WBBSE Madhyamik 2023 Toppers

জেলার তাকলাগানো কৃতিদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে মালদহের অনুশ্রেয়া দাস, কোন পথে এল সাফল্য?

মোট ২১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে রাজ্যের সেরা দশের মেধাতালিকায়। সেই তালিকায় রয়েছে অনুশ্রেয়ার নামও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ১৭:২৩
কৃতিদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে মালদহের অনুশ্রেয়া দাস।

কৃতিদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে মালদহের অনুশ্রেয়া দাস। নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার সকাল ১০টায় এ বছরের মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের ঠিক পরেই জানা যায় বিভিন্ন স্থানাধিকারীর নাম। রেজাল্ট ঘোষণা করেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর মোট পাশের হার কমলেও মেয়েরা ছাপিয়ে গিয়েছে ছেলেদের। কলকাতার তুলনায় এগিয়ে রয়েছে জেলার ছেলেমেয়েরাই। এর মধ্যে মালদহ জেলার সাফল্য নজরকাড়া। সেই জেলার মোট ২১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে রাজ্যের সেরা দশের মেধাতালিকায়। সেই তালিকায় রয়েছে অনুশ্রেয়ার নামও।

অনুশ্রেয়া দাস। চঞ্চল রানী দাক্ষায়ণী গার্লস হাই স্কুল থেকে রাজ্যে পঞ্চম স্থানাধিকারীর মধ্যে যুগ্ম ভাবে নিজের স্থান অর্জন করে নিয়েছে। গোটা রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে সে হয়েছে চতুর্থ। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। পরীক্ষা ভালই হয়েছিল। ভাল ফলেরও প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু অনুশ্রেয়ার আশা করেনি, এ বছর মেধাতালিকার সে জায়গা করে নেবে। এই ফলে ভীষণ ভাবে খুশি তার বাবা-মাও। স্কুলে বরাবর ভাল ছাত্রী হিসাবে পরিচিত হলেও, তাঁদেরও ভাবনাতীত মেয়ের এমন সাফল্য!

Advertisement

এমন সাফল্যের পিছনে কতটা প্রস্তুতি ছিল? অনুশ্রেয়া জানাচ্ছে, প্রতি বিষয়েই গৃহশিক্ষক ছিলেন। স্কুল এবং গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া ছাড়া নিজে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘন্টা সে পড়াশোনা করত। খুঁটিয়ে পড়েছিল পাঠ্যবই। অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য নিয়েছিল সহায়ক বইয়েরও। তার মতে, পাঠ্যবই পড়ার উপর জোর দিলে এবং শিক্ষকদের কথা শুনলেই পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা সম্ভব।

মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০২৩ ফলাফল

  • Roll Number*

  • Date of Birth*

রেজাল্ট ঘোষণার পর অনুশ্রেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অসীমা ত্রিবেদী বলেন, ‘‘অনুশ্রেয়া বরাবরই মেধাবী ছাত্রী। স্কুলের শিক্ষকদের তরফে ওর প্রতি সব সময় আলাদা নজর ছিল। নিজেরও চেষ্টা ছিল। সব মিলিয়েই সে সফল হয়েছে।”

তবে শুধুই কী এত পড়াশোনা চলত দিনরাত? অবসরে কী করতে ভালবাসে মালদহের এই মেয়ে? সে জানাচ্ছে, সে আঁকতে ভালবাসে। আর স্বপ্ন দেখে চিকিৎসক হওয়ার, গরিব মানুষের চিকিৎসা করে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করার।

অনুশ্রেয়ার সাফল্যে গর্বিত মা জানাচ্ছেন, মেয়েকে কখনও পড়ার জন্য তাঁকে বলতে হয়নি। সারা ক্ষণ বই নিয়ে থাকতেই পছন্দ করত তাঁর মেয়ে। মেয়েকে তাই অন্য কোনও কাজও তিনি করতে দিতেন না। যাতে অন্য কোনও কাজে তাঁর মেয়ের পড়াশোনা বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সে জন্য ঘরের সব কাজই সামলেছেন তিনি।

অনুশ্রেয়ার বাবা অভিজিৎ দাস সীমা সুরক্ষা বলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। মেয়ের সাফল্যে যারপরনাই খুশি তিনিও। মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে দূরে রেখেছেন নিজের শখ-আহ্লাদও। তবে এত আনন্দের মাঝেও কপালে চিন্তার ভাঁজ তাঁর। অবসরগ্রহণের পর সামান্য পেনশনের টাকা দিয়ে মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন তো? কিন্তু পর ক্ষণেই মন শক্ত করে নিয়ে জানাচ্ছেন, বাবা হয়ে মেয়ের স্বপ্ন যে তাঁকে পূরণ করতেই হবে! তাঁর জন্য যে কোনও বাধা পেরোতেই তিনি প্রস্তুত।

Advertisement
আরও পড়ুন