Lok Sabha Election 2024

অরুণের ইস্তফায় নির্বাচন কমিশনের দু’টি পদ শূন্য! ভোট ঘোষণার মুখে ‘ফুল বেঞ্চে’ এখন একাই রাজীব

দেশে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার-সহ মোট তিন জন নির্বাচন কমিশনারের থাকার কথা। এত দিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব এবং নির্বাচন কমিশনার অরুণই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তৃতীয় পদটি ফাঁকাই ছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ২৩:০৯
An image of Arun Goel and Rajiv Kumar

(বাঁ দিকে) অরুণ গোয়েল এবং রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র।

সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কথা। তার ঠিক আগেই আচমকা নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অরুণ গোয়েল। তাতে নির্বাচন কমিশনারের দু’টি পদই এখন শূন্য হয়ে গেল! যার ফলে কমিশনের ফুল বেঞ্চে এখন শুধুই রয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।

Advertisement

দেশে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার-সহ মোট তিন জন নির্বাচন কমিশনারের থাকার কথা। এত দিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব এবং নির্বাচন কমিশনার অরুণই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তৃতীয় পদটি ফাঁকাই ছিল। ওই পদে ছিলেন অনুপ পাণ্ডে। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর নিয়েছেন। লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে রাজ্যে ঘুরছিল কমিশনের ফুল বেঞ্চ, অর্থাৎ রাজীব এবং অরুণ। গত ৪ মার্চ তাঁরা পশ্চিমবঙ্গেও এসেছিলেন। শুক্রবার অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এব‌ং রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকেও বসেছিল কমিশন। রাজ্যে রাজ্যে সেনা মোতায়েনের জন্য রেলকে কী ভাবে কাজে লাগানো হবে, তা-ই ছিল বৈঠকের বিষয়বস্তু। ঘটনাচক্রে, ঠিক তার পরেই শনিবার ইস্তফা দিলেন অরুণ। তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণও করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া চিঠিতে অরুণ জানিয়েছেন যে, তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণে’ পদত্যাগ করছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্রের দাবি, সরকারের তরফে চেষ্টা করা হয়েছিল যাতে অরুণ পদত্যাগ না করেন। কিন্তু তিনি এক রকম জোর করেই পদত্যাগ করলেন। শীঘ্রই শূন্য পদে নিয়োগ করা হবে বলে দাবি করেছে ওই সরকারি সূত্র।

২০২২ সালে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ করা হয়েছিল ১৯৮৫ সালের পঞ্জাব ক্যাডারের আমলা অরুণকে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদ রাজীবের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত। তার পরেই ওই পদে বসার কথা ছিল অরুণের। তাঁর মেয়াদ রয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। তার পরেও কেন ভোটের মুখে তিনি ইস্তফা দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই এই ইস্তফায় আশঙ্কা, ভোট ঘোষণা পিছিয়ে যাবে না তো?

অরুণের হঠাৎ পদত্যাগ নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে বিঁধতে শুরু করেছে বঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখেল এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনারের পদটি এখন শূন্য। তার মানে এখন নির্বাচন কমিশন বলতে এক জন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এ বার নরেন্দ্র মোদী দু’জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন।’’ কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “এটা ইলেকশন কমিশন না ইলেকশন অমিশন (বাদ যাওয়া)? লোকসভা ভোটের ঠিক আগেই ভারতে এখন মাত্র এক জনই নির্বাচন কমিশনার রয়েছেন। কেন?”

দু’বছর আগে যখন অরুণকে নির্বাচন কমিশনারের পদে নিয়োগ করা হয়েছিল, তখন বিতর্ক হয় তা নিয়ে। অরুণের নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনার পদে এত তাড়াহুড়ো করে কেন নিয়োগ করা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও উঠেছিল। পরে অবশ্য নির্বাচন কমিশনার পদে প্রাক্তন এই আমলাকেই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন
Advertisement