পুস্তক পরিচয় ৩

মাজুলির ঐতিহ্য

মধ্যযুগে নব্য বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক-সংস্কারক শঙ্করদেব জাতপাত ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানবতার যে প্রসার ঘটান তারই সংগঠিত রূপ মাজুলি-র সত্র। অসমে ব্রহ্মপুত্রের বুকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নদীদ্বীপ মাজুলি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০০:০০

মধ্যযুগে নব্য বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক-সংস্কারক শঙ্করদেব জাতপাত ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানবতার যে প্রসার ঘটান তারই সংগঠিত রূপ মাজুলি-র সত্র। অসমে ব্রহ্মপুত্রের বুকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নদীদ্বীপ মাজুলি। ষোড়শ শতকে সেখানে প্রথম সত্র প্রতিষ্ঠা করেন শঙ্করদেব, ১৭ শতক থেকে অহোম রাজারাও বৈষ্ণব ধর্মের পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠলেন, তাঁদের দান-করা জমিতেই তৈরি হল প্রধান সত্রগুলি, দ্বীপের প্রান্তিক মানুষদের বড় অংশ বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নিলেন। ‘পুরো উনিশ শতক জুড়েই নব্য বৈষ্ণবধর্ম-অনুপ্রাণিত এক সংস্কৃতি মাজুলিকে মাতিয়ে রেখেছে... এই দ্বীপে সত্রের প্রাচুর্য এবং অসমের সামাজিক জীবনে এদের প্রভাব লক্ষ্য করেই মাজুলিকে বলা হয় অসমের আধ্যাত্মিক রাজধানী।’ লিখেছেন সোমেশ্বর ভৌমিক, নদীদ্বীপ মাজুলি-তে (ছোঁয়া, ২০০.০০)। শিক্ষামূলক ছবি তৈরির কাজে দৃশ্যশ্রাব্য মাধ্যমে মাজুলিকে তুলে আনার অবকাশে অচেনা জগৎটির প্রাথমিক পরিচিতি পেশ করেছেন লেখক। উঠে এসেছে এ কালে সত্রীয় সংস্কৃতি কী ভাবে বাঁচিয়ে রেখেছে তার ঐতিহ্য, জাতিগত স্তরভেদ বিরোধে পরিণত না হয়ে কী ভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আছে, যন্ত্রশিল্পহীন দ্বীপটিতে কৃষিকাজ ও কুটিরশিল্পই যে অর্থনীতির মূল স্তম্ভ, বন্যায় নিত্য পাড় ভাঙা সত্ত্বেও পর্যটন কেন্দ্র হওয়ার সম্ভাবনা— এ সবই। সঙ্গে স্থানীয় মানুষজনের কথাবার্তা আর কিছু আলোকচিত্র।

Advertisement
আরও পড়ুন
Advertisement