দুই প্রাক্তন সহপাঠীর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপার্সন তেজস্বিনী অনন্তকুমার এবং অধিকর্তা ভিএমএসআর মূর্তি। নিজস্ব চিত্র।
প্রাক্তনীর হাত ধরে জাতীয় স্তরে জল, পরিবেশ সংরক্ষণের পর সুস্থায়ী উন্নয়ন নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠানের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই প্রাক্তন সহপাঠী অধ্যাপক সুধাংশুশেখর চক্রবর্তী এবং অধ্যাপক অরুণ দেবের উদ্যোগে বিশেষ রিসার্চ সেন্টার শুরু হতে চলেছে। সুধাংশু ১০ কোটি এবং অরুণ ৮.৬ কোটি টাকা দু’টি রিসার্চ কেন্দ্র তৈরি করার জন্য প্রতিষ্ঠানকে দানও করেছেন। সেই অনুদান দিয়েই কেন্দ্র পরিচালনার কাজ শুরু হবে।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি), শিবপুরের ক্যাম্পাসে শনিবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। উদ্বোধন প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপার্সন তেজস্বিনী অনন্তকুমার জানিয়েছেন, প্রাক্তনীদের প্রত্যাবর্তন এবং তাঁদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্য আগামী প্রজন্মকে আরও বেশি উৎসাহিত করবে। তিনি আরও বলেন, “এই কেন্দ্রগুলি পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক স্তরে উৎকর্ষের পরিচয় দিতে চলেছে।”
অধ্যাপক সুধাংশু শেখর চক্রবর্তীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপার্সন অভিভূত। নিজস্ব চিত্র।
পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অধ্যাপক সুধাংশুশেখর চক্রবর্তীর অর্থানুকূল্য তৈরি হওয়া ‘চিরশ্রী সেন্টার ফর সাসটেনেবল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট’-এর মূল লক্ষ্য হল সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি রূপান্তরের জন্য কারিগরি বিদ্যা, মেধা এবং দক্ষতাকে সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা। একই সঙ্গে অধ্যাপক এও বলেন, “শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বরং ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে নবীন প্রজন্মকে হাতে কলমে ফান্ডামেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠদান করার উপর বিশেষ ভাবে জোর দিতে হবে।”
‘অরুণ অ্যান্ড ধৃতি দেব সেন্টার অফ ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ়’-এর দীর্ঘদিনের ভাবনা বাস্তবায়িত হওয়ায় খুশি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনী অরুণ দেব। শহর এবং গ্রামের মাটির নীচে থাকা জল সরবরাহ পরিকাঠামোর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকা এবং নবীনদের হাতেকলমে এই বিষয়গুলি শেখানোর মতো পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে এই কেন্দ্র অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে চলেছে, এমনটাই আশা অরুণের।
দ্য গ্লোবাল অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (গাবেসু)-র আধিকারিকদের সঙ্গে অধ্যাপক অরুণ দেব। নিজস্ব চিত্র।
উল্লিখিত দু’টি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় পড়ুয়াদের জল, পরিবেশ এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের যাবতীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা এবং পিএইচডি, স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠনের সুযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া নিয়মিত ভাবে কর্মশালা, আলোচনাসভা এবং অনলাইন-অফলাইন কোর্সের মাধ্যমে আইআইইএসটি শিবপুর-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ এবং কাজের সুযোগ যাতে দেওয়া যেতে পারে, সেই পরিকল্পনাও রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ভিএমএসআর মূর্তি বছরের শুরুতেই এই রিসার্চ সেন্টার সূচনার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এও জানিয়েছেন, ছ’মাসের মধ্যে এই কেন্দ্রগুলির কাজ পুরোদমে শুরু হতে চলেছে। কেন্দ্র পরিচালনার জন্য যে সমস্ত পরিকল্পনা রয়েছে, তার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ফ্যাকাল্টির পরিশ্রম যথেষ্ট প্রশংসনীয়। তাঁদের হাত ধরেই এই কেন্দ্রগুলি থেকে পরবর্তী পর্যায়ের কাজ সম্পূর্ণ হতে চলেছে। অধিকর্তার তত্ত্বাবধানে গর্ভনিং কাউন্সিলের অধীনে গবেষণা কেন্দ্রে কাজ পরিচালনা করা হবে।