WB HS Toppers 2023

পড়াশোনার ফাঁকে বাবার হোটেলে কাজ করে উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় চন্দ্রবিন্দু

পড়াশোনার ফাঁকে বাবা মায়ের পাশাপাশি চায়ের কাপ নিয়ে ছোটাছুটি, গ্রাহকের পাতে ভাত, তরকারি পৌঁছে দিতেও অভ্যস্ত চন্দ্রবিন্দু।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পূর্ব মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ১৮:২৮
চন্দ্রবিন্দু মাইতি।

চন্দ্রবিন্দু মাইতি। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার ধারে অস্থায়ী কাঠামোর একটি খাবারের হোটেল বাবার। ছেলের ইচ্ছে গবেষক হবেন। ছেলের ইচ্ছা পূরণ করতে কখনও মাকে বিক্রি করতে হয়েছে গয়না। কখনও দিন রাত এক করে হোটেলে কাজ করতে হয়েছে বাবাকে। বাবা-মায়ের এই কঠিন লড়াইকে সার্থক করে তুলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের চন্দ্রবিন্দু মাইতি।

চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় হয়েছেন চন্দ্রবিন্দু। তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছেন। ৪৯৩ পেয়ে মেধাতালিকায় তৃতীয় স্থানে নাম রয়েছে তাঁর। পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত পুরসভার কাছে বাড়ি তাঁর। একটি দরিদ্র পরিবারে বড় হওয়া। বাবা, মা ভাইকে নিয়েই সংসার। চন্দ্রবিন্দু ছোট থেকে মেধাবী হলেও বাড়ির বড় হওয়ায় রয়েছে অনেক দায়িত্বও। পড়াশোনার মাঝেও বাবার কাজে হাত বাড়িয়েছেন। কখনও চায়ের কাপ নিয়ে ছোটাছুটি, কখনও গ্রাহকের পাতে ভাত, তরকারি পৌঁছে দিতেও অভ্যস্ত চন্দ্রবিন্দু।

Advertisement

তবে, এত দূর তো হল। এর পর? চন্দ্রবিন্দুর ইচ্ছে আইআইটিতে পড়াশোনা করবেন। ভবিষ্যতে গবেষক হবেন। এখানেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ছেলেকে পড়াতে গিয়ে প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছেন তাঁর বাবা। হোটেলের সামান্য আয় দিয়ে সংসার খরচ, ২ ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন চন্দ্রবিন্দুর বাবা। পুঁজি বলতে আর কিছু নেই বললেই চলে। ছেলে গবেষক হন বাবারও ইচ্ছা। কিন্তু কী ভাবে হবেন তা নিয়ে দিশাহারা এখন তিনি। এত দিন কখনও ছেলেদের টের পেতে দেননি কী ভাবে চলছে পড়াশোনা ও সংসার খরচ। তবে, উচ্চ মাধ্যমিকে ছেলের নাম তৃতীয় স্থানে দেখে এত দিনের সব কষ্টই যেন মিলিয়ে গিয়েছে। এখন শুধু একটাই চিন্তা। বলা যায়, দুশ্চিন্তাও। কী ভাবে ছেলের গবেষক হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে সাহায্য করবেন সেই ভাবনাতেই উদ্বিগ্ন চন্দ্রবিন্দুর পরিবার।

Advertisement
আরও পড়ুন