internet

সম্পাদক সমীপেষু: আন্তর্জালে আটকে

তাই, শিশুদের আন্তর্জালে জড়িয়ে পড়া থেকে দূরে রাখতে বাবা-মায়েদের শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের সময় বেঁধে দিতে হবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:২৭

ইন্টারনেট বা আন্তর্জাল আজকের শিশুদের মনে যে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেছে, সে বিষয়ে সময়োপযোগী আলোকপাত করা হয়েছে ‘অন্তর-জাল’ (২৭-১২) সম্পাদকীয়তে। শিশুরা আজ ইন্টারনেটে এতটাই জড়িয়ে পড়েছে যে, তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু, এর জন্য দায়ী বর্তমান সমাজব্যবস্থা এবং পরিস্থিতি। বাবা-মায়ের ব্যস্ত জীবনে সময় নেই ছেলেমেয়েদের দিকে তাকানোর কিংবা নজরদারি করার। স্কুল বন্ধ থাকায় গৃহবন্দি শৈশব বিশ্ব-প্রকৃতির সংস্পর্শে আসতে পারেনি। পা পড়েনি খেলার মাঠে কিংবা পার্কে। দিনের পর দিন বাড়িতে আবদ্ধ থেকে একঘেয়ে জীবনে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এর থেকে মুক্তি পেতে ক্লাসের ফাঁকে কিংবা বাড়িতে বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে ইন্টারনেট জগতে ঢুকে পড়েছে শিশুরা।

ইউটিউব কিংবা গুগলের পর্দায় ভেসে ওঠা একের পর এক লোভনীয় ছবির দৃশ্যপট শিশুমনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এক অলীক স্বপ্নের জগতে, বাস্তবের সঙ্গে যার মিল নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা বুঁদ হয়ে আছে। পড়াশোনায় আগ্রহ কমে আসছে। হ্রাস পাচ্ছে কল্পনাশক্তি, সৃষ্টিশীলতা। আসক্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন অনলাইন খেলায়। আর বেশির ভাগ ভিডিয়ো গেমই ‘ভায়োলেন্স’-এ ভরা, যা শিশুদের মনকে বিষাক্ত করছে। প্রভাব পড়ছে তাদের আচার-আচরণে প্রতিনিয়ত। বাবা-মায়েরা কি আদৌ এ ব্যাপারে সচেতন? ট্রেন, বাস, অটোতে দেখি, বাবা-মায়ের পাশে বসে তাদের সন্তানেরা দিব্যি অনলাইনে গেম খেলে যাচ্ছে। যে সব শিশু এখনও ঠিকমতো কলম ধরে লিখতে শেখেনি, তারা আজ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব সার্চ করে পছন্দের বিষয় খুঁজে নিতে শিখে গিয়েছে। পাশাপাশি আরও এক গভীর আশঙ্কার বিষয় রয়েছে। একটি পরিসংখ্যানে প্রকাশ, ২০১৭ থেকে ২০২০-র মধ্যে বিশ্বে ২৪ লক্ষ শিশুর যৌন হেনস্থার মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে শিশু পাচার, মানব পাচার, যৌন হেনস্থার বেশির ভাগ ঘটনাই রমরমিয়ে চলছে অনলাইনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্ব জুড়ে।

Advertisement

তাই, শিশুদের আন্তর্জালে জড়িয়ে পড়া থেকে দূরে রাখতে বাবা-মায়েদের শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের সময় বেঁধে দিতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেট-যুক্ত মোবাইল ফোনের যেন অপব্যবহার না করে। স্কুলে স্কুলে ‘ডিজিটাল লিটারেসি’ ক্যাম্প করে ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সরকারি ভাবেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এ ব্যাপারে জনতাকে সচেতন করা দরকার। শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাই, শিশুদের মনের বিকলন ঘটলে আমাদের এই সমাজও বিকলাঙ্গ হয়ে পড়বে।

অরুণ মালাকার, কলকাতা-১০৩

ব্লাডব্যাঙ্কে সমস্যা

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে সরকার নির্ধারিত ব্লাডব্যাঙ্ক। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডব্যাঙ্কের সুষ্ঠু পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বহু সংগঠন। যেমন, রক্তদাতাকে জলযোগের সরকারি বরাদ্দ অর্থ দীর্ঘ দিন ধরে দেওয়া হচ্ছে না, ক্রেডিট কার্ড, শংসাপত্র নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়া হয় না। রক্তদান শিবিরে চিকিৎসক এবং নার্সিংকর্মী উপস্থিত না থাকায় মহিলা রক্তদাতার শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সংগঠকদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। দৈনিক রক্তের মজুত-তালিকা আপডেট করা হয় না। কবে-কোথায়-কখন রক্তদান শিবির আছে, তার তালিকা কোথাও নোটিস বোর্ডে লেখা হয় না। ব্লাডব্যাঙ্কের ভিতরে অসাধু চক্রের অবাধ প্রবেশ-সহ একাধিক সমস্যা রয়েছে। এই সব সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

জয়দেব দত্ত, কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান

পাসবই হয়রানি

বর্তমানে স্টেট ব্যাঙ্ক শাখাতে পাসবইয়ের অপ্রতুলতা দেখা দিয়েছে। ডেবিট কার্ড কিংবা নেট-ব্যাঙ্কিং পরিষেবার দরুন বহু আমানতকারী আজকাল ক্যাশলেস কেনাকাটা বা লেনদেন করে থাকেন। ফলে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বিস্তর খতিয়ান ও তার বিবরণে পাসবইয়ের পৃষ্ঠা ভরে যায়। ইদানীং স্টেট ব্যাঙ্কে পাসবইয়ের জোগান সেই হারে নেই। ফলে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যদিবা বই পাওয়া গেল, আপডেট করতে গিয়ে জমে ওঠা লেনদেনের পাহাড়ে পৃষ্ঠা অচিরেই নিঃশেষ হয়ে যায়। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিকল্প কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করলে গ্রাহকরা অনর্থক হয়রানির হাত থেকে রেহাই পান।

বাবুলাল দাস, ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

পরিযায়ী পাখি

অতিরিক্ত শীতের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য শীতের শুরুতেই বিভিন্ন ধরনের পাখি সাইবেরিয়া-সহ অন্যান্য দেশ থেকে ছুটে আসে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যের জলাশয়ে। আগন্তুক পাখিদের মধ্যে থাকে বালিহাঁস, চখাচখি, বাদিহাঁস, শামুকখোল ইত্যাদি। প্রকৃতির ক্ষতিকর পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, ইঁদুর খেয়ে ওরা ফসল ও জলজ প্রাণীর সুরক্ষা সাধন করে। শীতের প্রকোপ কমলে এরা আবার ফিরে যায় নিজেদের দেশে।

রংবেরঙের পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ানোর চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করার জন্য বিল-ঝিল ও বিভিন্ন জলাশয়ে পর্যটকদের আগমন ঘটে। এতে নৌকার মাঝিদেরও কিছু অর্থ উপার্জন হয়। এত সব উপকার করেও পাখিরা মানুষের হিংস্র থাবা থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি। শিকারির কবলে পড়ে পরিযায়ী পাখি-সহ অন্যান্য পাখি দেদার প্রাণ হারাচ্ছে। এদের গুলি করে, ফাঁদ অথবা জাল পেতে, বিষ টোপ, ঘুমের ওষুধ-সহ নানা কৌশলে শিকার করা হচ্ছে। বদ্ধ জলাশয়ের মাছ রক্ষা করার জন্য উপর জাল টাঙানো হয়। সেই জালে পড়ে প্রাণ যায় বহু পাখির। মানুষ নিজেদের স্বার্থে নির্বিচারে বন-জঙ্গল কেটে পশুপাখির আবাসস্থল ধ্বংস করে দিচ্ছে। তার ফল প্রকৃতির উপর পড়ছে। তাই মানবসমাজ আজ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে।

প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পাখিদের বিচরণ ক্ষেত্রকে ভয়মুক্ত করে মানুষকে পরিবেশ সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে হবে। তবেই পরিবেশ বান্ধব সমাজ
সৃষ্টি হবে।

সোমা ভৌমিক, বীরনগর, নদিয়া

জালিয়াতি

টাকিতে ইছামতী নদীর তীরের এক বিখ্যাত হোটেলে মিলল না সুখের অনুভূতি। গত ১২ নভেম্বর হোটেলের পাঁচতলার দু’টি ‘সুপিরিয়র’ এবং একটি ‘প্রিমিয়াম’ রুমের বুকিং-এর জন্য চাহিদামতো অগ্রিম পাঠিয়ে দিয়েও নির্ধারিত দিনে মেলেনি ঘরগুলি। নবতিপর এক বৃদ্ধসমেত আমরা নানা বয়সি ছ’জনকে চার ঘণ্টা লাউঞ্জে অপেক্ষা করতে হয়। নানা অছিলায় সস্তার অন্য ঘরে জায়গা নিতে বলেন স্থানীয় ‘ম্যানেজমেন্ট অধিকারিক’রা। আমাদের দুই প্রতিবাদী সঙ্গী যখন বিষয়টিকে সমাজমাধ্যমে আনেন, তখন টনক নড়ে ম্যানেজমেন্টের। শুরু হয় জোড়হাত নিবেদন। তবু আমাদের দেওয়া হয়নি নির্ধারিত ঘর। অন্য তলায় প্রায় সমগোত্রীয় ঘরে (ওদের কথায়) মেলে থাকার জায়গা। বলা হয়, পরের দিন আমাদের চাহিদামতো ঘর দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু স্ব-পরিজন বেড়াতে গিয়ে বয়স্ক মানুষদের প্রতি প্রাথমিক অবহেলায় সন্দিহান আমরা পরের দিনই ফিরে আসি।

প্রশ্ন একটাই, অর্থের বিনিময়ে আগাম বুকিং করে চাহিদামতো ঘর আশা করা কি অন্যায়? অধিক অর্থের বিনিময়ে হয়তো এক ধরনের অনিয়মের ব্যবসা চালু রয়েছে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে।

জয়িষ্ণু বসু, কলকাতা-৭৮

আরও পড়ুন
Advertisement