Behala Road Accident

বোধোদয় কবে হবে

কেবল পুলিশ প্রশাসনই নয়, জনসাধারণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যে সব কর্তৃপক্ষ দায়বদ্ধ, তাঁরা একটা প্রাণ না যাওয়া পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেন না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৩ ০৪:৩৯
বেহালায় দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ।

বেহালায় দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ। —ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি বেহালার পথ-দুর্ঘটনায় স্কুলপড়ুয়া সৌরনীলের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করতে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির সামনে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হলেও, বাংলা মাধ্যম স্কুলের সামনে তেমনটা করা হয় না। এই অভিযোগের উত্তরে সে দিন টিভিতে কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য শুনে বিস্মিত হলাম। তাঁর বক্তব্য, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়া আসে অভিভাবকদের গাড়ি চড়ে। স্কুলের সময় স্কুলের সামনে যাতে যানজট না হয়, সে জন্য বেশি সংখ্যায় পুলিশ মোতায়নের প্রয়োজন হয়। আর ট্র্যাফিক পুলিশের কাজ তো ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা। প্রশ্ন হল, তা হলে পথচারীদের নিরাপদে পথ চলা বা বা রাস্তা পারাপার করানোর দায় কার উপর বর্তায়? সেটা যদি ট্র্যাফিক পুলিশের দায়িত্বের বাইরে থাকে, তবে সে দিন দুর্ঘটনার অব্যবহিত পরে পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের ব্যবস্থা করতে পুলিশ কেন মহা তোড়জোড় শুরু করে দিল? পুলিশের এই হুঁশ ফেরাতে প্রয়োজন হল এক স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যুর?

Advertisement

আসলে কেবল পুলিশ প্রশাসনই নয়, জনসাধারণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যে সব কর্তৃপক্ষ দায়বদ্ধ, তাঁরা একটা প্রাণ না যাওয়া পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেন না। এই সূত্রে বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা উল্লেখ করি। হাওড়া ব্রিজ-এর মাঝে কোথাও কোথাও একটা মানুষ গলে গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ার মতো ফাঁক ছিল। কর্তৃপক্ষের নজর কাড়ার জন্য অনেক লেখালিখি হয়, কিন্তু তা তাঁদের কানে ঢোকেনি। এক দিন এক যুবক ওই রকম একটা ফাঁক দিয়ে গঙ্গায় পড়ে যাওয়ার পরে ফাঁকগুলো ঢেকে দেওয়া হয় ইস্পাতের প্লেট দিয়ে। এই সব ঘটনা প্রমাণ করে, যাঁরা জন-নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, তাঁরা কতটা দায়িত্ববোধহীন। এঁদের বোধোদয় ঘটাতে পারে কেবল সাধারণ নাগরিকের অসহায় মৃত্যু!

নিখিল সুর, কলকাতা-৩৪

বিদ্যুতের তার

‘টিনে ঝুলন্ত তার জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু কিশোরের’ (৪-৮) খবরের এক জায়গায় লেখা হয়েছে সিইএসসি-র একটি সাব-মিটার বক্স থেকে কয়েকটি বাড়িতে টানা বিদ্যুতের তার রাস্তায় ঝুলছিল। প্রথমত, এটা পরিষ্কার করে দিতে চাই যে ওই জায়গায় সিইএসসি-র কোনও সাব-মিটার বক্স নেই, যেখানে ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। দ্বিতীয়ত, খবরটি পড়ে মনে হচ্ছে, আমরাই ওই তারগুলি টেনে ওই সাব-মিটার বক্স থেকে কয়েকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছি। যদিও এটা ঠিক নয় এবং সংশ্লিষ্ট তারগুলি গ্রাহকদেরই বসানো, সিইএসসি-র দ্বারা নয়। বস্তুত, এই তথ্যটি আমাদের মুখপাত্রের তরফ থেকে কথোপকথনের সময়ে আপনাদের প্রতিবেদককে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের একান্ত অনুরোধ সংবাদপত্রে যত শীঘ্র সম্ভব সঠিক তথ্যগুলি ছাপা হোক।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন

প্রতিবেদকের উত্তর: প্রথমত, প্রতিবেদনের তৃতীয় অনুচ্ছেদে যে অংশটি নিয়ে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ আপত্তি তুলেছেন, সেটা পুরোটাই পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত বলে লেখা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, সিইএসসি-র ওই জায়গায় কোনও সাব-মিটার নেই বলে যে দাবি করা হয়েছে, সেটা ঠিক। কারণ ওই জায়গায় সিইএসসি-র নিজস্ব মিটার রয়েছে। সাব-মিটার নয়। মিটারের জায়গায় সাব-মিটার লেখা আমাদের অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। এ জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। তবে সিইএসসি-র ওই মিটার থেকে অজস্র বাড়িতে যখন এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই বিদ্যুতের খোলা তার মাথার উপর দিয়ে টেনে নিয়ে গিয়েছেন, তখন তা নজরদারির দায় কার? সিইএসসি-র নয়? এ ভাবে কি ৫০টির বেশি বাড়িতে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ টানতে দেওয়া যায়? ঘটনার দিন সিইএসসি-র দুই মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তাঁরা কোনও উত্তর দিতে পারেননি। শুধু দায়সারা ভাবে জানান, ওই বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

তৃতীয়ত, সিইএসসি দাবি করেছে, প্রতিবেদনে যে লেখা হয়েছে “রাস্তায় সিইএসসি-র একটি সাব-মিটার বক্স থেকে কয়েকটি বাড়িতে টানা বিদ্যুতের তার ঝুলছিল।”— তা থেকে মনে হচ্ছে সিইএসি-র (সাব) মিটার বক্স থেকে সিইএসসি নিজেই এলাকার বাড়ি বাড়ি বিদ্যুতের তার টেনে দিয়েছে। এখানে কোথাও তো লেখা হয়নি যে, সিইএসসি-ই ওই তার টেনে দিয়েছিল। তা হলে?

তাঁদের বক্তব্য, এ বিষয়ে ‘প্রতিবেদককে বিস্তারিত বলা হয়েছিল’। ঠিকই বলেছেন ওঁরা। জেনেছিলাম বলেই তাঁদের বক্তব্য লেখা হয়েছিল এবং এ-ও লেখা ছিল, ওই মিটার থেকে গ্রাহকরা তার টেনে আলো জ্বালান।

অসুরক্ষিত

“পশ্চিমবঙ্গে তথ্য কমিশনের ‘ত্রুটি’ মানেন না সাকেত” (১৬-৭) প্রসঙ্গে একটি অভিজ্ঞতার কথা জানাতে চাই। ২০১৯ সালের জুন মাসে কালনা-১ নম্বর ব্লকে অবস্থিত আমাদের যে জমি আছে, তার ভাগ সংশ্লিষ্ট বর্গাদার সঠিক ভাবে না দেওয়ায় কালনা-১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দফতরে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। কিন্তু সেখানে কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায়, ২০২১ সালের অগস্টের শেষে বিষয়টি জেলাশাসক পূর্ব বর্ধমানকে জানাই। কিন্তু তিনিও এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ায়, ‘তিনি এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা করেছেন’, তা জানতে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে একটি তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে দরখাস্ত করি। এটি প্রথমে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দফতরে প্রত্যর্পণ করা হয়। কিন্তু তিনি এটা আবার ওই কালনা-১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের দফতরে উত্তর দেওয়ার জন্য পাঠান। এর পরেও কয়েক বার অভিযোগ করলেও, ওই দফতর তার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। আপিল করলেও সদুত্তর না দেওয়ায় গত বছর জুলাইয়ে পুনরায় রাজ্য তথ্য কমিশনে আপিল করি।

এই বিষয়ে রাজ্য তথ্য কমিশন দীর্ঘ দিন পরে, গত মে মাসে শুনানির দিন স্থির করে। কালনা-১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককেও শুনানিতে যোগ দিতে বলা হয়। শুনানিতে ওই আধিকারিককে চার সপ্তাহের মধ্যে উত্তর দিতে আদেশ করা হয়। এর পর গত জুলাইতে একটি রায়দানে বলা হয়, যে-হেতু ওই আধিকারিক শেষ পর্যন্ত উত্তর দিয়েছেন, তাই এই বিষয়ে মামলা নিষ্পত্তি হল। এখানে উল্লেখ করি, ওই আধিকারিক যে গত দেড় বছর ধরে কোনও উত্তর দেননি, তথ্য অধিকার আইন ২০০৫ ভঙ্গ করেছেন, সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত রাজ্য তথ্য কমিশন নেয়নি। আরও বলি, যে উত্তর ওই আধিকারিক দেন, তা সত্য নয়।

তথ্যের অধিকার আইন অনুযায়ী, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উত্তর না দেওয়া এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য বা মিথ্যাচার করা, সকলই সমান ভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ঘটনাচক্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য তথ্য আধিকারিক, যিনি এক জন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার ছিলেন, তিনি এ রকম রায় দেন। সুতরাং, যে তড়িঘড়ি রায়দান করা হয়েছিল, তার ফলে আমার বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আশ্চর্য লাগে, এই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা যদি এমন রায়দান করেন, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?

চামেলী কোলে, নবদ্বীপ, নদিয়া

পুরনো রুট

কয়েক বছর আগে সবার অজানতে হঠাৎ ৭৭এ বাস রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। ধর্মতলা থেকে অছিপুর পর্যন্ত রুটে চলত বাসটি। এখনও আমরা আশাবাদী, রুটটি আবার চালু করা হবে। মাঝে শোনা গিয়েছিল রুটটি চালু হওয়ার কথা। কিন্তু আজ অবধি তা হয়নি। সরকারের কাছে আবেদন, যাত্রীদের স্বার্থে এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হোক।

অরুণাভ বাগ, কলকাতা-৬১

আরও পড়ুন
Advertisement