কংগ্রেস দলে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার লড়াই বরাবরের। আস্থাভাজন হওয়াটাও কম চাপের নয়। গান্ধীদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠলেই অনেকের চক্ষুশূল হতে হয়। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল সেটি হাড়ে হাড়ে টের পান। কেরলের এই নেতা রাহুলের আস্থাভাজন বলে পরিচিত। প্রায় পাঁচ বছর সংগঠনের দায়িত্বে। যিনি ভাল করে হিন্দি বলতে পারেন না, তিনি কী ভাবে সংগঠন সামলান, এই প্রশ্নও বহু দিনের। নিন্দুকেরা বলে, অমেঠী থেকে হেরেও রাহুল কেরল থেকে জিতে এসেছিলেন বলেই বেণুগোপাল রাহুলের মন জিতেছেন। এ বার হরিয়ানায় কংগ্রেসের হারের পর ফের নিন্দুকেরা সরব। বেণুগোপাল নাকি নিজের এক প্রিয়পাত্রীকে টিকিট দিয়েছিলেন। তাও আবার প্রাক্তন বিধায়কের নাম কেটে। প্রিয়পাত্রীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বেণুগোপাল-শিবিরের পাল্টা প্রশ্ন, ওই একটি আসনের জন্য গোটা হরিয়ানা হারতে হল? বেণুগোপাল নিজে অবশ্য সংগঠনের দায়িত্ব ছেড়ে কেরলের রাজনীতিতে ফিরতে বেশি আগ্রহী। কারণ তাঁর লক্ষ্য দু’বছর পরে কেরলের ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রীর আসন।
নামেই আসে যায়
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’ নিয়ে যাতে বিরোধীরা পক্ষপাতের আক্রমণ শাণাতে না পারেন সে কারণে তার নাম বদলের কথা ভেবেছেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছেন, এটি আসলে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ দেওয়ানি বিধি। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হল সব ধর্মের মানুষের জন্য বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, জমি-সম্পত্তি এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত এক এবং অভিন্ন প্রস্তাবিত আইন। যা মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরই চালু করার চেষ্টা করছে। বিরোধীদের দাবি, ওই আইন চালু করে দেশের বিভিন্ন ধর্মের নিজস্ব আচার-আচরণে হস্তক্ষেপ করতে চাওয়া হচ্ছে। তাই ‘অভিন্ন’ বদলে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দের আমদানি করেছিলেন মোদী। প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু আনলেন অন্য প্রস্তাব। তাঁর পরামর্শ, ‘সাধারণ দেওয়ানি বিধি’ নামটি বেশি যুক্তিযুক্ত। সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা রয়েছে। নায়ডু এও বলছেন, এই আইন আনার আগে সমস্ত ধর্মের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশদ আলোচনা ও পরামর্শ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর মতে, “বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রয়োজন উত্তরাধিকার, বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদের জন্য একটি সাধারণ আইন...।”
জবাবে কিশোর কুমার
হিন্দি গানের ভক্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনেও হালকা মেজাজে স্মরণ করলেন কিশোর কুমারের গান। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের ভোট-নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। উঠল হরিয়ানা নির্বাচনে ইভিএম কারচুপি সংক্রান্ত কংগ্রেসের অভিযোগের প্রশ্ন। রাজীব অভিযোগের জবাব দিতে তৈরি হয়েই এসেছিলেন। প্রযুক্তিবিদের মতোই ভোল্ট, অ্যাম্পিয়ার, বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের ব্যাটারির তুলনার বিস্তারিত খতিয়ান তুলে ধরলেন। জানালেন, অভিযোগকারী ২০ জন প্রার্থীকে চিঠি লিখে বিষয়গুলি জানাবেন। জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে ওয়েবসাইটেও দেবেন। বিরোধীদের অভিযোগ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, “ব্যাটারির অভিযোগ তো গেল, ভাবছি পরের ভোটে ইভিএম নিয়ে কোন অভিযোগ আসতে চলেছে!” অমর প্রেম ছবির গান উদ্ধৃত করলেন, “কুছ তো লোগ কহেঙ্গে...!”
পুজো উদ্বোধনে স্মৃতি
পঞ্চমীতে বৈশালী এলাকার পুজো উদ্বোধনে এসেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। দুর্গার ‘জয়কারা’ দেওয়ার মধ্যেই খেয়াল করলেন এক জন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। স্মৃতি তাঁকে বললেন, “ঠাকুরের পুজোর সময় তো মোবাইলকে রেহাই দিন!” বোধনের অঞ্জলি দিয়ে নিখাদ বাংলায় আড্ডা দিলেন কমিটির সদস্য, সাংবাদিকদের সঙ্গে। বছর ঘুরলেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী-মুখ হতে পারেন স্মৃতি বলে জল্পনা। তাই হয়তো দুর্গা পুজোকে কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক জনসংযোগ সেরে রাখলেন।
লেবু, লঙ্কা ও রাষ্ট্রদূত
‘যস্মিন্ দেশে যদাচার!’ এই পঙ্ক্তি মন থেকে পালন বোধ হয় রাষ্ট্রদূতদের মতো কেউই করেন না। যেমন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ফিলিপ অ্যাকেরম্যান। পেট্রল-ডিজ়েলের গাড়ি ছেড়ে ব্যাটারিচালিত ইলেকট্রিক ভেহিকল নিয়েছেন। ফিলিপ ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কার মেনে লেবু, লঙ্কা ঝুলিয়েছেন গাড়িতে, যাতে নজর না লাগে! চাকার সামনে ভেঙেছেন নারকেলও।