Indian Railways

সম্পাদক সমীপেষু: খারাপ খাবার

অবাক হলাম মোগলসরাই, বর্তমানে দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনেও কিছু পাওয়া গেল না। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ, খাবারের মান এবং পরিমাণের দিকে দৃষ্টি দিন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৪২

—ফাইল চিত্র ।

গত মার্চের শেষে আমরা সাত জন অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকর্মী নৈনীতালের উদ্দেশে লালকুয়াঁ এক্সপ্রেসে চেপে রওনা হই। বহু দিন পর ট্রেনে এমন দূরপাল্লার যাত্রা করলাম। আগে দূরপাল্লার যাত্রার অন্যতম আকর্ষণ থাকত বিভিন্ন স্টেশন থেকে মাটির ভাঁড়ের চা আর নানা রকম খাবার। কিন্তু এ বার দেখলাম ভাঁড়ের চা একেবারেই পাওয়া গেল না। দশ টাকার বিনিময়ে কাগজের কাপে যে চা বিক্রি হচ্ছিল, তা চিনির শরবত ছাড়া আর কিছু নয়। লিকার চা ছিলই না। এর পর আসি দুপুর ও রাতের ভোজনের কথায়। আমরা আইআরসিটিসি থেকে ভেজ-মিল অর্ডার করেছিলাম। এ ক্ষেত্রে ভেজ-মিল মেলে দু’রকমের। আলু ছোলার তরকারি হলে ৯০ টাকা, আর পনিরের তরকারি নিলে ১১০ টাকা। মিল-এ থাকে ভাত, ডাল, তরকারি, চারটে রুটি আর তিনটে শসার কুচি। ডালের যা পরিমাণ তাতে পুরো ভাত খাওয়া যায় না আর তরকারির যা পরিমাণ তা দিয়ে চারটে রুটি খাওয়া যায় না। সবচেয়ে বড় কথা সব ক’টিই স্বাদহীন। যাওয়ার সময় অর্ধেক খাবার ফেলে দিয়ে কোনও রকমে চালিয়ে নেওয়া গিয়েছিল, যে-হেতু আমাদের সঙ্গেও কিছু শুকনো খাবার ছিল। ফেরার সময়ের অভিজ্ঞতা ছিল আরও ভয়াবহ। বরেলী থেকে অকাল তখ্‌ত এক্সপ্রেস ধরেছিলাম কলকাতায় ফিরতে। বরেলী স্টেশনের এসি ওয়েটিং রুমের লাগোয়া রেলওয়ে স্বীকৃত রেস্তরাঁ থেকে সাতটা নিরামিষ মিল নিই। দাম এবং পরিমাণ একই। তবে এ বার খাবারের সিল খুলতেই বাজে গন্ধ নাকে আসে। তরকারি এবং ডাল দুটোতেই ছিল গন্ধ। যথারীতি, গোটা খাবারটাই ফেলে দিতে হল। ফেরার সময়ে বিস্কুট ছাড়া আর কিছু ছিল না সঙ্গে। আগেও বহু বার এক-রাত, দু’রাতের ট্রেন ভ্রমণ করেছি, কিন্তু কখনও এ রকম খাবারের কষ্ট পাইনি। প্যান্ট্রি কারের খাবার না খেলেও স্টেশনের সুস্বাদু পুরি-সব্জি বা শিঙাড়া খেয়েছি।

Advertisement

অবাক হলাম মোগলসরাই, বর্তমানে দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনেও কিছু পাওয়া গেল না। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ, খাবারের মান এবং পরিমাণের দিকে দৃষ্টি দিন। রেলের বাকি পরিষেবার উন্নতি চোখে পড়ল বটে— দফায় দফায় কামরা এবং শৌচাগার পরিষ্কার করা, জলের কোনও অভাব না থাকা, যে কোনও সমস্যায় ফোন করলেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে লোক চলে এসে সমস্যার সমাধান করে দেওয়া। তা হলে, খাবারের ক্ষেত্রে কেন এমন ভয়ঙ্কর অবহেলা?

সুগত বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি

বিপন্ন সরোবর

প্রায় ১৯২ একর জায়গার ৭৩ একর অঞ্চল জুড়ে দক্ষিণ কলকাতায় বিস্তৃত আছে রবীন্দ্র সরোবর বা ঢাকুরিয়া লেক। লেকটির বিস্তার এত ব্যাপক হওয়া সত্ত্বেও যথাযথ পরিচর্যার অভাবে তা আজ সঙ্কটের মুখে। রবীন্দ্র সরোবরের জলস্তর ক্রমাগত নিম্নমুখী। ইতিমধ্যেই লেকের ধারের দিকের জলস্তর দু’-তিন হাতের বেশি নয় যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। এখানে একমাত্র জলের জোগান দেয় বৃষ্টি। দুঃখের বিষয়, এই বছর এল নিনো-র প্রভাবে বৃষ্টি কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে জলস্তর বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনাই নেই। শুধু তা-ই নয়, প্রতি বছরই তাপমাত্রা তার নয়া রেকর্ড তৈরি করছে। ভয়াবহ দাবদাহের সম্ভাবনা এ বারও প্রবল। পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন ২০২৩-এর মতো এ বছরও জলস্তর বেশ কিছুটা নামবে। যত দিন যাচ্ছে, পাড় থেকে অনেকটা গভীর পর্যন্ত এলাকা শুকিয়ে যাচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে এত দিনের পুরনো জলাশয়টি এক দিন হয়তো হারিয়েই যাবে। পূর্ব ভারতের রোয়িং সংগঠনগুলির মধ্যে ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবের স্থান অনেক উপরে হলেও এই জলস্তরে রোয়িং করা যাবে কি না, সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠছে। আগে আদি গঙ্গার সঙ্গে এই লেকটি যুক্ত থাকায় জলের অভাব হয়নি কোনও দিনই। তবে মেট্রো রেলের কাজের সুবিধার্থে গঙ্গা থেকে পৃথক হয়ে যায় সরোবরটি। এ ছাড়া, আবর্জনা ফেলা রবীন্দ্র সরোবরের অবক্ষয়ের অন্য সমস্যা। লেকটির বিপুল ক্ষতি হওয়ার আগে দ্রুত এর পরিচর্যার দিকে নজর দিক প্রশাসন।

সঙ্গীতা কর্মকার, শ্রীরামপুর, হুগলি

গ্রাহক অবান্ধব

সুন্দরবনের অন্যতম একটি পুরনো রাষ্ট্রায়ত্ত শাখা ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে এটি পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক-এ রূপান্তরিত। এটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্তর্গত মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকের রায়দিঘি বাজারে ও সুন্দরবনের মণিনদী সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ও ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া-র মতো দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থাকলেও হালের পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের গ্ৰাহক সংখ্যা ঈর্ষণীয়, যে-হেতু এলাকার সবচেয়ে পুরনো ব্যাঙ্ক এটি। সংশ্লিষ্ট মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লক ছাড়াও লাগোয়া কুলতলি ও পাথরপ্রতিমা ব্লক এবং প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বিরাট অংশের মানুষের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এই ব্যাঙ্কে। এখানে তুলনামূলক ভাবে অনেক পরেই স্বয়ংক্রিয় পাসবই প্রিন্টিং মেশিন এসেছে। এর পর সম্প্রতি স্বয়ংক্রিয় ক্যাশ ডিপোজ়িট মেশিনও বসেছে। নিঃসন্দেহে সেটার পরিষেবা বেশ ভাল। তবে গ্ৰামীণ এলাকার অধিকাংশ মানুষ বা গ্ৰাহক স্বয়ংক্রিয় মেশিন চালাতে অপারগ। এই সমস্যা সত্ত্বেও তাঁদের কথা বিবেচনা না করে ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা না নিয়ে অনেককেই স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে নির্দেশ করছেন। অধিকাংশ গ্ৰাহক এতে উষ্মা প্রকাশ করলেও, কর্তৃপক্ষ কার্যত উদাসীন। ফলে, ওই গ্ৰাহকদের একান্ত নিরুপায় হয়ে ব্যাঙ্কে উপস্থিত অন্য গ্ৰাহকদের মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে। আর তার জন্য টাকা-পয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, সাধারণ গ্ৰাহকদের জন্য ক্যাশ কাউন্টারে নগদ টাকা জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া চালু থাকুক এবং একই সঙ্গে অনভিজ্ঞ গ্ৰাহকদের স্বয়ংক্রিয় মেশিনে সড়গড় করতে যথাযথ ব্যবস্থা করা হোক। অন্য দিকে, কর্মীদের কেউ কেউ অনেক সময় ভুলে যান যে, প্রত্যন্ত গ্ৰামীণ এলাকায় অবস্থিত একটা গ্ৰাহক পরিষেবা কেন্দ্র এটি, যেখানে অধিকাংশ গ্ৰাহকই ততটা শিক্ষিত নন। তাই, এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠারও অনুরোধ রইল।

মঙ্গল কুমার দাস, রায়দিঘি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

দুর্ভোগের যাত্রা

দমদম রোডের সেভেন ট্যাঙ্কস থেকে হনুমান মন্দির পর্যন্ত পথের অবস্থা খুব খারাপ। রাস্তার দু’ধারের বাজার, রিকশার স্ট্যান্ড, ভ্যাট, অযাচিত গাড়ি পার্কিং— সব মিলিয়ে যথেষ্ট অসুবিধার মধ্যে দিয়ে নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়। এরই মধ্যে কয়েকটি ক্রস রোড থাকায় যানজট দিনের পর দিন বাড়ছে। এতে মূলত অফিস টাইমের যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছয়।

উপরন্তু দমদম রেলব্রিজের নীচ দিয়ে আপ-ডাউন দু’টি রাস্তা এবং মানুষের চলাচলের জন্য একটি আন্ডারপাস— এই তিনটি রাস্তার জঘন্য অবস্থা। ওপেন টয়লেটের দুর্গন্ধ, রাস্তায় ভাঙা ড্রেনের উপচে ওঠা নোংরা জল, আন্ডারপাসের ভিতর ভবঘুরে এবং হকারদের দখলদারি, বেনিয়মে পার্কিং, আপ-ডাউন ট্র্যাফিকের বিশৃঙ্খলা। এই সমস্ত দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চাইছি।

বিবেক চক্রবর্তী, কলকাতা-৩০

নিষ্ক্রিয় সিঁড়ি

বালিগঞ্জ স্টেশনের চলমান সিঁড়িটি বহু বছর যাবৎ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আছে। প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষের আসা যাওয়া এই জংশন স্টেশনে। আমরা, প্রবীণরা বাধ্য হচ্ছি নিদারুণ কষ্টে অত উঁচু সিঁড়িতে ওঠা নামা করতে। এই কষ্ট আর কত দিন?

জয়ন্তী চক্রবর্তী, কলকাতা-৩৯

আরও পড়ুন
Advertisement