(বাঁ দিকে) অধীর চৌধুরী, আবু হাসেম খান চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে তৃতীয় দফার প্রার্থিতালিকায় বাংলার আটটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের তরফে দেশের ৫৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রাজ্যের আটটি কেন্দ্রের নাম। বহরমপুরে প্রত্যাশিত ভাবেই প্রার্থী করা হয়েছে বিদায়ী সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে। কিন্তু মালদহ দক্ষিণের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ওরফে ডালুকে এ বার আর টিকিট দেয়নি কংগ্রেস। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে তাঁর ছেলে ইশা খান চৌধুরীকে। কংগ্রেসের তালিকায় ক্রমিক সংখ্যা ৫৭ লেখা থাকলেও নাম রয়েছে ৫৬ জনের। ৩৯ নম্বরে রাজস্থানের সিকার আসনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সেখানে তারা সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন জানাবে। তবে বাংলার ক্ষেত্রে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার প্রসঙ্গের কোনও উল্লেখ নেই এই তালিকায়।
এ ছাড়াও বীরভূম, মালদহ উত্তর, জঙ্গিপুর, রায়গঞ্জ, উত্তর কলকাতা এবং পুরুলিয়া আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। রায়গঞ্জে প্রার্থী করা হয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে কংগ্রেস যোগ দেওয়া আলি ইমরান রামজ় ওরফে ভিক্টরকে। ভিক্টর দু’বারের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক। এই তরুণ নেতাকে বেছে নিল কংগ্রেস হাইকমান্ড। বীরভূমে মিল্টন রশিদকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক। হাসন থেকে জিতেছিলেন তিনি। মালদহ উত্তরে প্রার্থী করা হয়েছে মুস্তাক আলমকে। উত্তর কলকাতায় বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, পুরুলিয়ায় নেপাল মাহাতো, জঙ্গিপুরে মোর্তাজা হোসেনকে প্রার্থী করা হয়েছে।
বুধবারই অধীর জানিয়েছিলেন কয়েক জন প্রার্থীর নাম। এ-ও জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই দিল্লি থেকে ঘোষণা হবে। বামেদের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে কংগ্রেসের। তবে এই আট আসনের মধ্যে কেবল পুরুলিয়া নিয়ে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি রয়েছে। আর কোনও আসন নিয়ে তেমন জট নেই।
অধীর বুধবার পুরুলিয়ায় নেপাল মাহাতোর প্রার্থী হওয়ার কথা বলেছিলেন। তাতে ফুঁসে উঠেছিল বামফ্রন্টের শরিকদল ফরওয়ার্ড ব্লক। দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস কি বামফ্রন্টের দল নাকি? ওখানে বামফ্রন্টের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীই লড়বেন! আমরা দলের তরফে ফ্রন্টে প্রার্থীর নামও জানিয়ে দিয়েছি।’’
কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা, বাম শরিকদের মধ্যে সেই অনুযায়ী আসন ভাগাভাগি-সহ বিবিধ বিষয়ে ফ্রন্টের মধ্যে বিস্তর বিতণ্ডা হয়েছে। সিপিএম নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছেন, তৃণমূল-বিজেপি ভোটকে এক জায়গায় করতে হলে সবাইকে ‘কৃচ্ছ্রসাধন’ করতে হবে। যে পারবে না, তাকে ছিটকে যেতে হবে। শুক্রবার বামফ্রন্টের বৈঠক রয়েছে। কংগ্রেসের প্রথম দফার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হওয়ার পর কী পরিস্থিতি হয় ফ্রন্টে সেটাই দেখার।