অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কোনও কর্মিসভা বা বড় সমাবেশ নয়, সন্দেশখালিতে ব্রিগেডের ‘প্রস্তুতি সমাবেশ’ করবে তৃণমূল। রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এমনই পরিকল্পনা নিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে ঠিক হয়েছিল, ধাপে ধাপে জেলা তৃণমূলের নেতারা সন্দেশখালি গিয়ে সেখানকার মানুষ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে আসবেন। ৩ মার্চ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলে সন্দেশখালিতে একটি বড় সমাবেশ করা হবে। সেই সভা থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি সন্দেশখালির সাধারণ মানুষকেও ‘বার্তা’ দেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছিল। কিন্তু রবিবারের পর সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আপাতত ৩ মার্চ, রবিবার সেখানে ব্রিগেডের ‘প্রস্তুতি সমাবেশ’ করবে তৃণমূল। কারণ: অভিষেকের নির্দেশ। বসিরহাট জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম সোমবার বলেন, ‘‘আপাতত কোনও সভা নয়। যে হেতু সামনেই দলের ব্রিগেড সমাবেশ, তাই সেই বিরাট সমাবেশ সফল করতে আমরা সন্দেশখালিতে ৩ মার্চ একটি প্রস্তুতি সভা করব।’’ তবে কেন এমন সিদ্ধান্ত, সে প্রসঙ্গে কোনও মতামত প্রকাশ করতে চাননি তিনি।
রবিবার তাঁর লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের অন্তর্গত মহেশতলায় একটি উড়ালপুল এবং পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সন্দেশখালিতে তৃণমবল একটি সভা করবে বলেছিল। এখন ব্রিগেডে বড় সমাবেশ করছে। সে ক্ষেত্রে সন্দেশখালির সভা কবে হচ্ছে? জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘যখন যাওয়ার প্রয়োজন হবে নিশ্চয়ই যাব। আপাতত ওখানে পরিস্থিতি ঠিক নেই। এমনিতেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সভা করা যাবে না। তার পরে যে হেতু ১০ তারিখ ব্রিগেড, তাই তার প্রস্তুতিও থাকবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, ‘‘আমরা ওখানে অকারণে গিয়ে প্ররোচনা দিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে তুলতে চাই না। এটা বিজেপি, সিপিএম করে।’’ অভিষেকের ওই মন্তব্যের পরেই যে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেদের পরিকল্পনা বদল করেছেন, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সভার ‘চরিত্র’ বদলে যাওয়ায়।
রবিবার প্রথমে সমাজমাধ্যমের পাতায় তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের ঘোষণা করেন ‘তৃণমূলের সেনাপতি’। আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’ হবে বলে জানান তিনি। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে আপাতত দলের এই সমাবেশ সফল করাই তৃণমূল নেতৃত্বের লক্ষ্য। তাই সন্দেশখালিতে সভার কর্মসূচিকে ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি সমাবেশে বদলে ফেলা হয়েছে। বসিরহাটের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আপাতত সন্দেশখালি পরিস্থিতির ওপর জেলা নেতৃত্ব নজর রাখবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও এখানে এসে ঘুরে যাবেন। ব্রিগেড সমাবেশ হয়ে গেলে সন্দেশখালিতে যে সভা করার কথা হয়েছিল, সেই সভা হবে। শীর্ষ নেতৃত্ব ইঙ্গিত দিলেই সভা আয়োজনের প্রস্তুতি নেবেন জেলা নেতৃত্ব।’’ ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক নবার সন্দেশখালি ঘুরে এসেছেন দুই মন্ত্রী সুজিত বসু ও পার্থ ভৌমিক। আগামী কয়েক দিনও বেশ কয়েক জন ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা’ সন্দেশখালি যেতে পারেন বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর।