Lok Sabha Election 2024

অধীরের গড়ে দাঁড়িয়ে মমতাকে আক্রমণ, তবে বহরমপুরে নড্ডার ভাষণ শেষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে!

মমতার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাংলাদেশের স্লোগান বলেও দাবি করেছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই এ বার তুললেন ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:২১
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বহরমপুরের বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বহরমপুরের বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। — ছবি: পিটিআই।

বাংলায় তাঁর প্রথম নির্বাচনী জনসভা থেকে কংগ্রেস–তৃণমূলকে একই আসনে বসিয়ে আক্রমণ শানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। রবিবার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসে রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করার ডাক দেন তিনি। পরিশেষে, বক্তৃতা শেষ করেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে। ইদানীং বিজেপির ‘জয় শ্রীরামে’র পাল্টা হিসাবে যে স্লোগান দিতে অভ্যস্ত তৃণমূল! আসলে, ভোট বড় বালাই!

Advertisement

রবিবার, বহরমপুর লোকসভার বড়ঞা বিপ্রশেখর অঞ্চলের জালিবাগান মাঠে নড্ডা ২৩ মিনিট ভাষণ দেন। দুর্নীতি থেকে সন্দেশখালি, কেন্দ্রের প্রকল্পে বাধা থেকে কাটমানি— যাবতীয় প্রসঙ্গ ছুঁয়ে গিয়ে রাজ্য সরকারের দিকে একের পর এক আক্রমণ শানান তিনি। বস্তুত, ২৩ মিনিটের ভাষণের সিংহভাগটাই বিজেপি সভাপতি বিঁধলেন তৃণমূলকে। খানিক আক্রমণ করলেন কংগ্রেসকেও। প্রসঙ্গত, একই দিনে নড্ডার দ্বিতীয় সভা নদিয়ার বগুলা আইটিআই কলেজ মাঠে।

রবিবার মুর্শিদাবাদে সন্দেশখালির ঘটনাকে সামনে রেখে সুর চড়ান নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের বদলে বাংলায় এখন বোমা,বন্দুকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। শাহজাহানকে আড়াল করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সেখানে যে ভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর হামলা হয়েছে, তা নিন্দনীয়।’’ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলে নড্ডা বলেন, ‘‘বাংলাকে কোন পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন দিদি?’’ এর পর নড্ডা চলে আসেন সিএএ প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীরা মমতাদিদির কে হন? কেন আপনি এদের প্রতি এত সদয়? এই তোষণের রাজনীতিরই আমরা বিরোধিতা করি।’’ এর পরেই নড্ডার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয় কংগ্রেস। বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, দলিত, আদিবাসী, ওবিসির জন্য যে সংরক্ষণ, তা বন্ধ করে ধর্মের নামে সংরক্ষণ চালু করে মুসলিম তোষণের রাজনীতি করছে কংগ্রেস। এই কারণে কংগ্রেসকে ‘ঘরে বসিয়ে দেওয়ার’ ডাক দেন তিনি। নড্ডা প্রকাশ্য জনসভা থেকে এ কথা বললেও কোথায় তিনি এই তথ্য পেলেন, তা জানাননি। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, ক্ষমতায় বিজেপি থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস কী করে সংরক্ষণের আইন বদলে ফেলতে পারে? ভোটের বাংলায় প্রথম নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়ে নড্ডা যে তৃণমূল-সহ বিরোধীদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাবেন, তা নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু চমক এল নড্ডার বক্তৃতার একেবারে শেষ লগ্নে। যখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ‘জয় বাংলা’ বলে নেমে গেলেন মঞ্চ থেকে!

গত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির ‘জয় শ্রীরামে’র পাল্টা হিসাবে রাজনীতির আঙিনায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া শুরু করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তী কালে তা কার্যত তৃণমূলের স্লোগানে পরিণত হয়। তৃণমূলের মুখে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বঙ্গ বিজেপির নেতারা। জয় বাংলা স্লোগানকে ‘বাংলাদেশের স্লোগান’ বলেও দাবি করেছিলেন বিজেপি নেতারা। সেই বিজেপিরই সর্বভারতীয় সভাপতি প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই এ বার তুললেন ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি।

আরও পড়ুন
Advertisement