Flat

আবাসন ক্ষেত্রে ধাক্কা, শুধু কলকাতায় ফ্ল্যাট-বাড়ি বিক্রি কমল ২০ শতাংশ!

সমীক্ষা বলছে, সব মিলিয়ে ২০২৪ সালে দেশের প্রথম সারির সাত শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ি বিক্রি কমেছে ৪%। শীর্ষে কলকাতা, বিক্রি কমেছে ২০ শতাংশের বেশি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৭
বিক্রি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেঙ্গালুরুতে। তা-ও মাত্র ২%।

বিক্রি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেঙ্গালুরুতে। তা-ও মাত্র ২%। —প্রতীকী চিত্র।

চড়া সুদের কারণে মাসিক কিস্তির খরচ বৃদ্ধি এবং ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্তের আগ্রহ হারানো— এই দুই কারণে চলতি বছর খুব একটা ভাল যায়নি আবাসন ক্ষেত্রের। এই সময়ে মূলত চাহিদা কমেছে সাধ্যের ফ্ল্যাট-বাড়ির। তবে টাকার অঙ্কে সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়েছে বেশি দামের ফ্ল্যাটের চাহিদা। আবাসন উপদেষ্টা অ্যানারকের সমীক্ষা বলছে, সব মিলিয়ে ২০২৪ সালে দেশের প্রথম সারির সাত শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ি বিক্রি কমেছে ৪%। শীর্ষে কলকাতা, বিক্রি কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। সব ধরনের আবাসন মিলিয়ে বিক্রি হয়েছে ১৮,৩৩৫টি। গত বছর ছিল ২৩,০৩০টি। এর পর রয়েছে চেন্নাই, দিল্লি ও পুণে। বিক্রি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেঙ্গালুরুতে। তা-ও মাত্র ২%।

Advertisement

অ্যানারক জানিয়েছে, আবাসনের দাম গত এক বছরে গড়ে ২১% বেড়েছে। ফলে টাকার অঙ্কে বিক্রি বেড়েছে ১৬%। হিসাব বলছে, ৪.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে তা পৌঁছেছে ৫.৬৮ লক্ষ কোটিতে। কিন্তু সংখ্যার বিচারে ২০২৩-এ মোট আবাসন বিক্রি হয়েছিল ৪.৭৬ লক্ষের কিছু বেশি। সেটা কমে হয়েছে প্রায় ৪.৫৯ লক্ষ। ক্রেডাই ওয়েস্ট বেঙ্গলের সভাপতি তথা মার্লিন গোষ্ঠীর কর্ণধার সুশীল মোহতা বলেন, “কলকাতায় গত এক-দু’বছরে আবাসন ক্ষেত্রে বড় বদল এসেছে। আগে এই শহরে যেখানে সাধ্যের আবাসন বেশি বিক্রি হত, সেখানেই এখন বিলাসবহুলের চাহিদা বেশি।’’ সেই সঙ্গে রাজ্যের স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে জানান তিনি। সুশীলের মতে, এর ফলে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে আবাসন বিক্রি ধাক্কা খেয়েছে। তবে আশা বাজার স্থিতিশীল হলে ২০২৫ সালে এই সমস্যা কাটিয়ে এগোনোর সুযোগ পাবে আবাসন ক্ষেত্র।

অ্যানারকের চেয়ারম্যান অনুজ পুরী অবশ্য বলছেন, “এ বছর লোকসভা ভোটের পাশাপাশি একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ছিল। তার কারণেই আবাসনের চাহিদা ধাক্কা খেয়েছে। তারই প্রভাব দেখা যাচ্ছে।” তবে সাধ্যের আবাসন বিক্রি কমা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনিও। তাঁর মতে, এটা বড় চিন্তার বিষয়। সমীক্ষায় অ্যানারক বলেছে, চড়া সুদ ও সাধারণ মানুষের হাতে যথেষ্ট নগদ না থাকার কারণেই আসাবনের চাহিদায় ধাক্কা লেগেছে। পাশাপাশি, বিলাসবহুল আবাসনের দিকে ঝুঁকছেন মানুষ। সেটাও বিক্রি কমার একটি বড় কারণ। যে কারণে সুদের হার নিয়ে নতুন বছরে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তের উপরে এই ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। কারণ, শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমালে ব্যাঙ্কগুলিও সেই পথে হাঁটতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাথা নামাবে মাসিক কিস্তি। ফলে বাড়তে পারে আবাসনের বিক্রি।

ইডেন রিয়েলটির যুগ্ম এমডি কুমার সাত্যকি, সিদ্ধা গোষ্ঠীর এমডি সঞ্জয় জৈন এবং পূর্তি রিয়েলটির এমডি মহেশ আগরওয়াল এই অবস্থায় ২০২৫ সালের দিকেই তাকিয়ে থাকার কথা বলছেন। তাঁদের মতে, এ বছরে চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি থাকা, চড়া সুদ এবং কাঁচামালের দর বিক্রিতে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু বিলাসবহুল এবং পরিবেশবান্ধব বাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি, ক্রেতাদের বাজেট বাড়ায় পরের বছর টাকার অঙ্কের দিক দিয়ে বিক্রির হাল ফিরবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement
আরও পড়ুন