Celestial Alignment 2025

রাতের আকাশে ছয় গ্রহের সহাবস্থান! মহাজাগতিক মহালগ্ন নিয়ে বিশেষ আলোচনায় বিআইটিএম

খালি চোখেই গ্রহদের দেখা যাবে। তবে, টেলিস্কোপের সাহায্যে সমস্তটাই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে চোখের সামনে।

Advertisement
স্বর্ণালী তালুকদার
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫৯
Tarun Kumar Das, technical officer of BITM, is explaining the position of the planets in the sky to the students.

(বাঁ দিকে) বিআইটিএম-এর টেকনিক্যাল অফিসার ছাত্রীদের আকাশে গ্রহের অবস্থান বুঝিয়ে দিচ্ছেন। খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে শুক্র গ্রহ (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

রাতের আকাশে তারাদের সঙ্গে গ্রহদেরও দেখার সুযোগ। এমন মহাজাগতিক বিস্ময়ের সাক্ষী থাকবে কলকাতাও। চলতি সপ্তাহে খুদে পড়ুয়াদের এই দৃশ্যই দেখাবে বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়াম। ২১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি দিন বিকেল ৪টে থেকে গ্রহদের এই বিশেষ প্যারেড দেখার সুযোগ থাকছে। এ ছাড়াও প্রতি দিন মহাকাশ বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রদর্শনী চলবে। একই সঙ্গে মিউজ়িয়ামের টেলিস্কোপের সাহায্যে তাদের গ্রহের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করবেন বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর অর্ণব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্কুল স্তরে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের মতো বিষয়ে নিয়মিত ভাবে চর্চা বৃদ্ধি করতেই এই উদ্যোগ। এক‌ই সঙ্গে যাঁরা স্টার গেজ়িং নিয়ে আগ্রহী, তাঁরাও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। অর্ণব আর‌ও বলেন, “সকলের কাছে সহজ ভাবে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের বিষয়টি যাতে বোধগম্য হয়, তার জন্য তিনটি আলাদা টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষণে সহযোগিতা করবেন বিশেষজ্ঞেরা।”

Little ones are keen to see the position of the planets through the telescope.

টেলিস্কোপের মধ্যে দিয়ে গ্রহের অবস্থান দেখতে উৎসাহী খুদেরা। নিজস্ব চিত্র।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সৌরজগতের ছ’টি গ্রহ শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, ইউরেনাস, নেপচুন এবং শনি পৃথিবীর মাটি থেকে খালি চোখেই দেখা যাবে। এ ক্ষেত্রে আকাশ লাইট পলিউশন ফ্রি হওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ, অন্ধকার আকাশে সবচেয়ে ভাল ভাবে গ্রহের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে। এই মহাজাগতিক ঘটনাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘প্ল্যানেটারি অ্যালাইনমেন্ট’ও বলা হয়।

The enthusiasm of the school students was palpable.

স্কুলপড়ুয়াদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। নিজস্ব চিত্র।

সাধারণত রাতের আকাশ থেকে শুক্র বা মঙ্গল গ্রহ খালি চোখে দেখা গেলেও একসঙ্গে ছ’টি গ্রহের সহাবস্থান বিরল ঘটনা। মহাজাগতিক বিষয়বস্তুর প্রতি পড়ুয়াদের উৎসাহ আরও বৃদ্ধি করতে মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষের তরফে একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়েছিল। ওই আলোচনায় উপস্থিত স্কুলপড়ুয়াদের সহজ ভাষায় গল্পচ্ছলে মহাকর্ষ এবং কৃষ্ণগহ্বর (ব্ল্যাক হোল)-এর কার্যপ্রণালী ব্যাখ্যা করেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক রিসার্চের স্কুল অফ ফিজ়িক্যাল সায়েন্সেসের ভিজ়িটিং প্রফেসর পার্থসারথি মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, স্কুল স্তরে মহাজাগতিক বিষয়বস্তু নিয়ে আর‌ও বেশি চর্চার প্রয়োজন রয়েছে।

নাদিয়াল হাই স্কুল ও নারকেলডাঙা হাই স্কুলের ২৫০ জন পড়ুয়া এবং সিটি কলেজের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক, পড়ুয়া-সহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা ওই আলোচনা সভা এবং মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য মিউজ়িয়ামে উপস্থিত ছিলেন। কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান অরিন্দম রাণা জানিয়েছেন, মহাকাশ পর্যবেক্ষণের খুঁটিনাটি পাশাপাশি ব্ল্যাক হোলের মতো বিষয়ে সবিস্তার আলোচনা পড়ুয়াদের অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে।

Prof. Parthasarathy Mazumdar in discussion with the students.

পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় প্রফেসর পার্থসারথি মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।

বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ামের টেকনিক্যাল অফিসার তরুণকুমার দাস জানিয়েছেন, সহজ ভাবে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই ব্যাখা করা হচ্ছে, যে গ্রহের অবস্থান থাকবে সরলরেখায়। আসলে কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই উল্টো। একটি অর্ধচন্দ্রাকৃতি কাল্পনিক রেখায় এই ছ’টি গ্রহকে দেখা যাবে। কক্ষপথে গ্রহের অবস্থানের পরিবর্তনের কারণেই পৃথিবীর মাটি থেকে এই গ্রহগুলি রাতের আকাশে দৃশ্যমান হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন