Mobile App Development Courses After 12th

মুঠোফোনের ‘অ্যাপ’ তৈরি করতে চান? কী পড়বেন? জেনে নিন বিস্তারিত...

মোবাইল ফোনের দুনিয়া ‘অ্যাপ’ ছাড়া অচল। বিশ্বকে হাতের মুঠোয় আনতে হলে জানা চাই সেই ‘অ্যাপ’এর খুঁটিনাটি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ১২:২৯
Mobile App Developing

প্রতীকী ছবি।

চলভাষ তথা মুঠোফোন তথা স্মার্টফোন। যন্ত্রের বাহারি নাম যেমন অনেক, তেমনই তার প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আগে যোগাযোগ করতে প্রয়োজন ছিল নম্বর ডায়াল করা। এখন অ্যাপে ক্লিক করলেই নিমেষে এক প্রান্তের খবর কিছু না বলেই পৌঁছে যাচ্ছে পৃথিবীর অন্য প্রান্তে। যাঁরা উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছেন, কিংবা স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করার পথে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত এই ‘অ্যাপ’ ব্যবহার করেন।

অবসর থেকে পড়াশোনা, সারা দিনের বিশেষ বিশেষ খবর থেকে খেলাধূলার ‘লাইভ আপডেট’ - সবটাই অ্যাপের কারসাজিতে প্রতি সেকেন্ডে হাতের মুঠোয় চলে আসছে। অথচ এই ‘অ্যাপ’ কী ভাবে তৈরি হয়? কারা করেন? কী ভাবে সেই পেশায় উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা স্নাতকোত্তীর্ণ পড়ুয়ারা আসতে পারবেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর রইল এখানে।

Advertisement

‘মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপিং’ আসলে কী?

মুঠোফোনের দুনিয়ায় অ্যাপের ভূমিকা নিয়ে যত বলা যায় ততই কম। মানুষের ঘুম থেকে ওঠা এবং ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতি পদে পদে রয়েছে এই ‘বিশেষ’ বিষয়টি। বিনোদন, ব্যবসা, বাণিজ্য, পড়াশোনার পাশাপাশি, কথা বলা বা না বলেও তথ্য পৌঁছে দেওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব সামলায় ‘অ্যাপ’। সেই ‘অ্যাপ’ তৈরি করার পদ্ধতির পোশাকি নাম হল ‘মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপিং’।

অ্যাপ ডেভেলপারের কাজ কী?

যাঁরা এই প্রক্রিয়ায় নিত্য নতুন ‘অ্যাপ’ তৈরি করছেন, তাঁদেরকে বলা হয় অ্যাপ ডেভেলপার। তাঁরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যেমন ‘সি’, ‘সি++’, ‘জাভা’, ‘সুইফট্’, ‘কোটলিন’— এই সমস্ত কিছু ব্যবহার করে মুঠোফোনের দুনিয়ায় সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে, এমন ‘অ্যাপ’ তৈরি করে থাকেন। সাধারণত ‘অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম’-এর জন্য বেশি ‘অ্যাপ’ তৈরি বা ডেভেলপ করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে অ্যাপেলের তরফে ‘আইফোন অপারেটিং সিস্টেম’-এর (আইওএস) চাহিদা বাড়তে থাকায়, বেশ কিছু ‘অ্যাপ’ আইওএসের সাহায্যেও যাতে মানুষ ব্যবহার করতে পারে, তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

কোন বিষয় নিয়ে পড়া যায়?

আমাদের দেশে সরাসরি মোবাইল ‘অ্যাপ ডেভেলপিং’ বিষয়টি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে দ্বাদশ শ্রেণি থেকেই বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া হওয়া প্রয়োজন, যদি তাঁরা ‘অ্যাপ ডেভেলপিং’-এর পেশায় আসতে চান। সে ক্ষেত্রে তাঁদের অঙ্ক, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, এই ৩টি বিষয় থাকা দরকার। স্নাতকস্তরে ‘মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপিং’, ‘কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং’, ‘সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট’র ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে, পাশাপাশি আগ্রহীরা ডিপ্লোমাও করতে পারেন ‘সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়টিতে। পরবর্তীকালে স্নাতকোত্তর স্তরে ‘মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপিং’, ইঞ্জিনিয়ারিং’, ‘সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট’ নিয়েও বিস্তারিত পড়ার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা।

কী ভাবে মিলবে পেশায় প্রবেশের সুযোগ?

পাঠক্রমের বাইরে কাজ শেখার সুযোগ পেতে হলে পড়াশোনার পাশাপাশি পেশাদার কোর্স করতে হবে পড়ুয়াদের। সেই কোর্সগুলিতে হাতে কলমে কাজ শেখার সুযোগও থাকে। স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে ‘মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট’, ‘অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট’ নামক কোর্সগুলি করার পর সরাসরি কাজের সুযোগও পেতে পারেন দক্ষ পড়ুয়ারা।

কী কী বিষয়ে দক্ষতা থাকা দরকার?

প্রযুক্তিগত বিষয়ে যে ধরনের পরিবর্তন নিয়মিত হয়ে চলেছে, সেই সমস্ত বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। পাশাপাশি নতুন কিছু তৈরি করার ভাবনা থাকতে হবে পড়ুয়াদের। সৃজনশীল মানসিকতা থাকলে এই পেশায় উন্নতির সুযোগ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে মোবাইলের চলতি ‘অ্যাপ’গুলি কী ভাবে কাজ করছে, কী কী বিষয়ে কাজ করতে পারছে না, সেই সমস্ত কিছু নখদর্পণে থাকা প্রয়োজন এক জন মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপারের।

কাজের সুযোগ কেমন?

মুঠোফোন দিয়ে ঘেরা পৃথিবীতে ‘অ্যাপ ডেভেলপার’দের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। পাশাপাশি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহাবস্থানে এই পেশা হয়ে উঠেছে আরও আকর্ষণীয়। বিভিন্ন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থার পাশাপাশি বহুজাতিক সংস্থাতেও পেশাদার ব্যক্তিদের নিয়োগ করা হয় নিয়মিত ভাবে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শিক্ষানবিশ থেকে শুরু সরাসরি চাকরির সুযোগ দেওয়া হয় সকলকে। সে ক্ষেত্রে সঠিক যোগ্যতা এবং কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে পেশায় প্রবেশের সুবিধা রয়েছে।

বেতন?

এই পেশায় শিক্ষানবিশ কিংবা সরাসরি চাকরির ক্ষেত্রে বেতনক্রম যথেষ্ট আকর্ষণীয়। ছোট থেকে মাঝারি সংস্থায় কাজের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৬ অঙ্কের বেতন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে দক্ষ ব্যক্তিদের। অভিজ্ঞতার নিরিখে সেই বেতনক্রম, সংস্থা অনুযায়ী আরও বেড়ে যায়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একজন ‘মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার’ বছরে গড়ে ৪ থেকে ১২ লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন।

তাই ‘মোবাইল অ্যাপ’ নিয়ে উৎসাহ থাকলে পড়াশোনার পাশাপাশি পেশাদার কোর্স করে নিতেই পারেন পড়ুয়ারা। অভিজ্ঞতার নিরিখে বিভিন্ন সংস্থায় কাজের আকর্ষণীয় সুযোগ পেতে পারেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement