বিষয় লক্ষ করলাম। টোটা রায়চৌধুরী অনেক শান্ত হয়ে গিয়েছে! তার অভাব-অভিযোগের ঝুলিটাও যেন অনেকটা ফাঁকা। কোনও বিষয় নিয়েই আর তার প্রতিবাদ, অনুযোগ নেই। টোটা কি তা হলে বুড়ো হয়ে যাচ্ছে? একেবারেই নয়। শুরুতেই বলেছি, টোটা অভিজ্ঞ হচ্ছে। এটা তারই ছাপ। আমার থেকে অনেক বেশি প্রতিভাবান অভিনেতা জ্বলে উঠে নিভে গিয়েছেন। নিজের চোখে দেখেছি। আমি কিন্তু নিজের মতো করে বর্তমান। এখন মনে হয়, বাধা-বিঘ্ন থাক জীবনে। আগামী দিনেও টোটা রায়চৌধুরীকে তা হলে সবাই মনে রাখবে।