Extracurricular Activities in School

পড়াশোনার সঙ্গেই গড়ে উঠুক পাঠক্রম বর্হিভূত জীবনের অভ্যাস - পরামর্শ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের

এই ধরনের অভ্যাস যেমন পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, তেমনই তাদের মধ্যে আত্মশ্রদ্ধা, আত্মনির্ভরতা, আত্মসংযমের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।

Advertisement
পার্থ কর্মকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪ ১৫:৪২
Extra curriculam activity.

প্রতীকী চিত্র।

একটা সময়ে পাঠ্যক্রম বইয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল। পড়ুয়ারা বই পড়েই শিক্ষা অর্জন করত। এর মাধ্যমেই তাদের বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করা হত। সঙ্গীত চর্চা, খেলাধুলা, আঁকা, সমাজসেবামূলক কাজকে তখন পাঠ্যক্রম বহির্ভূত অর্থাত্‍ এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি হিসাবে ধরা হত।

Advertisement

পরবর্তীতে পাঠ্যক্রমের ধরনে পরিবর্তন এল। তা হয়ে উঠল আরও বৈচিত্র্যময়, আধুনিক জগতের সঙ্গে তার সংযোগ হয়ে উঠল নমনীয়। কর্ম ও ব্যক্তিজীবন গড়ে তোলার সহযোগী উপকরণগুলি এই পাঠ্যক্রমের সামিল করা হল। খেলাধুলা, সঙ্গীতচর্চার মতো অভ্যাস স্কুলস্তরের পড়ুয়াদের দৈনন্দিন রুটিনে যোগ করা হল। এগুলি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি থেকে হয়ে উঠল কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি। শরীরকে সুস্থ এবং কর্মঠ রাখতে ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, কবাডি, ভলিবল, যোগব্যায়াম, এনসিসি প্যারেডের সূচনা করা হল। এই সমস্ত আউটডোর গেমের পাশাপাশি, ক্যারম, টেবিল টেনিস, দাবা খেলা হয়ে উঠল মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধির পদ্ধতি।

সব স্কুলে আউটডোর গেম বা ইনডোর গেমের ব্যবস্থা থাকে না। তবে স্কুলপড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি এবং কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন,

১) শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন: এই ধরনের অভ্যাস যেমন পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, তেমনই তাদের মধ্যে আত্মশ্রদ্ধা, আত্মনির্ভরতা, আত্মসংযমের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও কোনও কাজ সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করা কিংবা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী তা সম্পন্ন করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

২) সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি : পাঠ্যক্রম বহির্ভূত এই কার্যকলাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একসঙ্গে কাজ করার ক্ষমতা, একে অপরের সঙ্গে কথোপকথন এবং তার সাহায্যে দলবদ্ধ ভাবে একটি কাজকে সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে পারার অভ্যাস তৈরি হয়। পরবর্তীতে কাজের নিরিখে প্রতিটি পড়ুয়ার মধ্যে এই অভ্যাসগুলি তাদের দক্ষ সংগঠক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে সাহায্য করে।

৩) শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি: খেলাধুলো, যোগব্যায়ামের অভ্যাস শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে শারীরিক বিকাশও দ্রুত হতে থাকে। স্কুলস্তরের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এই বিকাশ হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।

৪) মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষা : পাঠ্যক্রম নির্ভর পড়াশোনার ক্ষেত্রে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের মুখোমুখি হতে হয় পড়ুয়াদের। বিষন্নতা, উদ্বেগের মতো সমস্যার সমাধানে পাঠ্যবহির্ভূত অভ্যাস বিশেষ ভাবে কার্যকরী প্রভাব ফেলে। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষা পায়।

৫) শৃঙ্খলাপরায়ণতা: বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রবন্ধ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা পাঠ্যক্রম বহির্ভূত অভ্যাস চর্চা করলে তাদের মধ্যে সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং নির্দিষ্ট শৃঙ্খলা মেনে চলার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এতে তারা পড়াশোনার ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে বেশি মনোযোগী হয়ে ওঠে।

৬) সৃজনশীলতার বিকাশ: কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটির সাহায্যে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রকম ভাবে সৃজনশীল হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, এই অভ্যাসের কারণে তাদের কল্পনাশক্তিও বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন
Advertisement