যাদবপুরের সাংসদ পদ ছাড়তে চান
অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সে কথা জানিয়ে এসেছেন তিনি। দিয়ে এসেছেন চিঠিও। মিমি
জানিয়েছেন, এখনও মমতা তাঁর ইস্তফার বিষয়ে সম্মতি জানাননি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলে তিনি লোকসভার স্পিকারের কাছে গিয়ে ইস্তফাপত্র দেবেন। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে মিমি
বুঝিয়েছেন, কেন তিনি সাংসদপদ ছাড়ছেন। কেনই বা তিনি রাজনীতিতে আর থাকতে চাইছেন
না। মিমি বলেন—
- ‘‘আমি বিশ্বাস
করি, রাজনীতি আমার জন্য নয়। কারণ, রাজনীতি করলে আমার মতো মানুষকে গালাগালি
দেওয়ার লাইসেন্স পেয়ে যায় লোকে। আমি জেনেশুনে জীবনে কারও কোনও ক্ষতি করিনি।’’
- ‘‘আমি রাজনীতিক
নই। কখনও রাজনীতিক হবও না। সব সময় আমি কর্মী হিসাবে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি।
আমি অন্য দলের কারও বিরুদ্ধেও কখনও খারাপ কথা বলিনি।’’
- ‘‘আমি লোকসভায়
কত দিন উপস্থিত থেকেছি, কিছু লোকের তাই নিয়ে মাথাব্যথা। যদি এক মাস দিল্লিতে থাকি, লোকে বলবে
সাংসদ দিল্লিতে থাকেন, এখানে কাজ করেন না। আবার এখানে থাকলে বলা হবে, সংসদে আমার উপস্থিতি
কম। আমাদের সব দিকের ভারসাম্য রেখে চলতে হয়।’’
- ‘‘আমি মানুষকে অনেক
পরিষেবা দিয়েছি। কোমর অবধি জলে নেমে ত্রাণ দিয়েছি। আমপানে মানুষের পাশে
দাঁড়িয়েছি। কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। নিজের ফান্ড থেকে অনেক কাজ করেছি। এগুলো
প্রচার করিনি।’’
- ‘‘আমি রাজনীতি
বুঝি না। নিজের কাজ প্রচার করতে পারি না। রাজনীতিতে এলে সব সময় চালের প্যাকেট ধরে
দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে হয়। আমি সেটা করতে পারিনি। এটাও আমার রাজনীতি ছাড়ার অন্যতম
কারণ।’’
- ‘‘সাংসদদের ফান্ড
কতটা ব্যবহার করা হয়েছে, তা দিয়ে কতটা কাজ করা হয়েছে, নির্দিষ্ট পোর্টালে গিয়ে সেই
তথ্য দেখুন। এক নম্বরে কার নাম রয়েছে, এক বার দেখে নিন। এটা আমার গর্ব।’’
- ‘‘আমি যত বার
সংসদে গিয়েছি, গড়িয়ার উড়ালপুল নিয়ে, চম্পাহাটি উড়ালপুল নিয়ে, সোনারপুরের
উড়ালপুল নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু রাজ্যের কথা তো ওঁরা শোনেন না। তাই মানুষ সেই
পরিষেবাও পাননি। সেটা তো মানুষ বুঝছেন না। তাঁরা ভাবছেন, সাংসদ পরিষেবা দিতে
পারেননি।’’
- ‘‘পরিষেবা দিতে
গিয়ে আমি যে বাধাগুলো পেয়েছি, দিদিকে জানিয়েছি। তিনি দ্রুত পদক্ষেপ করবেন। দলের
বিরুদ্ধে আমি কোনও দিন কোনও কথা বলিনি। দলনেত্রীর অনুমতি ছাড়া কোনও দিন সেটা করবও
না।’’
কেন স্পিকারের কাছে সরাসরি ইস্তফা
দিলেন না? মিমি তার উত্তরে বলেছেন, ‘‘যে দল আমাকে টিকিট দিয়েছিল, কাজের সুযোগ
দিয়েছিল, আগে সেই দলের নেত্রীকে জানানো দরকার। হঠাৎ করে আমি গিয়ে স্পিকারের হাতে
ইস্তফা দিয়ে দিতে পারি না।’’
মিমি জানিয়েছেন, ২০২২ সালেও এক বার তিনি সাংসদ পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন। সে বারও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে অনুমতি দেননি।