Lok Sabha Election 2024

জনপ্রিয়তা মাপতে এ বার নিজেই ভোটের ময়দানে বিমল গুরুং, দার্জিলিঙে লড়বেন নির্দল প্রার্থী হয়ে

সাম্প্রতিক কালে পাহাড়ে যত ভোট হয়েছে, প্রতিটিতেই কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে মোর্চা। একদা তুমুল জনপ্রিয় বিমল গুরুংয়ের নিজের জনপ্রিয়তাও তলানিতে ঠেকে। এই পরিস্থিতিতে লোকসভায় লড়ার সিদ্ধান্ত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫০
লোকসভায় লড়বেন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং।

লোকসভায় লড়বেন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। — ফাইল চিত্র।

পাহাড়ে হারানো জমি উদ্ধার করতে শেষ পর্যন্ত ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। মোর্চা নেতৃত্ব গুরুংয়ের এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে। পাশাপাশি, দার্জিলিং পাহাড়ের একাধিক আঞ্চলিক দলও গুরুংকে সমর্থনে রাজি বলে দাবি মোর্চার। এই পরিস্থিতিতে সম্ভবত দার্জিলিং লোকসভায় নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়াই করতে চলেছেন গুরুং।

Advertisement

এ বিষয়ে মোর্চার মুখপাত্র নোমান রাই বলেন, ‘‘মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে কেন্দ্রীয় কমিটির আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাহাড়ের বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। পাহাড়ের এবং পাহাড়বাসীর ন্যায় ও অধিকার সুনিশ্চিত করতে তিনি ফের নির্বাচনী ময়দানে নামতে চলেছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রার্থী হবেন তিনি।’’ সূত্রের খবর, গুরুং যাতে মোর্চার প্রতীকেই লড়াই করতে পারেন সে জন্য ‘তদ্বির’ করতে দিল্লি চলে গিয়েছেন দলের সম্পাদক রোশন গিরি। নির্বাচন কমিশন গুরুংকে মোর্চার প্রতীকে লড়তে না দিলে সে ক্ষেত্রে নির্দল হিসাবে পাহাড়ে লড়াই করবেন গুরুং বলেই আপাতত স্থির হয়েছে। মোর্চা সূত্রে খবর, গুরুংকে সমর্থন দিতে রাজি হয়েছে হামরো পার্টি-সহ একাধিক ছোট দল। যদিও হামরো পার্টির মুখপাত্র দিপু তামাং বলেন, ‘‘বিমল গুরুং এবং মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ঠিকই। তবে এখনও আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি।’’

গুরুংয়ের ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে নারাজ এই মুহূর্তে পাহাড়ে সবচেয়ে প্রভাবশালী দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। দলের মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘গুরুংকে আমরা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না। তাঁর এখন সেই সাংগঠনিক শক্তিও নেই। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে কোনও অসুবিধা হবে না। উনি এখন ভেজা বারুদ হয়ে গিয়েছেন।’’

প্রসঙ্গত, প্রভাবের দিক থেকে একদা পাহাড়ের অঘোষিত প্রধান ছিলেন গুরুং। তাঁর সমর্থন পেয়েই পাহাড়ে প্রথম বার পদ্মফুল ফোটে। দু’বার তাঁর হাত ধরে দার্জিলিং লোকসভায় বাজিমাত করে বিজেপি। কিন্তু ২০১৭ সালে পৃথক গোর্খাল্যান্ড নিয়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর তার সাংগঠনিক শক্তি কমতে কমতে ক্রমশ তলানিতে ঠেকে। জিটিএ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাতেনাতে তার প্রমাণও মেলে। এ ভাবে প্রতিদিনই পাহাড়ের রাজনীতিতে আরও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছিলেন গুরুং। লোকসভা ভোটে তাই ‘কামব্যাক’ করতে চান গুরুং। মরিয়া হয়ে ইতিমধ্যেই প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। বস্তুত, প্রথমে গুরুং জানিয়েছিলেন, তিনি পাহাড়ে কোনও জাতীয় তকমাধারী দলকে লোকসভায় সমর্থন করবেন। গুরুংয়ের ইঙ্গিত ছিল বিজেপির দিকে। বিদায়ী বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাকে সমর্থনের কথাও জানিয়েছিলেন একদা সুবাস ঘিশিংয়ের ডান হাত বলে পরিচিত গুরুং। কিন্তু রাজুকে বিজেপি এ বারও দার্জিলিংয়ের প্রার্থী করবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গুরুংও তাই আর বিজেপির অপেক্ষা না করে নিজেই ভোটযুদ্ধে নেমে হাতেকলমে নিজের জনপ্রিয়তা মাপতে লেগেছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement