Exam

Letters to Editor: সম্পাদক সমীপেষু: পরীক্ষার প্রস্তুতি

১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা প্রদান করতে হবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৩১

‘প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়েই চিন্তা’ (৩-১) শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। কলেজের পরীক্ষা অনলাইনে হবে, তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আগেই জানিয়েছিল। কিন্তু ৭ মার্চ থেকে মাধ্যমিক এবং ২ এপ্রিল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অফলাইনেই হওয়ার কথা। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও নিচ্ছে। ঠিক এমন সময় করোনার দৈনিক সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হল, ফের স্কুলের দরজা বন্ধ হল। মনে রাখতে হবে, গত বছর অনেক রাজ্যে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য আগেভাগে ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রথমত, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা প্রদান করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শিক্ষা দফতরকে এই দুই পরীক্ষার সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে, যাতে মার্চ হোক বা এপ্রিল, যখনই করোনা গ্রাফ নিম্নমুখী হবে, তখনই দ্রুততার সঙ্গে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায়। নিজের স্কুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হলেও, ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলি অনুষ্ঠিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। আগামীর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে এটাই তাদের উপযুক্ত সময়। নিজেদের প্রস্তুতি যাচাই করে নিতে হলে এই পরীক্ষার কোনও বিকল্প নেই। কী ভাবে এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা সংঘটিত হবে, সে বিষয়ে শিক্ষা দফতর স্পষ্ট জানালে পরীক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা দূর হতে পারে।

Advertisement

ভাস্কর পাল

কলকাতা-১১৩

নম্বরেই সমাধান?

সম্প্রতি সিবিএসই-র ইংরেজি বোধ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে দেশে ঝড় উঠেছে। সংসদেও সমালোচনা হয়েছে। পর্ষদ নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে এবং সবাইকে নম্বর দিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু তাতে কি সমস্যা মিটল? ছাত্রছাত্রীরা কম নম্বর পেতে পারে, এটাই কি আসল সমস্যা ছিল?

প্রশ্নপত্রে বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অবাধ্যতার কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে সংসারে মা-বাবার মধ্যে সম্পর্কের পরিবর্তনকে। আগে মায়েরা ছিলেন বাবাদের বাধ্য, আর তাই দেখে ছেলেমেয়েরাও বাধ্যতা শিখত। কিন্তু এখন নারী স্বাধীনতার যুগে মায়েরা আর বাধ্য নন। আর তাই ছেলেমেয়েরাও দেখাদেখি অবাধ্য হয়ে উঠছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই রকম একটি উত্তর পড়ে পরীক্ষার্থীরা হতবাক। তার সঙ্গের প্রশ্নগুলোর যে কী উত্তর হতে পারে, তা ভেবে না পেয়ে অনেকে প্রশ্নটা ছেড়ে এসেছে। আবার অনেকে বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ হয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

সমস্যাটা বৃহত্তর। কী ধরনের মানসিকতা থেকে ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য এমন নারীবিদ্বেষী উত্তর বাছা যায়, সেটা ভেবে দেখার বিষয়। শিক্ষিত সমাজের মধ্যেও নারী স্বাধীনতার উপর এমন আক্রোশ কোথা থেকে জন্মাল, সেটাও বোঝা দরকার। আসলে আমরা নারী স্বাধীনতা ও তাদের ক্ষমতায়নের উপর যতটা জোর দিয়েছি, পুরুষদের এই ব্যক্তি স্বাধীনতা গ্রহণ করার ক্ষমতা তৈরির উপর ততটা নজর দিইনি। তাই মানসিকতার উন্নয়ন অনেকটাই তির্যক থেকে গিয়েছে। আমরা এখন মেয়েকে স্কুলে পাঠাই, তার পড়াশোনার জন্য খরচ করি, স্বপ্নও দেখি যে মেয়ে কর্মক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করবে। কিন্তু সেই উন্নত মানসিকতার চাকরিজীবী মহিলার সঙ্গে সংসার করার জন্য ছেলেকে তৈরি করি না। মেয়েকে পিছনে ফেলে রাখব না বলে তাকে খেলার বল কিনে দিই, কিন্তু ছেলেকে পুতুল বা রান্নাবাটি খুব বেশি কেউ কিনে দেয় না। তাই সংসারের কাজে, বা সন্তান মানুষ করতে হাত লাগানোর কথা তাদের মাথাতেই আসে না। শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। আক্রোশ জন্মায় নারী স্বাধীনতার উপর। যে পরীক্ষার্থী প্রতিনিয়ত বাড়িতে মায়ের অবাধ্যতার অভিযোগ শুনছে, ও তাঁকে নির্যাতিত হতে দেখছে, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন দেখলে তার মনের অবস্থা কী হতে পারে, সেটাও ভাবা উচিত।

বেশ কিছু মহল থেকে শোনা যাচ্ছে যে, এই অনুচ্ছেদটি নাকি একটা বৃহত্তর লেখার অংশ। আসলে এটা নারীবিদ্বেষী না। এটা নাকি হালকা ভাবে লেখা একটা সামাজিক ব্যঙ্গ। কিছু প্রশ্ন থেকেও তাই মনে হচ্ছে। সেটা ঠিক হলে সমস্যাটা আরও গুরুতর। প্রথমত, ইংরেজির শিক্ষক বোঝেন না যে, প্রসঙ্গ-বহির্ভূত ভাবে একটা অংশ তুলে দিলে তার মানে বদলে যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, হালকা রসিকতার ছলেও যে এই রকম ভয়ঙ্কর নারীবিদ্বেষী কথা বলা যায় না, সেই বোধটাই তো তাঁর নেই। কোনটা মজা, কোনটা লিঙ্গবৈষম্য, আর কোনটা নারীবিদ্বেষ, এটা আমাদের দেশে অনেকেই বোঝেন না। তাই সমাজমাধ্যমে সর্বক্ষণ ঘুরতে থাকে নারীর মর্যাদাহানিকর ‘সেক্সিস্ট’ কৌতুক। প্রসঙ্গত, সেক্সিজ়ম-এর কোনও চালু প্রতিশব্দই খঁুজে পাওয়া যায় না বাংলা বা হিন্দি ভাষায়। কারণ, এটা নিয়ে প্রায় আলোচনাই হয় না। সেক্সিজ়ম-এর সংস্কৃতি বড় বেশি গভীরে শিকড় মেলেছে, তাই অজানতেই অসতর্ক মুহূর্তে তা বেরিয়ে আসে। বার বার এই রকম ঘটনা ঘটছে, তাই নিয়ে আলোড়ন হচ্ছে, বক্তা ক্ষমা চাইছেন এবং ব্যাপারটা মিটে যাচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, তাই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।

সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান করতে হলে প্রথমেই সিবিএসই পরীক্ষার্থীদের হাতে একটা সংশোধন তুলে দেওয়া উচিত, যাতে সহজ সমাজতত্ত্ব দিয়ে বোঝানো আছে উত্তরটি কেন ভুল। অনেকেই লেখাটি ঠিক ভেবে পড়ে থাকতে পারে, এবং তার থেকে মারাত্মক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকতে পারে। শিক্ষাব্যবস্থার আসল কাজ ছাত্রছাত্রীদের নম্বর দেওয়া না— সুনাগরিক গড়ে তোলা। তাই শুধু নম্বর দিয়ে পর্ষদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।

অনিন্দিতা সেন

অর্থনীতি বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

ঋণের ফাঁদে

বর্তমান রাজ্য সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে, যেটা ছাত্রসমাজের কাছে অত্যন্ত ভাল সংবাদ। অনেক ছাত্রছাত্রীই এখন স্বপ্ন দেখছেন, বাবা-মা’কে আর হয়তো জমি-জায়গা বিক্রি করে পড়াশোনার খরচ জোগাতে হবে না। বার্ষিক ৪ শতাংশ সরল সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ তাঁরা পাবেন।

নিয়ম অনুযায়ী, অনলাইনে শিক্ষাঋণের জন্য শিক্ষার্থী দরখাস্ত করার পর তাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পোর্টালে তাঁর নাম আসবে। সেই প্রতিষ্ঠান দরখাস্তকারীর নাম, কোর্স, কোর্স ফি ইত্যাদি খতিয়ে দেখে উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠাবে। উচ্চশিক্ষা দফতর তার পর সেই দরখাস্ত ছাত্রছাত্রীর ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেবে। এ পর্যন্ত সবটাই খুব দ্রুত এবং ভাল ভাবেই সংগঠিত হচ্ছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও দরখাস্তগুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় নথিপত্র চেয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু তার পর? ব্যাঙ্কগুলি, বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ঋণের অর্থ দিতে বেশি সময় নিচ্ছে। অনেকে বলছে, তাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। ফলে ছাত্রছাত্রীরা এখন কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। অনেক ছাত্রছাত্রীর আশা, এই ঋণ নিয়ে পড়াশোনায় সফল হয়ে তাঁরা তাঁদের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে পারবেন। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে আরও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে এই ঋণের অর্থ মঞ্জুর করতে হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মুস্তাক আলি মণ্ডল

আমতা, হাওড়া

ভাল খবর

পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বিডিও অরুণ কুমার বিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানোর পরেও গ্রামবাসীর চিকিৎসার জন্য সময় বার করেছেন, এ সংবাদ আনন্দের ও উৎসাহের (‘ছুটিতে অফিসে রোগী দেখেন বিডিও’, ২৭-১২)। আশা করব, নতুন বছরে নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট স্থান ধার্য হবে এমন ধরনের সংবাদ আরও বেশি করে তুলে ধরার জন্য।

শোভন সেন

সাঁতরাগাছি, হাওড়া

আরও পড়ুন
Advertisement