Dipankar Bhattacharya

বিজেপিকে হারান, জেতান যাকে খুশি, বিমানের দাবি খারিজ করে বাংলায় দলের অবস্থান জানাল লিবারেশন

সারা দেশে সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে লড়ছে লিবারেশন। বিহারে তারা বিরোধী জোটের শরিক হিসেবে লড়ছে তিনটি আসনে। ঝাড়খণ্ড, বাংলা, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে তারা লড়ছে একটি করে আসনে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৮
Primary task now is to defeat the BJP, CPIML Liberation said at a press conference to release the manifesto

লিবারেশন দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন লড়ছে একটি আসনে। সেটি বর্ধমান পূর্ব। ওই একটি আসনেই লিবারেশন কেবল নির্বাচকমণ্ডলীকে বলবে তাদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা। কিন্তু বাকি ৪১টি কেন্দ্রে লিবারেশনের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের সীমিত সামর্থ্য অনুযায়ী প্রচার করবেন। তাঁরা প্রচার করে বলবেন, বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার কথা। কিন্তু কাকে ভোট দেবেন মানুষ, তা জনতার বিবেচনার উপরেই ছেড়ে দিতে চান লিবারেশন নেতৃত্ব। মুখে না বললেও এই রাজনৈতিক অবস্থানে ফের এক বার ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে একটি অংশের স্লোগানের সঙ্গে মিল পাচ্ছেন অনেকে। তা হল—‘নো ভোট টু বিজেপি’।

Advertisement

মঙ্গলবার মৌলালিতে লিবারেশন রাজ্য কমিটির দফতরে লোকসভা ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপিকে হারানোটাই এখন প্রাথমিক রাজনৈতিক কাজ বলে আমরা মনে করি। কারণ, তৃতীয় বার যদি নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় চলে আসে, তা হলে গণতন্ত্রের ‘গ’, সংবিধানের ‘স’ কিছুই আর অবশিষ্ট থাকবে না।’’

সপ্তাহ দেড়েক আগে বামফ্রন্টের এক দফা প্রার্থিতালিকা ঘোষণার সময়ে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু দাবি করেছিলেন, লিবারেশন একটি বা দু’টি আসনে প্রার্থী দেবে। বাকি আসনে তারা বামপন্থী প্রার্থীদের সমর্থন করবে। কিন্তু দীপঙ্কর মঙ্গলবার বলেন, ‘‘বিমানদা কী বলেছেন জানি না। তবে আমরা বলেছি বিজেপিকে হারাও। কাউকে ভোট দেওয়ার কথা বলছি না।’’

কেন বলছেন না? এটা কি ভাবের ঘরে চুরি করা নয়? দীপঙ্কর তাঁর দলের অবস্থান জানাতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমরা সর্বভারতীয় জোট ‘ইন্ডিয়া’য় রয়েছি। সেখানে তৃণণূল, সিপিএম, সিপিআই, কংগ্রেস সবাই রয়েছে। কিন্তু ইন্ডিয়ার দলগুলি এখানে নির্বাচনী ঐক্য করতে পারেনি। ফলে আমরা জোটের এক পক্ষকে ভোট দিতে বললে আমাদের দ্বিচারিতা প্রকাশ পাবে।’’ বাংলায় সিপিএম এবং বহুলাংশে প্রদেশ কংগ্রেসও এই কথা বলার চেষ্টা করছে যে, বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। কিন্তু লিবারেশন একেবারেই সেই বক্তব্যের সঙ্গে এক মত নয় বলে জানিয়েছেন দীপঙ্কর। লিবারেশন সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘‘বিজেপিকে হারাতে গিয়ে মানুষ যেখানে যাকে উপযুক্ত মনে করবে তাকে জেতাক। তাদের কোনও অগ্রাধিকার নেই।’’ তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, বাংলার ৪২টি কেন্দ্রে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস—যে-ই জিতুক, তাঁরা সেই জয়কে স্বাগত জানাবেন। শুধু বিজেপির হারকে সুনিশ্চিত করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৯ সালে বিজেপি বাংলায় যা ফল করেছিল, ২০২১-এ তা ধাক্কা খেয়েছিল। আমরা চাই ২০২৪-এ বিজেপি আরও বড় ধাক্কা খাক।’’

সারা দেশে সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে লড়ছে লিবারেশন। বিহারে তারা বিরোধী জোটের শরিক হিসেবে লড়ছে তিনটি আসনে। ঝাড়খণ্ড, বাংলা, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে তারা লড়ছে একটি করে আসনে। তা ছাড়া ওড়িশা ও অন্ধ্রের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি করে আসনে লড়ছে বিনোদ মিশ্রের হাতে গড়া দল। বাংলায় বর্ধমান পূর্ব আসনে লিবারেশন প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সজল দে।

আরও পড়ুন
Advertisement