Voting System

সম্পাদক সমীপেষু: অহিংস ভোট

আমাদের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে বেশ কিছু মানুষ থাকবেন, যাঁরা কম্পিউটার সাক্ষর নন। তাঁদের জন্য বায়োমেট্রিক ভোটগ্রহণ পদ্ধতির প্রচলন করা যেতে পারে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৫:৫৭
An image of Vote

—প্রতীকী চিত্র।

আমরা আর কত দিন ভোটের নামে এই প্রহসন ও সন্ত্রাস মুখ বুজে সহ্য করে যাব? বিকল্পের রাস্তা আমাদেরই খুঁজে বার করতে হবে। এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে, ভোটগ্রহণ পদ্ধতির অবিলম্বে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। দু’টি আধুনিক ও অভিনব পদ্ধতির শরণাপন্ন হওয়া যেতেই পারে। অনলাইনে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত পোর্টালে লগ ইন করে ভোট প্রদান করা যেতে পারে। বর্তমানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ স্মার্টফোন ব্যবহারে পারদর্শী। তাঁদের কাছে এটি খুব কঠিন কাজ হবে না। বরং, নির্ভয়ে তাঁরা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে সক্ষম হবেন। চিরাচরিত ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়, তার থেকেও অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যাবে বলেই আমার ধারণা। এ ক্ষেত্রে, হিংসা ও সন্ত্রাসকে সহজেই প্রতিহত করা যাবে। একমাত্র কিছুটা ভীতি থাকবে সাইবার হ্যাকারদের নিয়ে। সেটাও এড়ানো সম্ভব হবে এনক্রিপশন বা পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত উচ্চমানের কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে।

এর পরেও, আমাদের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে বেশ কিছু মানুষ থাকবেন, যাঁরা কম্পিউটার সাক্ষর নন। তাঁদের জন্য বায়োমেট্রিক ভোটগ্রহণ পদ্ধতির প্রচলন করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি ইভিএম-এর সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে হবে একটি বায়োমেট্রিক যন্ত্র। আধার কার্ডে সঞ্চিত আঙুলের প্রতিলিপি বা চোখের মণির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে ওই ইভিএমকে সক্রিয় করতে। সঠিক সাদৃশ্য পেলে তবেই ভোটিং মেশিনটি চালু হবে এবং ভোটপ্রদান সম্ভব হবে। জাল ভোটার এলে তার ভোট মেশিন গ্রহণ করবে না। সম্প্রতি, আফ্রিকার কিছু রাষ্ট্রে, এই অভিনব প্রক্রিয়া জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করছে। আমাদের দেশে ভোটগ্রহণ ও ভোটপ্রদান প্রক্রিয়াকে দূষণমুক্ত করতে এই প্রস্তাবিত পদ্ধতির রূপায়ণ বাঞ্ছনীয়।

Advertisement

আমাদের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত দেশে, যেখানে প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলই গুন্ডাবাহিনী কাজে লাগিয়ে স্বার্থ চরিতার্থ করতে বদ্ধপরিকর, সেখানে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে অহিংস ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে উপরোক্ত দু’টি বিকল্পের আশ্রয় নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হয়। ইতিমধ্যেই, রেশন বিলি-র প্রক্রিয়াকে আমরা আঙুলের স্পর্শের মাধ্যমে চালু করতে সফল হয়েছি। কাজেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পঞ্চায়েত ভোটের দুঃস্বপ্নকে ঝেড়ে ফেলে, দেশের জনস্বার্থে ও একটি সুষ্ঠু ও নির্ভেজাল ভোটপ্রক্রিয়া চালু করতে, অদূর ভবিষ্যতে অনলাইন ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিরই দ্বারস্থ হতে হবে।

শান্তনু ঘোষ, শিবপুর, হাওড়া

দুর্নীতি-অভিযোগ

আপনাদের সংবাদপত্রে প্রকাশিত ‘হাসপাতালে দুর্নীতির তদন্ত কমিটিকে ছত্রখান করে চুপ স্বাস্থ্য ভবন’ (৩-৭), ‘কাউন্সেলিং থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের ফেল করানো, রহস্য সর্বস্তরে’ (৪-৭) এবং ‘দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে ফের বিদ্ধ আর জি কর’ (১৫-৭) শীর্ষক খবরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে আমার বদনাম করার চেষ্টা করেছেন প্রতিবেদক। তিনি এই তিন দিন ধরে আমার এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং মনগড়া খবর প্রচার করেছেন।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত এক অন্য তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে, যা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। এও দাবি করা হয়েছে যে, শিক্ষা সংক্রান্ত তহবিলের অর্থব্যয় অনিয়মিত হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করি, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং এখানকার সমস্ত আর্থিক লেনদেন বছরে দু’বার করে স্বাস্থ্য ভবন এবং এক বার কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (এজি), বেঙ্গল করে থাকেন। ফলে বর্তমানে এই মেডিক্যাল কলেজে কোনও রকম অনিয়মিত আর্থিক লেনদেন, ক্রয় সংক্রান্ত ক্ষেত্রে অনিয়ম অথবা অন্য কোনও রকম কারচুপির প্রশ্নই ওঠে না।

আমি সত্যিই অবাক যে, এত নামকরা একটি দৈনিক সংবাদপত্রে এ ভাবে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।

সন্দীপ ঘোষ,অধ্যক্ষ, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা-৪

প্রতিবেদকের উত্তর: কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের প্রতিবাদ পত্র প্রসঙ্গে তাঁকে জানাই, এই সংক্রান্ত বিপুল তথ্য ও নথি আনন্দবাজার-এর হাতে আছে এবং তার ভিত্তিতেই প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ তারিখ ধরে লেখা রয়েছে। ২০২২ সাল থেকে তাঁর বিরুদ্ধে যত রকম অভিযোগ জমা পড়েছে (হাসপাতালের কর্তা থেকে শুরু করে ভেন্ডার, স্টল মালিক— সকলের) তার সব নথি আনন্দবাজার-এর কাছে মজুত। তাঁর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতরে তদন্ত রিপোর্ট জমার দু’টি তারিখ জানাচ্ছি। প্রথমটি ১৭ মার্চ ২০২৩, দ্বিতীয়টি ২০ মার্চ ২০২৩।

এর পাশাপাশি আর জি কর-এর প্রাক্তন ডেপুটি সুপার এবং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে কর্মরত আখতার আলি একাধিক বার তাঁর বিরুদ্ধে মৌখিক ও লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমেও তিনি খোলাখুলি হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘মনগড়া’ বলার আগে সন্দীপ ঘোষ তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সে সব মিথ্যা বলে প্রমাণ করতে পারেন। মানহানি হচ্ছে মনে করলে এখনও পর্যন্ত তিনি আখতার আলির বিরুদ্ধে থানায় কোনও অভিযোগ করেননি কেন? প্রসঙ্গত, আখতার আলি ইতিমধ্যে সন্দীপ ও আর জি কর-এর আরও কয়েক জন কর্তার বিরুদ্ধে নাম করে গত ১৩ জুলাই ডিআইজি (দুর্নীতি দমন শাখা) এবং ১৪ জুলাই স্টেট ভিজিল্যান্স কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার প্রেক্ষিতে গত ২০ জুলাই ডিআইজি (দুর্নীতি দমন শাখা) রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবিলম্বে তদন্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কি সন্দীপ ঘোষের মানহানি হচ্ছে না? না কি তিনি এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে লেখা হোক, সেটাই চাইছেন না?

এই প্রসঙ্গে জানাই, ভিজিল্যান্স কমিশনে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে আখতার আলি আরও একটি পুরনো ভিজিল্যান্স অর্ডারের কথা উল্লেখ করেছেন। সেটি সন্দীপ ঘোষ ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল বলে খবর। কোনও অজানা কারণে এই তদন্ত শুরু হয়েও মাঝপথে থমকে যায়।

সন্দীপ ঘোষের দাবি, অ্যাকাডেমিক ফান্ডে কোনও গরমিল হয়নি এবং আর জি কর-এ বেসরকারি ও সরকারি অডিট একে ছাড়পত্র দিয়েছে! যদি অ্যাকাডেমিক ফান্ড থেকে পূর্ত দফতরের কাজ, জিম তৈরি, যন্ত্রপাতি কেনা ইত্যাদি হয়, এবং যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টস অফিসার ‘ওটা ঠিক হচ্ছে না’ বলে সরকারি নথিতে লিখিত ভাবে নোট দেন, তা হলে কী ভাবে তা অডিটের ছাড়পত্র পেতে পারে! সে ক্ষেত্রে তো অডিট নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয় এবং খবরের নতুন অভিমুখ তৈরি হয়। আশা করা যায়, স্বাস্থ্য দফতর এ দিকেও আলোকপাত করবে।

টিকিট কাউন্টার

হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনে ভদ্রেশ্বর স্টেশনের পশ্চিম দিকে আপ প্ল্যাটফর্মের পাশের টিকিট কাউন্টারটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ। ফলে, স্টেশনের পূর্ব দিকে ডাউন প্ল্যাটফর্মের পাশের টিকিট কাউন্টারে মাঝে মাঝে লম্বা লাইন পড়ে। এর জন্য যাত্রীরা অনেক সময় নির্ধারিত ট্রেন ধরতে পারেন না। পশ্চিমের টিকিট কাউন্টারটি খোলা থাকলে পূর্ব দিকের কাউন্টারে লম্বা লাইন এড়ানো সম্ভব হবে। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, দ্রুত পশ্চিম দিকে আপ প্ল্যাটফর্মের পাশের কাউন্টারটি খোলা হোক।

কালীশঙ্কর মিত্র ভদ্রেশ্বর, হুগলি

আরও পড়ুন
Advertisement