বাঁ দিক থেকে রোহিণী আচার্য, লালু প্রসাদ যাদব এবং মিসা ভারতী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে বিহারের ২২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল আরজেডি। দলের প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান লালুপ্রসাদের দুই কন্যার পাশাপাশি তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম মধ্য বিহারের বাহুবলী নেতা বিজয়কুমার (মুন্না) শুক্লের।
দু’বছর আগে অসুস্থ লালুপ্রসাদ কিডনি দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন তাঁর কন্যা রোহিণী আচার্য। তাঁকে এ বার সারণ লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে। এ বারই প্রথম নির্বাচনী ময়দানে পা রাখলেন রোহিণী। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে সারণ কেন্দ্রে জিতেছিলেন লালু। কিন্তু গত দু’বার ওই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডি।
অন্য দিকে, লালুর আর এক কন্যা মিসা ভারতী এ বারও তাঁর পুরনো কেন্দ্র পাটলিপুত্রে প্রার্থী। ২০১৪ এবং ২০১৯-এর ভোটে পাটলিপুত্র থেকেই ভোটে লড়েছিলেন মিসা। কিন্তু দু’বারই লালুর একদা আস্থাভাজন আরজেডি নেতা তথা বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বী রামকৃপাল যাদবের কাছে হেরে যান তিনি। অন্য দিকে, আইএএস অফিসার জি কৃষ্ণাইয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত মুন্নাকে ‘হ্যারিকেন’ চিহ্নে বৈশালীতে প্রার্থী করেছেন লালু।
এ ছাড়া সীমাঞ্চলের ‘বাহুবলী’ নেতা অবধেশ মণ্ডলের স্ত্রী বিমা ভারতীকে প্রার্থী করা হয়েছে পূর্ণিয়ায়। জেডিইউ বিধায়ক বিমা গত মাসে আরজেডিতে যোগ দিয়েছিলেন। কংগ্রেসে যোগ দেওয়া প্রাক্তন সাংসদ পাপ্পু যাদব পূর্ণিয়ার দাবিদার হলেও লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবের অনড় মনোভাবের কারণে ওই আসন চেয়েও পায়নি রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গের দল। বাধ্য হয়ে কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ রঞ্জিতা রঞ্জনের স্বামী পাপ্পু নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়তে নেমেছেন।
বিহারের আর এক বাহুবলী নেতা অশোক মাহাত ১৭ বছর জেলবন্দি থাকার পর ২০২৩ সালে মুক্তি পান। অশোক এ বার আরজেডির প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। এর পর বিয়েও করেন সম্প্রতি। সম্প্রতি স্ত্রী অনিতা কুমারীকে প্রার্থী করানোর জন্য লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অনিতাকে মুঙ্গের থেকে প্রার্থী করেছে আরজেডি। ২২ জন প্রার্থীর মধ্যে আট জনই লালুর মতো যাদব জনগোষ্ঠীর। ওবিসি কুশওয়াহা তিন এবং ধানুক এক জন। অতি অনগ্রসর (ইবিসি) এবং মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যাও দুই। এ ছাড়া তিন তফসিলি জাতির তিন এবং এক বৈশ্য প্রার্থীও রয়েছেন আরজেডির তালিকায়।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে বিহারের ‘মহাগঠবন্ধনে’র রফাসূত্র অনুযায়ী এ বার সে রাজ্যের ৪০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে আরজেডি ২৬, কংগ্রেস ৯, সিপিআইএমএল (লিবারেশন) ৩, সিপিএম ১, সিপিআই ১ আসনে লড়বে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে আরজেডির সঙ্গে সমঝোতা করে ন’টি লোকসভা আসনে লড়েছিল কংগ্রেস। জিতেছিল শুধু কিসানগঞ্জে। লালুপ্রসাদ-তেজস্বীর আরজেডি ১৯টিতে লড়ে একটিতেও জিততে পারেনি। অন্য তিনটি আঞ্চলিক দলকে আরজেডি ১১টি আসন ছাড়লে তাদের ঝুলিও ছিল শূন্য। বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতেই জিতেছিল বিজেপি-জেডিইউ-এলজেপির জোট।