WB HS Exam 2025

কড়া নজরদারি সত্ত্বেও মোবাইল-সহ পাকড়াও পরীক্ষার্থী, কেমন হল প্রথম দিনের উচ্চ মাধ্যমিক?

প্রশ্ন ফাঁস রুখতে বিভিন্ন ধরনের কোড ব্যবহার করা হয়েছে। তা পরও বাতিল হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার এক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৮:২৭
HS Exam 2025.

নিজস্ব চিত্র।

পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে রয়েছে রিভার্স জ্যাকেট। এ ছাড়াও কিউআর কোডের সঙ্গে বারকোডও রাখা হয়েছে। তা সত্ত্বেও মেটাল ডিটেকটর মোবাইল ফোনই খুঁজে পেল না। হলে বসে প্রশ্ন অন্যত্র পাঠাতে গিয়ে চলতি বছরের পরীক্ষাই বাতিল হল এক পরীক্ষার্থীর। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির সাগরদত্ত ফ্রি হাই স্কুলে পরীক্ষা চলাকালীন এই ঘটনা ঘটায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জবাবদিহিও চেয়ে পাঠিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

Advertisement

অভিযোগ, বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেকটর থাকলেও তা পরিচালনা করার মত যথাযথ ব্যাটারি না থাকায় সঠিক ভাবে কাজ করছে না। যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে পরীক্ষা শেষে জানানো হয়েছে, সমস্ত স্কুলেই মেটাল ডিটেকটর ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে।

উল্লেখ্য, রিভার্স জ্যাকেটের কারণে প্রশ্নপত্রের প্রথম এবং শেষ পাতা জোড়া অবস্থায় থাকবে, যতক্ষণ না ওই জোড়া অংশটি খোলা হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র পরীক্ষার হল পর্যন্ত যাতে সুরক্ষিত থাকে এবং তা হাতে পেয়েই যাতে ফাঁস না করা যায়, তাই এই জ্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অ্যানালগ বনাম ডিজিটাল ঘড়ি বিভ্রাটের ঘটনাও ঘটেছে প্রথম দিনের পরীক্ষায়। বিভিন্ন স্কুলে পরীক্ষার্থীদের হাত থেকে অ্যানালগ ঘড়ি খুলে দেওয়া হয়েছে, যেখানে নির্দেশিকা ছিল শুধুমাত্র ডিজিটাল ঘড়ি পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। এ ছাড়াও বেশ কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যাগ রাখা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

Higher Secondary Education Council Secretary Priyadarshini Mallick and President Chiranjib Bhattacharya visited the school.

স্কুল পরিদর্শনে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক এবং সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

অন্য দিকে যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে নারায়ণদাস বাঙুর স্কুলে ‘ছিঃ’ লেখা কালো ব্যাজ পরেই শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা পরীক্ষায় গার্ড দেন। প্রসঙ্গত, এই স্কুলের প্রাক্তনী শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। স্কুলের প্রধানশিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাঙ্গনে যে ঘটনা ঘটেছে তা লজ্জার। ব্যক্তি বা দলকে কার‌ও ভাল না লাগলেও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর মর্যাদা ছাত্রদের ভুলে গেলে চলবে না। এ ছাড়াও তিনি আমাদের বিদ্যালয়ের প্রাক্তনীও। তাই প্রতিবাদস্বরূপ স্কুলের সকলেই কালো ব্যাজ পড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।”

প্রথম দিনের পরীক্ষা কেমন হচ্ছে, তা দেখতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক এবং সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য কলকাতার বেশ কিছু স্কুল পরিদর্শন করেন। পরীক্ষার আবহে যাদবপুরকাণ্ড ঘিরে ছাত্র ধর্মঘটের প্রভাব সম্পর্কে সচিবের স্পষ্ট বক্তব্য, পরীক্ষা ভাল ভাবেই শেষ হয়েছে, ধর্মঘটের কোনও প্রভাবই পড়েনি।

এ ছাড়াও প্রথম দিনের পরীক্ষায় বেশ কিছু পরীক্ষার্থী ফটোকপি বা প্রিন্ট করানো অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আসে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে প্রথম দিনের পরীক্ষায় তাদের ছাড় দেওয়া হলেও পরের পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রে সংসদের দেওয়া অ্যাডমিট কার্ডই নিয়ে আসতে হবে।

২০২৫-এ পাঁচ লক্ষ ন’হাজার জন পরীক্ষা দেবে, যেখানে ২০২৪ সালে পরীক্ষা দিয়েছিল সাত লক্ষ ৯০ হাজার জন। এ বার ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা ৪৫ হাজার ৫৭১ জন বেশি বলেও জানা গিয়েছে। মোট ৬২টি বিষয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। তবে, মোটের উপর নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে প্রথম দিনের পরীক্ষা।

Advertisement
আরও পড়ুন