Lok Sabha Election 2024

প্রার্থী কুনারই নাকি নয়া মুখ, জল্পনা বিজেপির অন্দরে

তৃণমূলের বিরবাহা সরেন টুডু পেয়েছিলেন ৪৩.৭ শতাংশ ভোট। ফলে বিজেপির জয়ের ব্যবধান ছিল সামান্যই।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩৬
কুনার হেমব্রম।

কুনার হেমব্রম।

জেতা আসনে থাকুন কুনার হেমব্রম। এমনই সওয়াল শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে পরবর্তী প্রার্থী কি তাহলে বিদায়ী সাংসদ কুনার? শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে জেলা বিজেপির একাংশের দাবি, কুনার অসুস্থ, তাই ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসন ধরে রাখতে বিকল্প একাধিক যোগ্য প্রার্থী বেছে রাখাও জরুরি। সেই কারণে একাধিক প্রার্থীর নাম বাছাও শুরু হয়েছে। সেই দৌড়ে রয়েছেন জঙ্গলমহলের এক প্রাক্তন সাংসদ, একাধিক চিকিৎসক, সাহিত্যিক থেকে বিজেপির প্রবীণ নেতাও। যদিও রবিবার নয়াদিল্লিতে দলীয় কর্মসূচিস্থল থেকে ফোনে কুনার বলেন, ‘‘আমি নাকি ভীষণ অসুস্থ বলে রটানো হচ্ছে। এই তো দিল্লিতে দলের রাষ্ট্রীয় অধিবেশনে আছি।’’ তারপরই কুনার জুড়ছেন, ‘‘প্রার্থী বাছবে দল। কে প্রার্থী হবেন সেটা শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করবেন।’’

Advertisement

ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনটি দীর্ঘ কয়েক দশক বামেদের দখলে ছিল। ২০১৪ সালে প্রথমবার আসনটি দখল করে তৃণমূল। তৃণমূলের সাংসদ হন উমা সরেন। ২০১৯ সালে বিরবাহা সরেন টুডুকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কুনার হেমব্রম প্রায় ১১ হাজার ভোটে বিরবাহা সরেন টুডুকে হারিয়ে জয়ী হন। তৃণমূল শিবিরের ব্যাখ্যা, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম সংসদীয় এলাকার ৩০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল গেরুয়া শিবির। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল গত লোকসভা ভোটের ফলাফলে। তবে কুনার ৪৪.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। আর তৃণমূলের বিরবাহা সরেন টুডু পেয়েছিলেন ৪৩.৭ শতাংশ ভোট। ফলে বিজেপির জয়ের ব্যবধান ছিল সামান্যই। ইতিমধ্যে সুবর্ণরেখা ও কংসাবতী দিয়ে গড়িয়ে গিয়েছে বহু জল। গত বিধানসভা, পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে তৃণমূল। গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রামে একটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ডও দখল করতে পারেনি গোরুয়া শিবির। ফলে, এবার বিজেপির পক্ষে আসন ধরে রাখাটা মোটেই সহজ নয় বলে দাবি করছে তৃণমূল শিবির।

বিজেপি সূত্রের সাফাই, তৃণমূলের আগের সাংসদের খরচ করতে না পারা টাকা কুনার সাংসদ হওয়ার পর খরচ করেছেন। বিতর্ক এড়িয়ে কুনার বলছেন, ‘‘আমি সাংসদ হওয়ার পর সদ্য প্রাক্তন সাংসদের তহবিলে খরচ না হওয়া ৫ কোটি টাকা ছিল। এ ছাড়া আমার কার্যকালে এখনও পর্যন্ত আরও ১৭ কোটি টাকা পেয়েছি। মোট ২২ কোটি টাকা খরচ করে সংসদীয় এলাকার কমপক্ষে ৪৫টি স্কুলের পরিকাঠামোর জন্য বরাদ্দ দিয়েছি। একাধিক গ্রামীণ এলাকায় বেশ কিছু পানীয় জলের প্রকল্প এবং জঙ্গল লাগোয়া গ্রামীণ এলাকায় সৌর পথবাতির জন্য বরাদ্দ দিয়েছি।’’ ২০১৯ সালে ভোটে জেতার পর শিক্ষালয়ে পরিকাঠামো উন্নয়ন, পানীয় জলের সমস্যা মেটানো ও হাতির গতিবিধির এলাকায় পথবাতির আশ্বাস দিয়েছিলেন কুনার। বিজেপির এক প্রবীণ নেতা বলছেন, ‘‘কুনারবাবু এত বরাদ্দ দিয়েছেন, অথচ দলীয়ভাবে সেটা প্রচারেই আসেনি।’’

সূত্রের খবর, জেলা বিজেপির রাজনীতি থেকে নিজেকে কিছুটা সরিয়েই রেখেছেন কুনার। বর্তমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তার সখ্যতার নজিরও তেমন নেই। তবে সূত্রের খবর, শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরে রয়েছেন কুনার। তবে দলের গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে কুনার প্রার্থী হতে চাইবেন কি-না সেটাই এখন লাখটাকার প্রশ্ন! বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা পর্যবেক্ষক সুজিত অগস্তি বলছেন, ‘‘কে প্রার্থী হবেন সেটা চূড়ান্ত করবে দল। আমাদের দলে আগাম জল্পনার জায়গা নেই। শনি ও রবিবার দিল্লিতে দু’দিনের দলীয় রাষ্ট্রীয় অধিবেশন হয়েছে। জঙ্গলমহলের আসনগুলি ধরে রাখতে আমরা পুরোদমে মাঠে নামছি।’’ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতোর কটাক্ষ, ‘‘সংগঠনহীন মাঠে বিজেপি গোল দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এবার বিপুল মানুষের সমর্থনে তৃণমূলের প্রার্থীই জয়ী হবেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement