কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে ফ্রান্সের তরফ থেকে শিক্ষামেলা। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে এ বার ফ্রান্স সরকার। ভারতের চারটি মহানগরে ৮ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত ‘চুজ় ফ্রান্স ট্যুর’ নামে শিক্ষামেলার আয়োজন করা হয়েছে ফরাসি দূতাবাসের উদ্যোগে।
৮ তারিখ চেন্নাইয়ের পর ১১ তারিখ কলকাতায় এই শিক্ষামেলার আয়োজন করা হয়, যেখানে ফরাসি কনসাল জেনারেল দিদিয়ের তালপাঁয় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল মাকরঁ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য ৩০,০০০ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীকে ফ্রান্সে দেখার আশা রাখছেন। বর্তমানে সংখ্যাটা ১০,০০০-র কম তাই আমাদের সংখ্যাটা তিনগুণ করতে হবে, সেই লক্ষ্যে ‘চুজ় ফ্রান্স ট্যুর’ ২০২৩ একটা সদর্থক পদক্ষেপ।’’
কলকাতায় আয়োজিত এই শিক্ষামেলায় ফ্রান্সের সরকারি ও বেসরকারি-সহ মোট ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে চেন্নাইয়ে যে শিক্ষামেলার আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে ৯০০ জন পড়ুয়া উপস্থিত হন। বুধবার কলকাতায় আয়োজিত শিক্ষামেলাও যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।
বর্তমানে সব থেকে বেশি ভারতীয় পড়ুয়ারা উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য কানাডায় যান। এ বার যাতে কানাডার পাশাপাশি ভারতীয় পড়ুয়ারা ফ্রান্সেও গবেষণা ও চাকরির সুযোগ পান তার জন্য এই বিশেষ উদ্যোগী সরকার। শিক্ষাক্ষেত্রে ফরাসি সরকারের বিভিন্ন অনুদান রয়েছে এবং সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সিংহভাগ খরচ ফ্রান্স সরকার বহন করে বলে বাংলা থেকে পড়ুয়ারা সেখানে পড়তে গেলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেকটাই খরচ কম পড়বে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।
ফ্রান্স সরকার সম্প্রতি ‘আন্তর্জাতিক ফরাসি ক্লাস’ এবং প্রাক্তন ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য পাঁচ বছরের বৈধতার ‘শর্ট-স্টে-ভিসা’রও’ ঘোষণা করেছে। ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষায় ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা চাইলে আন্তর্জাতিক ফরাসি ক্লাসের মাধ্যমে ফরাসী ভাষা শিখতে পারবেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা তার বেশি যোগ্যতা সম্পূর্ণ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরাই কেবল তাদের প্রথম সেমিস্টার শেষ করার পরে পাঁচ বছরের বৈধতার ‘শর্ট-স্টে-ভিসা’ শেনজেনের সুবিধা নিতে পারবেন।
ছাত্রছাত্রীরা ম্যানেজমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, হসপিট্যালিটি, হিউম্যানিটিজ, শিল্পকলা, স্থাপত্য এবং ডিজাইন ক্ষেত্রে প্রায় ১৭০০ বিষয়ের মধ্যে থেকে নিজেদের পছন্দের বিষয় বাছাই করে নিতে পারবেন। বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্যাম্পাস ফ্রান্সের তরফ থেকে বিনামূল্যে কাউন্সেলিং-র সুবিধা থাকছে। বিভিন্ন বৃত্তি এবং ভিসার ব্যাপারেও বিশদে ক্যাম্পাস ফ্রান্সের তরফ থেকে সব রকমের সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের ‘স্টুডেন্টস ফি’ ক্ষেত্রেও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে।