পুস্তক ৩...

অনাবিষ্কৃত রবিশঙ্কর

সত্যজিৎ রে’জ রবিশঙ্কর/ অ্যান আনফিল্মড ভিস্যুয়াল স্ক্রিপ্ট, সম্পা: সন্দীপ রে। কলিন্স অ্যান্ড সোসাইটি ফর দ্য প্রিজারভেশন অব সত্যজিৎ রে আর্কাইভস, ৩৯৯.০০ছবি এঁকে রবিশঙ্করকে নিয়ে যে চিত্রনাট্য করেছিলেন সত্যজিৎ, তার প্রথম পাতায় কালো চতুষ্কোণের ভিতরে সাদা হরফে লিখেছিলেন: ‘আ সিতার রিসাইটাল বাই রবিশঙ্কর’, আবার একেবারে শেষের পাতায়: ‘দি এন্ড’। মাঝে একের পর এক স্কেচ— সেতারবাদনরত রবিশঙ্করের নানা মাপের স্কেচ, কোথাও আবার মেঘ, শুকনো পাতা, স্থির জল, ঝড়, নারীপ্রতিমা, ভাস্কর্য, সেতারের সহযোগী বাদ্যযন্ত্রের স্কেচ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ২২:১৯

ছবি এঁকে রবিশঙ্করকে নিয়ে যে চিত্রনাট্য করেছিলেন সত্যজিৎ, তার প্রথম পাতায় কালো চতুষ্কোণের ভিতরে সাদা হরফে লিখেছিলেন: ‘আ সিতার রিসাইটাল বাই রবিশঙ্কর’, আবার একেবারে শেষের পাতায়: ‘দি এন্ড’। মাঝে একের পর এক স্কেচ— সেতারবাদনরত রবিশঙ্করের নানা মাপের স্কেচ, কোথাও আবার মেঘ, শুকনো পাতা, স্থির জল, ঝড়, নারীপ্রতিমা, ভাস্কর্য, সেতারের সহযোগী বাদ্যযন্ত্রের স্কেচ। ক্যামেরার চলন বা বিন্যাস কেমন হবে, তারও ইঙ্গিত আছে হাল্কা অক্ষরে, এমনকী আবহে সেতারের লয় কেমন হবে— ‘বিলম্বিৎ’, ‘মধ্য’, না ‘দ্রুত’— সে সবেরও। গোটা ড্রইংবুকটা এত চমৎকার ছাপা, মনে হয় যেন সেটি দেখে কোনও দীক্ষিত চলচ্চিত্রকার এখনও ছবিটা বানিয়ে ফেলতে পারবেন। মুখবন্ধে স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছেন সম্পাদক সন্দীপ রায়। জানিয়েছেন, মারি সিটন-এর মতে এই চিত্রকাঠামো সত্যজিৎ তৈরি করেছিলেন ১৯৫১-য়। কিন্তু কয়েক জন চলচ্চিত্রবেত্তা তা মানতে নারাজ, তাঁদের মতে, ‘পথের পাঁচালী’-র পর, আর ‘অপরাজিত’-র আগে সত্যজিৎ এটি এঁকেছিলেন। সন্দীপও এঁদের সঙ্গে অনেকটাই সহমত, কেন না তিনি জানেন যে ‘পথের পাঁচালী’ আর রবিশঙ্করকে নিয়ে পরপর দু’টি চিত্রকাঠামো আঁকার পর সত্যজিৎ খেরোর খাতায় ‘অপরাজিত’র চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করেন। স্মৃতি হাতড়িয়ে আরও জানিয়েছেন সন্দীপ: বেনারসে ’৭৭-এ ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ শুটিংয়ের সময় সেখানে ছিলেন রবিশঙ্কর, তাঁর নেমন্তন্নে সাড়া দিতে সৌমিত্র ও সন্তোষ দত্তকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে হাজির হন সত্যজিৎ। এ রকমই টুকরো-টুকরো স্মৃতিনির্ভর অথচ বিশ্লেষণী আলোচনা শঙ্করলাল ভট্টাচার্যের এঁদের দু’জনকে নিয়ে— ‘আনহার্ড মেলোডিজ: দ্য সিতার অ্যান্ড দ্য ক্যামেরা।’ ’৭৮-এ বেরনো অপু ট্রিলজি-র রবিশঙ্কর-কৃত সঙ্গীতের লং-প্লে রেকর্ডে তাঁকে নিয়ে যে গদ্যটি লিখেছিলেন সত্যজিৎ, বা নিজের মাই ইয়ারস উইথ অপু-তে তাঁকে নিয়ে যে আলোচনাটুকু, সে দু’টিও সংযোজিত হয়েছে। ঠাঁই পেয়েছে ’৬৬-তে মনতাজ-এর ‘সত্যজিৎ-সংখ্যা’য় রবিশঙ্করের সাক্ষাৎকার। সত্যজিতের সঙ্গীত পরিচালনা নিয়ে অতনু চক্রবর্তীকে তিনি এক সাক্ষাৎকারে (অরূপকুমার দে অনূদিত) জানিয়েছিলেন: ‘লেটস টেক আপ পিকু, আ শর্ট ফিল্ম... দ্য মিউজিক্যাল ট্রিটমেন্ট হি গেভ দিস ফিল্ম উইদিন দ্য টোয়েন্টি সিক্স মিনিটস অব ইটস স্পেস ওয়াজ সিম্পলি ইনকমপেয়ারেবল!’ সত্যজিতের সঙ্গে তাঁর ছবিতে সঙ্গীত তৈরির সময় রবিশঙ্করের এবং সত্যজিৎ-সৌমিত্র-রবিশঙ্করের নানা ছবি এ-বইয়ের দুর্লভ সম্পদ।

Advertisement
আরও পড়ুন
Advertisement