Lok Sabha Election 2024

ফিরহাদের ডাকা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতে পারেন দুই বিধায়ক, পাঠান-ক্ষোভের জের?

মুর্শিদাবাদ জেলায় তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম। সেই বৈঠকে দুই বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং নিয়ামত শেখ অনুপস্থিত থাকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ ১৭:১৪
ফিরহাদ হাকিম।

ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোট ঘোষণার দিনই মুর্শিদাবাদের তিন লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠকে বসছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদের সংগঠন দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিরহাদ ববি হাকিম। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগেই তা নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে দিয়েছেন দুই বিধায়ক। বহরমপুর আসনে প্রার্থী নাপসন্দ, তাই শনিবারের বৈঠক ‘বয়কট’ করতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ। ঘটনাচক্রে, নিয়ামত আবার বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানও। যদিও অনুপস্থিতির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি ফিরহাদ নিজে।

Advertisement

বহরমপুর, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ— জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের নেতৃত্ব এবং তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পরিষদের সভাগৃহে ‘ক্লোজড ডোর’ বৈঠকে বসছেন ফিরহাদ। সেখানে তিনটি লোকসভা এলাকায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা খতিয়ে দেখবেন কলকাতার মেয়র। একই সঙ্গে সংগঠন নিয়ে জেলার নেতারা রিপোর্ট জমা দেবেন ফিরহাদের কাছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ফিরহাদের উপস্থিতিতে মুর্শিদাবাদ জেলার লোকসভা প্রস্তুতির সাংগঠনিক বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার ফোন করেছিলেন বিধায়ক হুমায়ুনকে। বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামতকেও। প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন হুমায়ুন। ফলে তিনি যে বৈঠকে হাজির না-ও থাকতে পারেন, সেই জল্পনা শুরু থেকেই ছিল। যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, শুধু হুমায়ুনই নন, জেলা চেয়ারম্যান নিয়ামতও সম্ভবত যোগ দিচ্ছেন না ফিরহাদ আহুত বৈঠকে। এ প্রসঙ্গে হুমায়ুন দাবি করেন, তিনি এবং নিয়ামত ফিরহাদের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। যোগ না দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে হুমায়ুন বলেন, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কোনও বৈঠকে ডাকেন নিশ্চয়ই যাব। আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বেশ কিছু দাবিদাওয়া থাকায় ববিদা’র বৈঠকে যেতে পারছি না।’’ বিধায়ক নিয়ামত বলেন, ‘‘বৈঠকে যাব কি না তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে ধরে রাখুন, যাচ্ছি না।’’

প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি আসনই তৃণমূলের কাছে কঠিন লড়াই। মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুরে তৃণমূল প্রার্থী করেছে বিদায়ী সাংসদ আবু তাহের খান এবং খলিলুর রহমানকে। বহরমপুর কেন্দ্রে অধীরের বিরুদ্ধে জোড়া বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করে চমকে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহরমপুরের পাঁচ বারের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে হারাতে এ বার মরিয়া রাজ্যের শাসকদল। পাঠানের নাম ঘোষণার পরেই অসন্তোষের সুর শোনা গিয়েছে হুমায়ুনের গলায়। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বকে হুমায়ুনের বক্তব্যে বিশেষ গুরুত্ব দিতে দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, মাঝে মাঝেই ‘বিদ্রোহী’ হয়ে ওঠা হুমায়ুনের গরম গরম বক্তব্যকে আপাতত গুরুত্ব না দেওয়ার পন্থা নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। কিন্তু সমস্যা বৃদ্ধি করেছেন নিয়ামত। তাঁরও প্রার্থী ‘নাপসন্দ’।

হুমায়ুন ও নিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ বলেন, ‘‘বৈঠকে গেলে তবে তো বুঝতে পারব কে আসছেন, কে আসছেন না। এখনই এ প্রশ্নের উত্তর কী ভাবে দেব?’’

আরও পড়ুন
Advertisement