PM Narendra Modi

দু’টি পর্বে ফল ভাল হয়নি, তাই তৃতীয় দফার আগে রাম আবেগ উস্কে দিলেন মোদী, দাবি বিরোধীদের

গোড়া থেকেই রামমন্দির নির্মাণ ও রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে হিন্দু ভাবাবেগের ঝড় তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৯:১৩
PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

লোকসভার নির্বাচনের প্রথম দু’টি পর্বে প্রত্যাশিত ফল হয়নি। বিরোধীদের মতে, সে কারণেই তৃতীয় দফা ভোটের আগে রাম আবেগকে উস্কে দিতে তড়িঘড়ি অযোধ্যা ছুটে যেতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ, অযোধ্যা যে ফৈজাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেখানে ভোট আগামী ২০ মে। বার্তা স্পষ্ট, রামমন্দিরে রামলালার মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরে প্রথম বার অযোধ্যা সফরে আসা প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যই হল তৃতীয় দফা নির্বাচনের আগে হিন্দু ভাবাবেগকে উস্কে দিয়ে অন্যত্র গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করা।

Advertisement

গোড়া থেকেই রামমন্দির নির্মাণ ও রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে হিন্দু ভাবাবেগের ঝড় তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু জানুয়ারি মাসে মন্দির উদ্বোধনের সময় মন্দির ঘিরে যে আবেগ লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তা গত তিন-চার মাসে অনেকটাই অস্তমিত। কমে এসেছে দর্শনার্থীদের ভিড়ও। বিজেপি শিবিরও মানছে, শুরুর দিকে যেখানে ফি দিন দু’লক্ষ লোক মন্দির দর্শনে আসতেন, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে কুড়ি হাজারে! সংখ্যাই বলে দিচ্ছে, যে আবেগকে সঙ্গী করে হিন্দু মেরুকরণের লক্ষ্য গেরুয়া শিবির নিয়েছিল, তা প্রত্যাশিত স্তরে পৌঁছয়নি। পরোক্ষে যার প্রভাব পড়েছে প্রথম দুই পর্বের ভোটে। ভোটকুশলীদের মতে, বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে প্রথম দু’টি পর্বে যে ষোলোটি আসনে ভোট হয়েছে, তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি মোদীর দল। এই আবহে আগামী মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের ১০টি আসনে নির্বাচন। মূলত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় দু’টি পর্বে ভোট শেষ হওয়ার পরে অবশেষে যোগীরাজ্যে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় ভোট শুরু হতে যাচ্ছে। যা বিজেপির গড় বলে পরিচিত। এ যাত্রায় উত্তরপ্রদেশে দল যদি ভাল না করে, সে ক্ষেত্রে ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে বিজেপি।

তাই আর দেরি না করে তৃতীয় দফার প্রচার শেষ হওয়ার সন্ধ্যায় অযোধ্যায় পৌঁছে যান মোদী। অযোধ্যায় নেমেই রামলালা দর্শন এবং রামলালার পুজা দেন তিনি। এর পর অযোধ্যার রাস্তায় প্রায় দু’কিলোমিটার লম্বা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিজেপি নেতৃত্বের বিশ্লেষণ, প্রথম দু’টি পর্বের ভোট থেকে স্পষ্ট, দলীয় কর্মীদের একাংশ কার্যত বসে গিয়েছেন। তাঁদের চাঙ্গা করতে প্রথম দফা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি নেতৃত্ব প্রচারে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের রাজনীতির উপরে জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ যে লাভ হয়েছে, তা মনে করছে না দল। সেই কারণে বিজেপির অন্যতম প্রচারের অস্ত্র রামেই ভরসা রাখার কৌশল নিয়েছেন মোদী। কংগ্রেসের এক নেতার মতে, ‘‘বিজেপি যে কতটা মরিয়া, তা এ থেকেই বোঝা যায়। সাধারণত ভোটের শেষবেলায় ভোটমুখী কেন্দ্রে প্রচার করেন তারকা প্রচারকেরা। সেখানে দু’সপ্তাহ পরে ভোট, এমন একটি স্থানকে বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শেষবেলায় হিন্দুত্বের হাওয়া তুলে কোনও ভাবে লড়াইতে টিকে থাকতে চাইছে গেরুয়া শিবির।’’

আরও পড়ুন
Advertisement