পুস্তক পরিচয় ৩

সে কথক কোথায়

বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘লোকশিক্ষা’ প্রবন্ধে কথকতা-কে লোকশিক্ষার অন্যতম উপায় হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘সে কথক কোথায়? সে শিক্ষা কোথায়?’ কথক আর কথকতার অনেক গল্প বাংলা সাহিত্যে, বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণে ছড়িয়ে আছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৪ ২২:২০

বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘লোকশিক্ষা’ প্রবন্ধে কথকতা-কে লোকশিক্ষার অন্যতম উপায় হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘সে কথক কোথায়? সে শিক্ষা কোথায়?’ কথক আর কথকতার অনেক গল্প বাংলা সাহিত্যে, বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণে ছড়িয়ে আছে। কিন্তু কথকতা-র উদ্ভব-বিকাশ-বিস্তৃতি-অবনতির বৃত্তান্ত দু’মলাটে ধরার চেষ্টা সে ভাবে হয়নি। নন্দলাল ভট্টাচার্য নিজে ফরিদপুর-কোটালিপাড়ার বিখ্যাত পণ্ডিত এবং কথক পরিবারের সন্তান, সেই অন্তঃসলিলা ধারাকে তিনি মান্যতা দিয়েছেন তাঁর বাংলার কথক ও কথকতা বইয়ে (লিপিকা, ২২৫.০০)।

কথকতার উৎস প্রাচীন ভারতে। বাংলার কথকতা বৈঠকি শিল্প, ভারতের অন্যত্র এই পদ্ধতিতে ‘কথা’ পরিবেশিত হয় না। কিন্তু কথকতায় আঙ্গিক, বাচিক, সাত্ত্বিক, অর্থাৎ অভিনয়ের প্রায় সব দিকই অনুসৃত হয়। কথকতার স্বয়ংসম্পূর্ণ পুথি না পাওয়া গেলেও অনেক বিচ্ছিন্ন ‘সাট’ পাওয়া গিয়েছে। তেমন অনেক পালা এই বইয়ে আছে। সঙ্গে আছে গদাধর শিরোমণি, কৃষ্ণহরি শিরোমণি, রামধন তর্কবাগীশ, শ্রীধর কথক, ধরণী কথক, কৃষ্ণকুমার বিদ্যারত্ন, রামরতন সাংখ্যশাস্ত্রী (যাঁর কথকতার রেকর্ডও প্রকাশিত হয়েছিল) আর পূর্ববঙ্গের বিশিষ্ট কথকদের জীবন ও কর্মকাণ্ডের কথা। বাংলা গদ্যের বিকাশের ধারায় কথকতার ভূমিকাও আলোচনা করেছেন লেখক।

Advertisement
আরও পড়ুন
Advertisement