Lok Sabha Election 2024

ভোটের বিজ্ঞাপনে ‘দাপট শাসকের’, কমিশন সতর্ক করল পুরসভাকে, পদক্ষেপ পদ্মের অভিযোগ পেয়েই

বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফে সর্বপ্রথম ৩০ মার্চ নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছিল, শহর শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের হোর্ডিং ও বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গিয়েছে।

Advertisement
মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৭:৩৩
রংমিলান্তি: নানা দলের পতাকা, নকল ইভিএমের পসরা সাজিয়ে দোকানি। ক্যানিং স্ট্রিটে।

রংমিলান্তি: নানা দলের পতাকা, নকল ইভিএমের পসরা সাজিয়ে দোকানি। ক্যানিং স্ট্রিটে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

বিজ্ঞাপন নিয়ে বিড়ম্বনার মুখে কলকাতা পুরসভা। ভোটের মরসুমে শহরে কেবল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলই বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং লাগানোর ক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছে, এই মর্মে একাধিক বার অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। আর তার পরেই সমস্ত রাজনৈতিক দল যাতে বিজ্ঞাপনী প্রচারে সমান সুযোগ-সুবিধা পায়, সে বিষয়ে সতর্ক করে কমিশন দু’বার চিঠি দিয়েছে কলকাতা পুরসভাকে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের ওই চিঠি পেয়ে পুর বিজ্ঞাপন বিভাগ সমস্ত বিজ্ঞাপন সংস্থাকে ডেকে সতর্ক করতে সোমবার পুরভবনে জরুরি বৈঠক করেছে। সেই বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পুরসভার চিফ ম্যানেজার (বিজ্ঞাপন)। সূত্রের খবর, পুরসভার ডাকা দরপত্র প্রক্রিয়ায় যে চারটি সংস্থা অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের তরফে শহরে কোনও রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপন লাগানো হয়নি বলে সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে জানিয়েছেন। ওই বৈঠকে বিজ্ঞাপন সংস্থার প্রতিনিধিরা পুর কর্তৃপক্ষকে আরও জানিয়েছেন, তাঁদের হোর্ডিং ও বিজ্ঞাপন কেবল রাস্তার দু’ধারে রয়েছে। ওই সব জায়গা সরকারের মালিকানাধীন। পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ভোটের বিজ্ঞাপন ও প্রচার মূলত বাড়ির দেওয়াল, ছাদ ছাড়াও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জায়গায় রয়েছে। সেগুলিতে পুরসভা হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিস্তারিত লিখে জানানো হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফে সর্বপ্রথম ৩০ মার্চ নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছিল, শহর শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের হোর্ডিং ও বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গিয়েছে। কিন্তু শহরের কোথাও বিজেপি ভোটকেন্দ্রিক কোনও বিজ্ঞাপন লাগাতে গেলে পুরসভা মনোনীত বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির তরফে বাধা ও হুমকি আসছে। এমন অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের প্রার্থীর সমর্থনে যাতে বিজ্ঞাপন লাগানো যায়, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছিল বিজেপি। অভিযোগ পেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ১ এপ্রিল কলকাতা পুরসভার কমিশনারকে জানিয়ে দেন, শহরে রাজনৈতিক হোর্ডিং, ব্যানারে সমস্ত দলের সমান অধিকার রয়েছে। সেই মতো বিজ্ঞাপনী প্রচারে সমস্ত রাজনৈতিক দল যাতে সমান জায়গা পায়, সেটি দেখতে হবে।

নির্বাচন কমিশন ওই চিঠি দিলেও তাতে কোনও কাজ হয়নি, এমন অভিযোগ ওঠে। ২৯ এপ্রিল ফের নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ, শাসকদল তৃণমূলের চাপে বিজেপি দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে ব্যানার, হোর্ডিং লাগাতে পারছে না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যাতে সমস্ত পক্ষকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে, তার জন্য আবেদন করা হয়। এর পরে নির্বাচন কমিশন ১০ মে ফের পুর কমিশনারকে চিঠি লিখে বিজ্ঞাপনে সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ প্রদানে কঠোর অবস্থান নিতে নির্দেশ দেয়।

তার পরেই ১৩ মে পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের চিফ ম্যানেজার সমস্ত বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুরসভা মনোনীত বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থা যে সমস্ত হোর্ডিং, বিজ্ঞাপন লাগায়, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের হোর্ডিং নেই। সোমবার বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement