অক্ষয় কুমার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
‘মহাগুরু’র পর ‘খিলাড়ি’। রবিবার কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশে থাকছেন অক্ষয় কুমার। বলিউডের ‘খিলাড়ি’ সিরিজের একচ্ছত্র অধিপতি যে মোদীর সভায় থাকছেন, তা শনিবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছেন বিজেপি-তে যোগ দেওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। শনিবারের রাজ্য রাজনীতি আপাতত এই তারকা সমাচারেই সরগরম। ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তী শনিবার রাতেই পৌঁছোচ্ছেন কলকাতায়। রবিবার আসছেন অক্ষয়ও। রুদ্রনীলের আরও দাবি, বাংলার আরও তারকা থাকবেন মোদীর মঞ্চে। তবে সবই সময়ে প্রমাণসাপেক্ষ। কারণ, জল্পনায় অনেকের নাম থাকলেও অনেক সময়েই দেখা গিয়েছে, তা বাস্তবের সঙ্গে মিলছে না। অনেক তারকা কথা দিয়েও পিছিয়ে যান। রুদ্রনীল অবশ্য বলেন, ‘‘ব্রিগ্রেডে অক্ষয় কুমার তো থাকছেনই। তা ছাড়াও বাংলার বড় স্টাররা থাকবেন। যাঁদের আগে দেখা যায়নি।’’ একইসঙ্গে রুদ্র বলেন, ‘‘ এর বেশি এখন বলা বারণ।’’
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে অক্ষয় কুমারের ঘনিষ্ঠতার ইতিহাস দীর্ঘ। তাঁদের সুসম্পর্কের কথাও সকলের জানা। ২০১৭-য় অক্ষয়ের ছবি ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’ প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ্ব ভারত অভিযান’-এর প্রচারমুখ হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশে ছবিটিকে ‘করমুক্ত’ ঘোষণা করেছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। একাধিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর হয়ে মুখ খুলেছেন এই বলিউড তারকা। ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীর সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন অক্ষয়। সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে অবশ্য বিরোধীদের তিক্ত আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল এই বলিউড সুপারস্টারকে। কারণ, বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, অক্ষয় প্রধানমন্ত্রীকে সমস্ত ‘ছেলেভোলানো’ এবং ‘বোকা বোকা’ প্রশ্ন করেছিলেন। যার প্রকৃষ্টতম উদাহরণ ছিল, মোদী আম কী ভাবে খান। খোসা ছাড়িয়ে? নাকি না ছাড়িয়ে? ওই সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের মান নিয়ে অবশ্য অক্ষয় কোনও সমালোচনার তোয়াক্কা করেননি। তাঁকে ‘ভক্ত’ বলে নেটাগরিকরা বিদ্রূপ করেছিলেন। কিন্তু অক্ষয় কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। ভক্তিটি বজায় রেখেছেন।
বস্তুত, ওই সাক্ষাৎকারেই মোদী স্বয়ং রসিকতা করে বলেছিলেন, অক্ষয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকলেও তিনি এড়িয়ে চলেন তাঁর স্ত্রী টুইঙ্কল খন্নাকে। কারণ, না বললেও সারা দেশ জানে, টুইঙ্কল তাঁর সাপ্তাহিক কলামে প্রায়শই মোদীর সরকারের সমালোচনা করে থাকেন। মোদী অবশ্য সেই সাক্ষাৎকারে টুইঙ্কলের প্রশংসাও করেছিলেন। কিন্তু যা চোখ এড়ায়নি, তা হল দু’জনের সম্পর্কের রসায়ন। সেই সুবাদেই অক্ষয়কে ব্রিগেডের সমাবেশে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে। মিঠুন ব্রিগেডে আসবেন বলে জল্পনা চাউর হলেও অক্ষয় কিন্তু ‘চমক’। এর আগে বাংলার কোনও রাজনৈতিক সভায় বলিউডের এই সুপাস্টারকে দেখা গিয়েছে বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। বস্তুত, মূলত তৃণমূলের সভা-সমাবেশেই তারকাদের ভিড় দেখা যায়। এ রাজ্যে বিজেপি-র সভা সমাবেশে এর আগে তেমন তারকা সমাবশ চোখে পড়েনি। অক্ষয়ের মতো তারকা তো দূরস্থান। সে অর্থে ব্রিগেড মাঠের সমাবেশই বাংলার রাজনীতিতে অক্ষয়ের প্রত্যক্ষ যোগদানের ফলক হয়ে থাকবে। থাকবে, যদি তিনি আসেন। রুদ্রনীল যা-ই দাবি করুন, রাজ্য বিজেপি-র পোড়খাওয়া নেতারা শনিবার রাতেও স্বগতোক্তি করছেন, ‘‘না আঁচালে বিশ্বাস নেই!’’