Exam Opportunity for Failed Students

উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়েও সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা দেওয়া যাবে, সিদ্ধান্ত শিক্ষা সংসদের

শুধু উচ্চ মাধ্যমিক নয়, কোনও পরীক্ষার্থী টেস্টে পাশ করতে না পারলেও এই সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ চলতি বছর টেস্টে ফেল করার জন্য যে সমস্ত পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক দিতে পারেনি তারাও সেমেস্টারের পরীক্ষা দিতে পারবেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৫৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পুরনো পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করলেও একই বছরে নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে পড়ুয়ার। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত প্রার্থী (রেগুলার ক্যান্ডিডেট) হিসাবে উচ্চ মাধ্যমিকের সেমেস্টারে বসার সুযোগ পাবে ওই পড়ুয়া। এমনই সিদ্ধান্ত নিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

Advertisement

শুধু উচ্চ মাধ্যমিক নয়, এমনকি কোনও পরীক্ষার্থী টেস্টে ফেল করলেও এই সুযোগ পাবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ পড়ুয়াদের উপর। তারা চাইলে নিজেরাই সেমেস্টার পদ্ধতিতে ‘মাইগ্রেট’ করতে পারবে, আবার নাও পারে। পুরো প্রক্রিয়াই অনলাইনে করতে পারবে পড়ুয়া নিজেই।’’

২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত অনলাইনে এই আবেদন জানাতে পারবে পড়ুয়ারা। অর্থাৎ প্রায় এক মাস সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কাউন্সিলের নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘অপশন ফর্ম’ পূরণ করে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তবে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের ব্যবহারিক পরীক্ষার বিষয়গুলিও সেমেস্টার পদ্ধতির মধ্যে নিয়ে আসা হবে। তখন পুনরায় পড়ুয়াদের পরীক্ষার নম্বরগুলি কাউন্সিলের পোর্টালে আপলোড করতে হবে।

যোধপুর পার্ক বয়েজ়-এর প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘অকৃতকার্য ছাত্রদের ফের সুযোগ করে দিচ্ছে কাউন্সিল। এই বিষয়টাকে আমরা স্বাগত জানাই। যদি কোনও অসুবিধা থাকে সেটাও ছাত্রদের মেনে নেওয়া উচিত।’’

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই ‘অপশন ফর্ম’ পূরণের সময় পুরনো যে বিষয়ের কমবিনেশন নিয়ে পড়ছে তার মধ্যে যদি কোনও বিষয় দিতে হয় তবে সেই বিষয়ের পরিবর্তে অন্য কোনও বিষয় বাছাই করতে হবে প্রার্থীদের।

২০২৪ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে সেমেস্টার পদ্ধতি চালু হয়েছে। ২০২৫ সালেই শেষ বারের মতো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পুরনো পাঠ্যক্রমে হয়েছে। তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, যারা এ বার টেস্টে উত্তীর্ণ হতে পারল না, তারা তো সেমেস্টার পদ্ধতিতে পড়াশোনা করেনি। তাদের কি আবার নতুন সেমেস্টার পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিক দিতে হবে?

এই সব প্রশ্নের অনেকাটাই সমধান করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এ প্রসঙ্গে কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বাঞ্ছনীয় এবং সাধুবাদযোগ্য। তবে, কেন প্রায় সব সিদ্ধান্ত এত দেরিতে নেওয়া হচ্ছে! এর ফলে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে কারা নতুন করে ভর্তি হবে তা জানা যাচ্ছে না। নতুন যারা ভর্তি হবে তারাও পিছিয়ে পড়তে পারে।’’

এ বছর আমূল পরিবর্তন হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে। বাংলা, ইংরেজি পাঠ্যক্রমেও বেশ কিছু নতুন গদ্য এবং পদ্য যুক্ত হয়েছে, যা পুরনো পাঠ্যক্রমে ছিল না। অনুত্তীর্ণ যে সমস্ত পড়ুয়া নতুন করে ভর্তি হবে তাদের নতুন ভাবে ওই গদ্য এবং পদ্য পড়তে হবে। এতে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের মনে দ্বন্দ্ব ছিল। যদি কেউ অনুত্তীর্ণ হয় তা হলে সে কোন মাধ্যমে পরীক্ষা দেবে! এই সিদ্ধান্তের পরে তাঁদেরও সুবিধা হল। সিলেবাসে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে সেগুলি একটু পড়তে হবে। সেটা বড় সমস্যা নয়।’’

তবে এই সেমেস্টার পদ্ধতিতে পড়তে না চাইলেও অসুবিধা নেই। শিক্ষা সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনও পড়ুয়া চাইলে ‘অপশন ফর্ম’ পূরণ না করে পুরনো পদ্ধতিতেও পড়তে পারবে।

Advertisement
আরও পড়ুন