Lok Sabha Election 2024

গড় কি ধরে রাখতে পারবে তৃণমূল

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তাহের। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ আসনে তাঁকে প্রার্থী করে দল।

Advertisement
মফিদুল ইসলাম
নওদা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

একটা সময় নওদা বিধানসভাকে বলা হত কংগ্রেসের গড়। গত ২০০১ সালে ওই আসনে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে বিধায়ক হন আবু তাহের খান। ২০০৬, ২০১১, ২০১৬ সালের নির্বাচনেও কংগ্রেসের টিকিটে জয় পান তাহের। স্বভাবতই বহরমপুর লোকসভার অন্তর্গত নওদা বিধানসভা থেকে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল হত কংগ্রেসের। ভোটের ফলে এগিয়ে থাকতেন কংগ্রেস প্রার্থী।

Advertisement

এ বারও ছ'বারের জন্য ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী।

জেলা পরিষদের তৎকালীন কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন মধু কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর নওদায় তাসের ঘরের মতো ভাঙতে থাকে কংগ্রেস। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নওদা বিধানসভায় বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে ভাল ফল হয় তৃণমূলের। অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতিও দখল করে তৃণমূল। নওদা থেকে জিতেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন মোশারফ।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তাহের। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ আসনে তাঁকে প্রার্থী করে দল। ওই বছর লোকসভা নির্বাচনে নওদা বিধানসভায় ভাল ফল করে তৃণমূল। কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীর চেয়ে প্রায় তিন হাজার ভোটে এগিয়ে যান তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব সরকার। সেই বছরই বিধানসভা উপনির্বাচনে জয় পান তৃণমূল প্রার্থী সাহিনা মমতাজ খান। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এক লক্ষ ১৭ হাজার ৬৮৪ ভোট পান তিনি। ৪৩ হাজার ৫৩১ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেয় বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন মোশারফ। নওদা আসনে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩১ হাজার ৫৮৮ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে জায়গা পায় কংগ্রেস। দলের নির্দেশকে অমান্য করে সিপিএম নেতা শমীক মণ্ডল নির্দল প্রার্থী হিসেবে বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বামেদের ভোট ভাগ হয়ে ৪ হাজার ৩৯৫ ভোট পান তিনি।

গত ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তুলনামূলক ভাবে খারাপ ফল হয় তৃণমূলের। তিনটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে দু’টি আসনে তৃণমূল জিতলেও একটি আসনে জয় পান কংগ্রেস প্রার্থী। নওদা ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বেলডাঙা ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে নওদা বিধানসভা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর মোট ছ'টি গ্রাম পঞ্চায়েত একক ভাবে দখল করে তৃণমূল। পরে তৃণমূলে যোগদান করায় বিধানসভা এলাকার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বর্তমানে দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। চারটি জোটের দখলে রয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনে নওদা বিধানসভায় ভাল ফলের আশায় তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি। ব্লক তৃণমূল সভাপতি সফিউজ্জামান শেখ বলেন, “অধিকাংশ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি আমাদের দখলে। ঘরে ঘরে মানুষ রাজ্য সরকারের উন্নয়নের সুবিধা পাচ্ছেন। গত বিধানসভার চেয়েও আমরা নওদা থেকে অনেক বেশি ভোটে লিড দেব।” তবে নওদায় তৃণমূলের কাঁটা দলের কোন্দল। স্থানীয় বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খান ও তাঁর অনুগামীদের সক্রিয় ভাবে ভোট ময়দানে দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি দলের অন্দরেই। সাহিনা বলেন, ‘‘ব্লকে দলের কখন কী কর্মসূচি আমাকে কিছুই জানানো হয় না। আমি নিজের মতো করে ভোট প্রচার করছি। বেলডাঙা ১ ব্লকের চার অঞ্চলেও প্রচার করছি।” মোশারফ বলেন, “তৃণমূলের বহিরাগত প্রার্থীকে নওদা নয় গোটা লোকসভার মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে। নওদার হারানো মাটি কংগ্রেস ফিরে পাবে। এখান থেকে দাদা(অধীর) প্রচুর ভোটে এগিয়ে থাকবে।” বিজেপি নেতা শাখারভ সরকার বলেন, “যে যা-ই বলুক, তিনটি লোকসভাতেই আমাদের ভাল ফল হবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement