সম্প্রতি এক বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে আমার মোবাইলে ‘কেওয়াইসি’ আপডেট করার জন্য বার বার ‘মেসেজ’ আসতে থাকে। আমি ব্যাঙ্কে গেলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক আধার ও প্যান কার্ড এবং ফোটো দিতে বলেন, যদিও এর কথা মেসেজে লেখা ছিল না। আর এক দিন এগুলো নিয়ে গেলে তিনি এগুলো দিয়ে তাঁর ল্যাপটপে চেষ্টা করেও ‘কেওয়াইসি আপডেট’ করতে পারলেন না। তখন মেশিনের সাহায্যে আমার আঙুলের ছাপ নিয়ে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হল। কিন্তু কোনও আঙুলেই কাজ হল না। বার্ধক্যের ফলে আঙুলের চামড়া মসৃণ হয়ে যাওয়ায় ছাপ এল না। প্রবীণদের এই সমস্যা হয়ই। ফলে আধিকারিক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দিলেন, এই অ্যাকাউন্টটি পরে ‘ইনঅপারেটিভ’ হয়ে যাওয়ার কারণে।
সমস্যা হল, বর্তমান অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আমার কয়েকটি ‘মিউচুয়াল ফান্ড’ ও বিমা সংস্থার ‘লিঙ্ক’ করা আছে, যেখান থেকে নিয়মিত ‘পেনশন’ এই অ্যাকাউন্টে ‘ক্রেডিট’ হয়। সেগুলোর কী হবে? উনি কোনও সদুত্তর না দিয়ে, “যদি ‘ব্লক্ড’ হয়ে যায়, তখন দেখা যাবে” বলে এড়িয়ে গেলেন। প্রশ্ন হল, এ সব আধুনিক বা যান্ত্রিক নিয়মকানুন জারি করার আগে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আমাদের মতো বৃদ্ধদের কথা কি ভেবে দেখেননি? আমাদের জন্য কি কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেই?
বলীন্দ্র বৈদ্য, ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
প্রতারণার সুরাহা
যত দিন যাচ্ছে, তত নতুন নতুন কৌশলে প্রতারণা হচ্ছে। এখন গ্রাহকের থেকে ওটিপি না নিয়েও অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিতে পারে সাইবার-প্রতারকরা। মোবাইলে আসা .apk-যুক্ত ফাইল ডাউনলোড করলেই ওয়টস্যাপ হ্যাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই সঙ্গে মেসেজ বক্স-সহ মোবাইলে থাকা তথ্য সেই প্রতারকের হাতে পৌঁছে যেতে পারে। সাইবার-বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সাধারণত কোনও পরিচিত বা অপরিচিতের কাছ থেকে মোবাইলে একটি ফাইল আসতে পারে ‘.apk’ নামে। এটি আসতে পারে পিএম কিসান (PM KISAN) লেখার পরে .apk হিসাবে। যেন কৃষক হিসাবে সরকারের অনুদান পাচ্ছেন কেউ। ফাইল ডাউনলোড করলেই মুহূর্তের মধ্যে মানুষের তথ্য চলে যাবে প্রতারকের হাতের মুঠোয়। যে কারও ওয়টস্যাপ নম্বর থেকে তাঁর অজানতে এক ক্লিকে বহু গ্রুপে এই ধরনের .apk ফাইল তারা পাঠিয়ে দেবে। আর পরিচিত ব্যক্তির থেকে এটি এসেছে ভেবে গ্রুপে থাকা ব্যক্তিরা সেই একই ভুল করলেই নিজের টাকা খুইয়ে বসতে পারেন। এমনকি মোবাইলে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কোনও লেনদেন করলেও সিকিয়োরিটি সংক্রান্ত ওটিপি-টি মোবাইলে মেসেজ হিসাবে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারকের কাছেও পৌঁছে যাবে। আধার নম্বর কাজে লাগিয়ে আধার এনেবল্ড পেমেন্ট সিস্টেম (এইপিএস) সংক্রান্ত প্রতারণার পর এ ধরনের প্রতারণা বাজারে এসেছে। সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় যুক্ত পুলিশ আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পরিচিত-অপরিচিত কোনও মোবাইল নম্বর থেকে এই ‘.apk’ ফাইল কোনও অবস্থাতেই ডাউনলোড করা যাবে না। তা সত্ত্বেও কোনও কারণে এই ফাঁদে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ওয়টস্যাপ ডিলিট করে পরে ইনস্টল করতে হবে। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, দুষ্কৃতীরা আগের মতো ‘ব্যাঙ্ক থেকে বলছি’ বলে কেওয়াইসি, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড আপডেট করার কথা বলে এখন ওটিপি চাইছে না। বরং একটু ঘুরিয়ে বলছে, আপনার ফোনে একটা ‘কোড’ গিয়েছে, সেটা বলুন।
এ ছাড়া এখন ‘শেয়ার ট্রেডিং ফ্রড’ হিসাবে আর এক ধরনের সাইবার-প্রতারণা বাজারে এসেছে। এ ক্ষেত্রে শেয়ারে খুব কম টাকা লগ্নি করতে বলা হয়। কিছু দিন পরে তাদের পাঠানো ওয়েবসাইটের লিঙ্ক থেকে গ্রাহকরা দেখতে পাবেন, তাঁদের টাকা দ্বিগুণ-তিন গুণ হয়ে গেছে। সেই টাকার কিছু অংশ তুলতে চাইলে, তাঁরা তুলতেও পারবেন। গ্রাহকরা এটা বুঝতে পারবেন না যে ওই ওয়েবসাইটটি প্রতারকদেরই বানানো। এ ভাবেই তারা বেশি লাভের জন্য গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে তাঁদের লক্ষ লক্ষ টাকা লগ্নি করিয়ে নিচ্ছে। তার পর সব হাতিয়ে নিয়ে যোগাযোগ ছিন্ন করে দিচ্ছে।
এই সব নতুন নতুন প্রতারণাকে মাথায় রেখে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বিভিন্ন আলোচনাচক্র, কর্মশালার মাধ্যমে গ্রাহকদের সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া-র কলকাতা অফিসের ‘অর্থপ্রদান এবং নিষ্পত্তি প্রণালী বিভাগ’-এর উদ্যোগে একটি পুস্তিকা বাজারে এসেছে। তাতে তারা এক দিকে যেমন ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং-এর সুযোগ-সুবিধার কথা বলেছেন, পাশাপাশি কয়েকটি বিষয়ে গ্রাহকদের সতর্কও করছেন। যেমন— এক, কোনও অবস্থাতেই নিজের ওটিপি, পাসওয়ার্ড, এটিএম পিন, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না। বা এমন কোনও ফোনের উত্তর দেওয়া যাবে না যার জেরে এই সব গোপন তথ্য ফোনের ও-পারে চলে যায়। দুই, পাবলিক ওয়াই-ফাইতে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং ব্যবহার না করা; পাবলিক চার্জারও না। তিন, অনির্ভরযোগ্য উৎস থেকে মোবাইলে আসা অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড না করা। চার, ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং করার সময় সর্বদা “https://” (এখানে ‘s’ মানে সিকিয়োরিটি) নিশ্চিত করে ওয়েব সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। পাঁচ, নিয়মিত নিজের MPIN, পাসওয়ার্ড, এটিএম পিন পরিবর্তন করা। কার্ডে, বা সহজে পাওয়া যায় এমন কোথাও পাসওয়ার্ড বা পিন লিখে না রাখা।
এত কিছু সত্ত্বেও অসাবধানবশত বা ভুল করে কেউ যদি প্রতারকদের পাল্লায় পড়েন, তবে তখনই ‘১৯৩০’-এ ফোন করা এবং https:// cybercrime.gov.in ওয়েবসাইটে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা জরুরি। যত দ্রুত অভিযোগ জানানো যাবে, তত আপনার টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। সেই সঙ্গে নিকটবর্তী থানায় গিয়েও কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন। এ ছাড়া ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত পরিষেবার কোনও অভিযোগ থাকলে সেটি প্রথমে সেই ব্যাঙ্ককেই জানাতে হবে। এক মাসের মধ্যে তার কোনও নিষ্পত্তি না হলে তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সিএমএস পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে https:// cms.rbi.org.in বা crpc@ rbi.org.in-এ মেলের মাধ্যমে কিংবা ১৪৪৪৮— এই নিঃশুল্ক ফোন নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে।
সুদীপ মাইতি, কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর
অবৈধ পার্কিং
নিউ মার্কেট সংলগ্ন খাদ্যভবন দফতর একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। তার পাশাপাশিই রয়েছে দমকল দফতর। এই রাস্তাটি এখন পার্কিংওয়ালা ও অটোওয়ালাদের খপ্পরে। প্রতি দিন রাস্তার দুই ধারে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। অটোওয়ালারা তো প্রায় স্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলেছেন এখানে। প্রতিবাদ করলেই অকথ্য গালিগালাজ, ইউনিয়নবাজদের হুমকির মুখে পড়তে হয়। ট্র্যাফিক পুলিশ থাকা না থাকা সমান। দমকলের গাড়ি চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনও সময় একটা বড়সড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে, যদি না প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করে। পাশে একটা ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলও আছে। বেপরোয়া গাড়ি পার্কিং-এর কারণে স্কুল ছুটির পর অভিভাবকদের বাচ্চাদের নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সুমন কল্যাণ চৌধুরী, কলকাতা-৪৮
ট্রেনে দেরি
৩০১৩৫ আপ মাঝেরহাট-রানাঘাট লোকাল ট্রেনের টালা স্টেশনে ২৫-৩০ মিনিট এবং দমদম জংশনে ঢোকার মুখে ১০-১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকাটা নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনে মাত্র কয়েকটা ট্রেন চলে এই অফিসপাড়ায়। সেটাও ঠিক সময়ে চলবে না?
অঞ্জন বাইন, কলকাতা-৬৫