Lok Sabha Election 2024

ভিডিয়ো-কাণ্ডের পরে মুখ লুকিয়েছেন গঙ্গাধর-শান্তি

বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছে, গঙ্গাধর ২০২২ সাল থেকে সন্দেশখালি ২ ব্লকের সন্দেশখালি, মণিপুর ও কোরাকাটি পঞ্চায়েতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি।

Advertisement
নবেন্দু ঘোষ 
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৮:২৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

গঙ্গাধর কয়াল, সন্দেশখালিতে বিজেপির এই মণ্ডল সভাপতির নাম এখন একটি ভাইরাল ভিডিয়োর দৌলতে রাজ্য-রাজনীতিতে চর্চার বিষয় হয়েছে। সন্দেশখালিতে গণধর্ষণের অভিযোগ ভুয়ো— এমনটাই বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে (সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া স্টিং ভিডিয়োটি সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার)।

Advertisement

সন্দেশখালির ৩ নম্বর দ্বারিরজাঙ্গল গ্রামে গঙ্গাধরের বাড়ি। তাঁকে শনিবার বিকেলের পর থেকে আর এলাকায় দেখা যায়নি বলে স্থানীয় মানুষ জানালেন। রবিবার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, স্ত্রী, আশা কর্মী বিমলা ঘরে একা বসে। বললেন, ‘‘স্বামী কোথায় জানি না। ওঁকে ফাঁসিয়েছে তৃণমূল।’’

বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছে, গঙ্গাধর ২০২২ সাল থেকে সন্দেশখালি ২ ব্লকের সন্দেশখালি, মণিপুর ও কোরাকাটি পঞ্চায়েতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। কয়াল পরিবার দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপি কট্টর সমর্থক। বাড়ির পুরুষেরা আরএসএস-এর সদস্য বলেও পরিবারের দাবি। গঙ্গাধর ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সন্দেশখালি পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন।

গোটা পরিবারই বিজেপির কর্মী অথবা কোনও না কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন। গঙ্গাধরের বাবা সারদা কয়াল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্য ছিলেন। কাকা অনুকূল কয়াল বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য। ২০০৬-২০১২ সাল পর্যন্ত রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। গঙ্গাধরের আর এক কাকা বিজয় কয়াল বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময়ে করসেবক হিসেবে সেখানে গিয়েছিলেন, ২৩ দিন ফরিদাবাদ জেলে বন্দি ছিলেন বলে জানিয়েছেন অনুকূল নিজেই। তিনি বলেন, ‘‘গঙ্গাধরের এই ভিডিয়ো সামনে আসার পরে গোটা পরিবার মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। পারিবারিক সম্মান নষ্ট হল। বুঝতে পারছি না, কী ভাবে তৃণমূলের ফাঁদে পা দিল ছেলেটা!’’ স্টিং ভিডিয়োয় যে ঘরে কথোপকথন হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে, সেটা তাঁদের বাড়ির একটি ঘর বলে দাবি অনুকূলের।

বিজেপির সন্দেশখালি বিধানসভার আহ্বায়ক শুভঙ্কর গিরি বলেন, ‘‘তৃণমূল চক্রান্ত করে এই সব করেছে। গোপনে ভিডিয়ো রেকর্ড করে গঙ্গাধরের কণ্ঠ বিকৃত করা হয়েছে। স্টিং ভিডিয়োয় যা দেখানো হয়েছে, আদৌ ওই সংক্রান্ত কোনও কথা গঙ্গাধরের সঙ্গে হয়নি বলে ও নিজেই আমাকে জানিয়েছে।’’ শুভঙ্করের দাবি, ‘‘সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত হলে স্পষ্ট হবে সব।’’

ভাইরাল হওয়া স্টিং ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বিজেপির সন্দেশখালির আর এক মণ্ডল সভাপতি শান্তি দলুইকে। শান্তি ন্যাজাট ২ পঞ্চায়েতের কাছারিপাড়ার বাসিন্দা। ভিডিয়ো প্রকাশের পর থেকে শান্তির ফোন বন্ধ। তবে শুভঙ্কর বলেন, ‘‘ভিডিয়োয় উল্লেখ আছে, ৩০ মার্চ রেকর্ড হয়েছিল। ওই দিন শান্তি বসিরহাটে জেলা কমিটির বৈঠকে ছিলেন। যে ঘরে রেকর্ড করা হয়েছে, ওই ঘরটিও অচেনা। তবে সে দিন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের লোক পরিচয় দিয়ে সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন কয়েক জন। উনি শুধু হ্যাঁ আর না বলেছেন।’’

ভিডিয়ো-কাণ্ড অক্সিজেন জুগিয়েছে তৃণমূল শিবিরে। বসিরহাট লোকসভার তৃণমূলের নির্বাচন কমিটির সদস্য তথা হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, "সত্য কখনও গোপন থাকে না, ঠিক সামনে চলে আসে। সন্দেশখালির সত্যিও সামনে এল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement