Lok Sabha Election 2024 Result

বনতলে তলিয়ে গেল বড় ফুল

বাম-কংগ্রেস জোটের সিপিএম প্রার্থী সোনামণি টুডু গতবারের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেননি। অন্য দিকে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের দুই প্রার্থী তৃণমূল ও বিজেপি উভয় শিবিরেরই ভোট কেটেছেন।

Advertisement
কিংশুক গুপ্ত
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ০৬:৩৫
জয়ের আনন্দে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ এলাকায়।

জয়ের আনন্দে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ এলাকায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

মঙ্গলবার ইভিএম খোলার আগে ইস্তক ঝাড়গ্রাম জুড়ে প্রশ্ন ছিল বড়, নাকি ছোট কোন ফুল ফুটবে! কিন্তু ঝাড়গ্রাম লোকসভা ধরে রাখতে পরল না বিজেপি। দিনের শেষে বনতলে ডুবল পদ্ম।

Advertisement

এ দিন গণনা শুরু হতেই প্রতিটি রাউন্ডে পদ্মপ্রার্থী প্রণত টুডুর থেকে তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেনের ব্যবধানের হার লাফিয়ে বাড়তে থাকে। দিনের শেষে প্রণতকে প্রায় ১,৭৪,০৪৮ ভোটে ধরাশায়ী করে জিতেছেন জোড়াফুলের প্রার্থী কালীপদ। কিন্তু কেন ধরাশায়ী হল বিজেপি?রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অনুমান, বিজেপি শেষ বেলায় প্রধানমন্ত্রীর সভা করে প্রচারের ঝড় তোলার চেষ্টা করলেও রাজ্য সরকারের পরিষেবা প্রাপ্তির বিনিময়ের ভোট দিয়েছেন সিংহভাগ ভোটার। ঝাড়দ্রাম লোকসভা এলাকার ৩ লাখের বেশি লক্ষ্মীর ভান্ডারের উপভোক্তা ভোটের ৯০ শতাংশ ভোট তৃণমূলের ঘরে গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার সতর্ক করেছিলেন, বিজেপি এলে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প বন্ধ করে দেবে। সেই প্রচারও কাজে দিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। পক্ষান্তরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অন্নপূর্ণা যোজনায় মহিলাদের মাসে ৩ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দাগ কাটেনি।

বাম-কংগ্রেস জোটের সিপিএম প্রার্থী সোনামণি টুডু গতবারের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেননি। অন্য দিকে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের দুই প্রার্থী তৃণমূল ও বিজেপি উভয় শিবিরেরই ভোট কেটেছেন। তবে ওই দুই প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সঙ্গে প্রণতের প্রাপ্ত ভোটের যোগফলও কালীপদের প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় অনেকটাই কম। বিজেপির পুরনো কর্মীদের ব্যাখ্যা, প্রথমত দলে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, দ্বিতীয়ত ২০১৯-এ ঝাড়গ্রাম লোকসভা জেতানোর ক্ষেত্রে যাঁরা ভূমিকা নিয়েছিলেন, সেই সব নেতা-কর্মীদের ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল। শেষ বেলায় বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুখময় শতপথী মাঠে নেমেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সংগঠনের শক্তিতেও পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির চিকিৎসক প্রণত টুডুকে প্রার্থী করলেও দলের তরফে প্রতিটি বুথ ধরে সে ভাবে প্রচারে জোর দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া, গত মার্চে ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে কালীপদ সরেনের নাম ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। অন্য দিকে, সরকারি চিকিৎসকের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে রিলিজ় অর্ডার হাতে পেতে বিজেপি প্রার্থী প্রণতকে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল। ফলে কালীপদ প্রচারে অনেকটা আগাম সময় ও বাড়তি সুবিধা পেয়েছিলেন। তাঁর দেওয়াল লিখনও হয়েছিল অনেক বেশি। তা ছাড়া, গত বার বামেদের ভোট গিয়েছিল বিজেপির ঘরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement