প্রতীকী চিত্র।
অনলাইনে স্কুল পাঠ্য শিখে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। এই মর্মে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘বাংলার শিক্ষা’ শীর্ষক ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে নিয়মিত ভাবে পড়ুয়াদের স্বার্থে প্রাথমিক মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষামূলক ভিডিয়ো প্রকাশ করা হবে। এই চ্যানেলটি স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্যবহার করার আর্জি জানানো হয়েছে।
অনলাইন পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারি ইউটিউব চ্যানেলের সংযোজনের বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছে শিক্ষামহল, সে বিষয়ে জানতে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবক এবং প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন।
অভিভাবক সমাপ্তি দাস এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ছেলেমেয়েরা কী পড়ছে, কোন কোন বিষয়গুলি অভিভাবকদের জানা প্রয়োজন— তার জন্য আগে স্কুলে যোগাযোগ করা কিংবা পড়ুয়াদের কথা বলতে হত। স্কুল শিক্ষা দফতরের চ্যানেলের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই সেই সব জেনে নেওয়া সম্ভব, এতে আমার মতো কর্মরত মা-বাবারা বিশেষ ভাবে উপকৃত হবেন।”
হীরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য জানিয়েছেন, স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এই সম্পর্কে একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পড়ুয়াদের পাঠ্যক্রম সম্পর্কে আগ্রহ বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে এই চ্যানেল বিশেষ ভাবে কার্যকরী প্রভাব ফেলবে, এমনটাই মত প্রধান শিক্ষিকার।
প্রসঙ্গত, স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে নিয়মিত ভাবে ‘উজ্জীবন চর্চা’ শীর্ষক ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে। তাতে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে সরাসরি পড়ুয়াদের পাশাপাশি, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হবে।
যদিও ইউটিউবের মাধ্যমে পঠনপাঠনের বিষয়টিকে সমর্থন করতে নারাজ কামরাবাদ গার্লস হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া শ্রেয়া নষ্কর। সে বলে, অনলাইনে পঠনপাঠন কখনও ক্লাসরুমের বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে না। তা ছাড়াও সকলের কাছে স্মার্টফোন নেই এবং যাদের আছে, তারা সকলে পড়াশোনার কাজে তা ব্যবহারও করে না।
তবে যোধপুর পার্ক বয়েজ-এর প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার অনলাইন পঠনপাঠনের এই পদ্ধতিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন,“নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অনলাইনে মাধ্যমের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে ছেলেদের পড়াশোনা সঠিক সময়ে শুরু করা যেত না। পাশাপাশি, স্কুল শিক্ষা দফতরের চ্যানেলের মাধ্যমে কোনও বিষয় শেখার ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের সহযোগিতা করার জন্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত থাকবেন।”
একই সুর শোনা গিয়েছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতীম বৈদ্যের কথাও। তিনিও সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “স্কুল শিক্ষা দফতরের এই বিশেষ ব্যবস্থার কারণে পঠনপাঠন নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে আরও বেশি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে স্কুলের তরফেও সংশ্লিষ্ট চ্যানেল সম্পর্কে পড়ুয়াদের জানানো হবে।”