দিল্লি ডায়েরি: মিষ্টিমুখের সৌজন্য, রাজনীতির নতুন মন্ত্র

গুলাবজামুন খেয়ে, এক বাক্স মিষ্টি কিনে বেরিয়ে পড়েন। দোকানের মহিলাকর্মীদের সঙ্গে ছবি তোলেন। বাক্সে ছিল ‘মাইসোর পাক’।

Advertisement
প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায়, অনমিত্র সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

তামিলনাড়ুর ভোটের প্রচারে কোয়েম্বত্তূর গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে রাস্তার মাঝখানে কংক্রিটের ডিভাইডার টপকে মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়েন। গুলাবজামুন খেয়ে, এক বাক্স মিষ্টি কিনে বেরিয়ে পড়েন। দোকানের মহিলাকর্মীদের সঙ্গে ছবি তোলেন। বাক্সে ছিল ‘মাইসোর পাক’। সবাই ভেবেছিলেন রাহুল মিষ্টি নিয়ে দিল্লি ফিরবেন। দেখা গেল, জনসভায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা হতে তাঁকে মিষ্টির বাক্সটি দিলেন। স্ট্যালিনও রাহুলের এই মিষ্টি সৌজন্যে অবাক। কংগ্রেস ও ডিএমকে-র নেতারা বলছেন, তামিলনাড়ুতে তাঁদের যে মধুর জোট হয়েছে, এ তারই নমুনা। এখন লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে মধুরেণ সমাপয়েৎ হলেই হয়!

Advertisement
সহযোগী: কোয়েম্বত্তূরের জনসভায় এম কে স্ট্যালিন ও রাহুল গান্ধী

সহযোগী: কোয়েম্বত্তূরের জনসভায় এম কে স্ট্যালিন ও রাহুল গান্ধী

মাকেনের পাইথন

কোভিডের সময় বাড়িতে বসে বসে দিল্লির কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ বা ডেটা অ্যানালিসিস করার দু’টি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ‘পাইথন’ এবং ‘আর’ শিখে ফেলেছিলেন। এখন তিনি কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ। নির্বাচনী বন্ড থেকে কংগ্রেসকে আয়করের নোটিস নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করতে সেই বিদ্যা কাজে লাগাচ্ছেন মাকেন। কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশ মজা করে বলছেন, মাকেন চাইলে যে কোনও সফটওয়্যার সংস্থায় চাকরি পেতে পারেন। মাকেন হাসতে হাসতে বলছেন, তাঁর রাজনীতি ছাড়ার কোনও অভিপ্রায় নেই!

ঘরে ও বাইরে

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরি চরণ সিংহকে ভারতরত্ন দেওয়ার পর জাঠ দল আরএলডি উত্তরপ্রদেশে বিজেপির দোসর হয়েছে। চরণ সিংহের কর্মভূমি বাগপতে এ বার আরএলডি-র প্রার্থী রাজকুমার সাঙ্গওয়ান। এখানে জয় নিয়ে এতই নিশ্চিন্ত আরএলডি যে সেখানে বর্তমান সাংসদ বিজেপির সত্যপাল সিংহকে প্রচারে দেখাই যাচ্ছে না। তিনি ভোটেই দাঁড়াননি। সত্যপাল ঘুরছেন হরিদ্বারে, বিজেপি প্রার্থী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়তের প্রচারে। হরিদ্বারেও জাঠ ভোট রয়েছে। ঘরে নিশ্চিন্ত, তাই বাইরে মন?

প্রধান: সদানন্দ দাতে (বাঁ দিকে), পাশে তাঁর পূর্বসূরি দিনকর গুপ্ত।

প্রধান: সদানন্দ দাতে (বাঁ দিকে), পাশে তাঁর পূর্বসূরি দিনকর গুপ্ত।

দুবাই বনাম দিল্লি

ঝড় ও প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত জলের নীচে দুবাই। ডুবেছে বিমানবন্দর, রাস্তাঘাট, শপিং মল এমনকি মেট্রো স্টেশনও। জলের তোড়ে কাগজের নৌকার মতো ভেসে গিয়েছে গাড়ি-বাস। দুবাইয়ের থইথই অবস্থা দেখে সরব ভারতের নেটিজ়েনদের একাংশ। গত সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলন চলাকালীন প্রবল ঝড় আছড়ে পড়েছিল অনুষ্ঠানস্থল ভারতমণ্ডপমে। লন্ডভন্ড অনুষ্ঠানস্থল, হাঁটু পর্যন্ত জল একাধিক স্থানে। জলে ভেসে যাওয়া মণ্ডপের ছবি দেখে ভারতের জলনিকাশি নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন দুবাইয়ের নেটিজ়েনদের একাংশ। ভারতীয় নেটিজ়েনরা এ বার পাল্টা জলে ভাসা দুবাইয়ের ছবি দিয়ে লিখছেন, যত উন্নত শহরই হোক, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার সঙ্গে যে মোকাবিলা করা যায় না, সবারই বোঝা উচিত।

শুধুই ঠান্ডা জল

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র নতুন ডিজি নিয়োগ নিয়ে বিরোধিতায় উত্তাল তৃণমূল। ওই পদে ১৯৯০ ব্যাচের আইপিএস অফিসার, ২৬/১১ সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকার জন্য রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত সদানন্দ দাতেকে নিযুক্ত করার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অভিযোগ, নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছে মোদী প্রশাসন। তাঁকে বিজেপির ‘হাতের পুতুল’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। সদানন্দ দফতরের প্রথম বৈঠকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাহুল্যে তিনি নেই। এর আগে এই পর্যায়ের বৈঠকে অফিসারদের জন্য বরাদ্দ থাকত চা, কফি, এক টুকরো কেক। সদানন্দের প্রথম বৈঠকে দেখা গেল, এসেছে শুধুই এক গ্লাস ঠান্ডা জল!

খেলা হবে?

নির্বাচনে অন্যতম ধনী প্রার্থী পল্লবী ডেম্পো। বিজেপির টিকিটে দক্ষিণ গোয়া থেকে লড়ছেন। হলফনামায় তাঁর ও তাঁর স্বামীর সম্পত্তির পরিমাণ ১৪০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। পল্লবীর আর এক পরিচয়, তিনি ডেম্পো ফুটবল দলের সঙ্গে যুক্ত। তিনি রাজনীতিতে নতুন হলেও, ডেম্পো ফুটবল অনুরাগীদের কাছে সুপরিচিত। বহু প্রতিযোগিতায় ময়দানের বড় প্রধানদের বেগ দিয়েছে তিন বার আই লিগ জয়ী ডেম্পো। এখন অবশ্য আগের রমরমা নেই। এখন দেখার, পল্লবী সাংসদ হলে তাঁর হাত ধরে ডেম্পো ফুটবল দলের পুনর্জন্ম হয় কি না।

আরও পড়ুন
Advertisement